ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

বর্ণাঢ্য আয়োজনে জয়নুল উৎসব উদযাপিত

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭

বর্ণাঢ্য আয়োজনে জয়নুল উৎসব উদযাপিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মঞ্চ থেকে ভেসে আসছে রবীন্দ্রনাথের গান ‘সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে’, ‘এই উদাসী হাওয়ার পথে পথে মুকুলগুলি ঝরে’। মঞ্চকে সাজানো হয়েছে বর্ণময় করে। উপরে বাংলাদেশের আধুনিক শিল্পকলার পথিকৃত শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আবক্ষ ছবি। চারুকলার প্রধান ফটক থেকে শুরু করে সবখানে রঙিন সাজে সজ্জিত। একদিকে বাজছে ঢাক। সব মিলিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলাজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ১০৩তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে এ উৎসবের আয়োজন করেছে চারুকলা অনুষদ। শুক্রবার সকালে দুইদিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিমসটেকের সেক্রেটারি জেনারেল সহিদুল ইসলাম ও জয়নুল পুত্র প্রকৌশলী ময়নুল আবেদিন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। অনুষ্ঠানে ‘জয়নুল সম্মাননা’ প্রদান করা হয় ভারতের প্রখ্যাত ভাস্কর শিল্পী সনদ কর, চিত্রশিল্পী মোস্তফা মনোয়ার ও শিল্পী রফিকুন নবীকে। শিল্পী শামা রহমানের রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এর আগে শিল্পাচার্যের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। চারুকলার শিক্ষার্থীরা সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশন করেন রবীন্দ্রনাথের গান ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’, ‘আয় আয় আয় আমাদের অঙ্গনে’ ও ‘এদিন আজি কোন ঘরে গো খুলে দিল দ্বার’। স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন। এরপর শিল্পী সনদ কর, মোস্তফা মনোয়ার ও রফিকুন নবীর হাতে জয়নুল সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, উত্তরীয় পরিয়ে দেন বিশেষ অতিথি সহিদুল ইসলাম এবং মানপত্র তুলে দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন বাংলাদেশের লোকশিল্পীদের নিয়ে বিশাল কাজ শুরু করেছিলেন। তার অনেক কিছু এখনও আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। শিল্পীদের তালিকা এবং সহায়তাও প্রদান করতে পারিনি। এই চারুকলা এক সময় পিকনিক স্পটে পরিণত হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। আমরা তার থেকে মুক্ত করতে পেরেছি। শিল্পের গবেষণার দিকে আমরা অনেক পিছনে। আমরা সবে শিল্পীদের ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা শুরু করেছি। আমরা প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হলে, জয়নুল আবেদিনের ইচ্ছা সফল হবে। সম্মাননা পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় তিন শিল্পী বলেন, একজন বিখ্যাত ব্যাক্তির নামে এ সম্মাননা পাওয়ায় আমরা যেমন সম্মানিতবোধ করছি, আমাদের দেশও গর্ব বোধ করছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল পটের গান, পালা পার্বণ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, সঙ্গীত ও নৃত্য। চারুকলা প্রাঙ্গণে দুই দিনব্যাপী মেলার আজ শেষ দিন। সকাল ১০ থেকে শুরু হয়ে মেলা চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। বাতিঘর গ্রন্থ বিপনীর যাত্রা শুরু ॥ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র’র সঙ্গে যৌথভাবে আধুনিক ও মানসম্পন্ন বই বিপণী কেন্দ্র ‘বাতিঘর’ যাত্রা শুরু করেছে শুক্রবার। রাজধানীর বাংলামোটরে অবস্থিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের অষ্টম তলায় গড়ে তোলা হয়েছে এ বিপণী কেন্দ্র। লালবাগ কেল্লার আদলে নির্মিত ঢাকা বাতিঘরে রয়েছে প্রায় শতাধিক বিষয়ের দশ হাজার লেখক ও এক হাজার দেশী-বিদেশী প্রকাশনা সংস্থার লক্ষাধিক বইয়ের বিষয়ভিত্তিক বৈচিত্র সংগ্রহ। এছাড়া রয়েছে সংরক্ষিত প্রকাশক কর্নার, শিশু কিশোর কর্নার, লিটল ম্যাগাজিন ও সাহিত্য সময়িকী কর্নার এবং ক্যাফে। শুক্রবার দুপুরে বাতিঘর উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উদীচীর সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন ॥ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত জাতীয় সাংস্কৃতিক সম্মেলন। শুক্রবার ছিল তিনদিনব্যাপী সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন। বিকেলে আলোচনা পর্বের মধ্যদিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানমালা। আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল মোতালেব।
×