ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কোন্দলে শাবি ছাত্রলীগ, তৎপর ছাত্রশিবির

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭

কোন্দলে শাবি ছাত্রলীগ, তৎপর ছাত্রশিবির

হোসাইন ইমরান, শাবি ॥ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে তৈরি হয়েছে দ্বিধাবিভক্তি, সেই সুযোগ কাজে লাগাতে তৎপর যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির। ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি, গ্রুপিং রাজনীতি ও নতুন কমিটি দিতে সিনিয়র নেতাদের গড়িমসির কারণে জুনিয়র কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। ফলে অনেকটা স্তিমিত হয়ে পড়েছে শাখা ছাত্রলীগের কার্যক্রম। এমনকি কেন্দ্রীয় কিংবা জাতীয় কোন দিবসের কর্মসূচীতেও দেখা গেছে বিভক্তি। সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত)-সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী কমিটির পক্ষের ও কমিটি বিরোধীদের আলাদা আলাদা ব্যানারে সম্প্রতি ঢিলেঢালাভাবে পালিত হচ্ছে এসব কর্মসূচী। ২০১৩ সালের ৮ মে সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থকে সভাপতি করে ও ইমরান খানকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দেয়া হয়। কমিটির অন্যরা হলেন সিনিয়র সহসভাপতি রঞ্জিত দেব, আবু সাইদ আকন্দ, সহসভাপতি অঞ্জন রায়, যুগ্ম সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সবুজ ও সাংগঠনিক সম্পাদক সুপ্রাজিৎ চৌধুরী। পরে ২০১৬ সালের ৮মে প্রায় ১৪ বছর পর ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের অনেককেই স্থান দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। কমিটির শুরু থেকে গ্রুপিং রাজনীতির কারণে বিভিন্ন সময়ে দ্বন্দ্বে, সংঘর্ষে জড়িয়ে পত্রিকার শিরোনাম হতে থাকে ছাত্রলীগ। ক্যাম্পাস ও হলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত এক বছরে ছোটবড় ২০টিরও বেশি সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ। এর মধ্যে ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থকে সাংবাদিক নির্যাতন ও যৌন হয়রানির দায়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বহিষ্কার করে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোর্স সম্পন্ন না করায় সাধারণ সম্পাদক ইমরান খানেরও ছাত্রত্ব বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বাকি সব নেতারও ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে। এর মধ্যে আবার কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় নতুন কমিটি দাবি করে আসছে জুনিয়র নেতাকর্মীরা। কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণের প্রায় দুই বছর পার হলেও সিনিয়র নেতাদের গড়িমসির কারণে নতুন কমিটি না আসায় জুনিয়র নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। তাই অনেকে রাজনীতি থেকে সরে গিয়ে ভিন্ন পথে হাঁটার কথা ভাবছেন। ছাত্রলীগের এই ভাঙ্গনকে কাজে লাগাতে চাইছে মৌলবাদী সংগঠন ছাত্রশিবির। ক্যাম্পাসে ব্যনারে তাদের কার্যক্রম না থাকলেও গোপনে কাজ করছে তাদের বিভিন্ন চক্র। ক্যাম্পাসে বেড়েছে তাদের অনাগোনা। তাদের টার্গেট নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী। সদস্য বাড়ানোর লক্ষ্যে নবীন শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে তাদের মগজ ধোলাই। শাখা ছাত্রদলের কার্যক্রমও বেড়েছে আগের চেয়ে। ক্যাম্পাসের বাইরে ব্যানার, ফেস্টুনের মাধ্যমে চলছে তাদের প্রচার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের এক কর্মী জনকণ্ঠকে বলেন, দীর্ঘদিন যাবত নতুন কমিটির জন্য ছাত্রলীগের কর্মীরা অপেক্ষা করছে। ক্ষমতা বহাল রাখার জন্য ছাত্রলীগের কিছু সিনিয়র নেতাই নতুন কমিটি আসতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
×