ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নব্য জেএমবির দুর্ধর্ষ জঙ্গী শ্যামল বিদেশী পিস্তলসহ গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭

নব্য জেএমবির দুর্ধর্ষ জঙ্গী শ্যামল বিদেশী পিস্তলসহ গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়ার নন্দীগ্রামের ওমরপুর এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ মোস্ট ওয়ান্টেড দুর্ধর্ষ জঙ্গী জেএমবি’র শূরা সদস্য ও দক্ষিণাঞ্চল প্রধান আবু সাঈদ ওরফে আব্দুল করিম ওরফে শ্যামল শেখকে বিদেশী পিস্তলসহ গ্রেফতার করেছে। সে একটি বিস্ফোরণ মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার খাগড়াগড় বোমা হামলার অন্যতম অভিযুক্ত। ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ১০ লাখ রুপী পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের ইন্টেলিজেন্স শাখা ও বগুড়ার ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে শুক্রবার রাত একটার দিকে তাকে গ্রেফতার করে। এসময় সে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের পাশে অবস্থান করছিল। সে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের খাগড়াগড় বোমা হামলার অন্যতম অভিযুক্ত। বগুড়ার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান শনিবার দুপুরে দুর্ধর্ষ এই জঙ্গীকে গ্রেফতার বিষয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, সাঈদ ওরফে শ্যামলের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চরচাঁদপুরে। তার বাবার নাম শহীদুল্লাহ শেখ। ২০০২ সালে সে জেএমবিতে যোগদানের পর রাজশাহী ও নওগাঁ জেলায় জেএমবি প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। রাজশাহীর বাগমারায় সে বাংলা ভাই ও শায়খ আব্দুর রহমানের সহযোগী ছিল। নওগাঁর একটি বিস্ফোরণ মামলায় মৃত্যুদ- হওয়ার পর সে ২০০৭ সালে ভারতে পালিয়ে যায়। বর্তমানে নব্য জেএমবি’র এই শীর্ষ জঙ্গী বাংলাদেশ ও ভারতে একাধিক নামে পরিচিত। তার আরেক নাম ছিল ডেঞ্জার সাকিল। এর মধ্যে ভারতে সে তালহা ও শ্যামল শেখ নামে পরিচিতি ছিল। ২০০৯ সালে সে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিবাদে জেএমবি’র সদস্য ইয়াদুলের মেয়ে খাদিজাকে বিয়ে করে ভারতে বসবাস শুরু করে এবং সেখানে জেএমবির কার্যক্রম শুরু করে। পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া, বীরভুম ও বর্ধমান জেলায় সে জেএমবির দায়িত্বশীল হিসেবে কার্যক্রম চালায়। ২০১৪ সালে বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বোমা বিস্ফোরণে সে জড়িত ছিল। ভারতে ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়। ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) তাকে মোস্ট ওয়ান্টেড হিসেবে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ১০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করলে ২০১৫ সালের প্রথম দিকে সে পুনরায় বাংলাদেশে ফিরে এসে নব্য জেএমবিতে যোগ দেয়। দুর্ধর্ষতা ও সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে দেশে ফিরে আসার পর সে নব্য জেএমবি’র দক্ষিণাঞ্চল প্রধান ও সুরা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পায়। পুলিশ জানায়, নব্য জেএমবি’র পাঁচ সদস্যের শূরার মধ্যে সে অন্যতম। চলতি বছরের ১ অক্টোবর তার স্ত্রী খাদিজা বগুড়ায় শহরের চারমাথা এলাকা থেকে গ্রেফতার হয়। বাস টার্মিনালে বাসের জন্য অপেক্ষা করার সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। দুর্ধর্ষ জঙ্গী সাঈদ ওরফে শ্যামল গ্রেফতারের সময় তার কাছে একটি বিদেশী পিস্তল, ৮ রাউন্ড গুলি, ধারালো অস্ত্র ও রেজিস্ট্রেশনবিহীন একটি মটরসাইকেল পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাকে বগুড়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে জেএমবি’র নেটওয়ার্কের বিষয়ে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে পুলিশ আশা করছে।
×