ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাঠ্যপুস্তক উৎসব পালনের প্রস্তুতি শেষ

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭

পাঠ্যপুস্তক উৎসব পালনের প্রস্তুতি শেষ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশব্যাপী পাঠ্যপুস্তক উৎসব পালনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের চার কোটি ৪২ লাখ ৪ হাজার ১৯৭ জন শিক্ষার্থীর দোরগড়ায় পৌঁছে গেছে বিনামূল্যের ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ১৬২ বই। উপজেলা ও স্কুলপর্যায়ে পৌঁছে গেছে বইয়ের শতভাগ। নতুন বছরের প্রথম দিন সোমবার দেশজুড়ে সূচনা হবে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের। সপ্তাহব্যাপী উৎসবের মধ্য দিয়ে প্রতিটি শিক্ষার্থী পাবে বিনামূল্যের ঝকঝকে নতুন বই। এ নিয়ে টানা নবম বারের মতো বছরের প্রথম দিন প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যের বই দিতে যাচ্ছে সরকার। রীতি অনুসারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার সকাল ১০টায় গণভবনে কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। এরপর ১ জানুয়ারি সকালে আজিমপুর গবর্নমেন্ট গার্লস স্কুল এ্যান্ড কলেজ মাঠে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক উৎসবের উদ্বোধন করবেন। এই উৎসবে রাজধানীর কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যোগ দেবে। এনসিটিবির আয়োজনে এ উৎসবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ আলমগীর, এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা উপস্থিত থাকবেন। অন্যদিকে সকালেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক উৎসবের উদ্বোধন করবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। এই অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আসিফ-উজ-জামান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল উপস্থিত থাকবেন। জানা গেছে. গেল বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও ভালভাবে বই বিতরণ নিশ্চিত করতে ছাপা হয়েছে চাহিদার তুলনায় অন্তত ৫ শতাংশ বেশি বই। কোথাও সঙ্কট দেখা দিলে অতিরিক্ত এ বই সেখানে সরবরাহ করা হবে। এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা শুক্রবার সন্ধ্যায় জনকণ্ঠকে বলেছেন, শতভাগ বই পৌঁছে গেছে। বছরের প্রথম দিন ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে উৎসবের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে। ওই দিন দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই উৎসবের মাধ্যমে বই বিতরণ করা হবে। এবার প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন করে শিক্ষা উপকরণ দেয়া হবে না জানিয়ে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, গত বছর ওই সব শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে যা বিদ্যালয়েই রাখা হয়। শুধু পাঠদানের সময় ওই সব উপকরণ ব্যবহৃত হয় বলে প্রতি বছর বিতরণের প্রয়োজন নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত বছরের চেয়ে এবার ১০ লাখ ৭০ হাজার ৯৬৬ জন শিক্ষার্থী বেড়েছে। ফলে এবার ৭১ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬৯টি বই বেশি ছাপা হয়েছে। গেল আট বছরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে ২২৫ কোটি ৪৫ লাখ ১১ হাজার ৭৫০টি বই ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। নতুন বছরের প্রথম দিন ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ১৬২টি বই মিলিয়ে মোট ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ এক হাজার ৯১২টি বই বিতরণ করতে যাচ্ছে সরকার। এদিকে পৃথক পৃথকভাবে দুই মন্ত্রণালয়ের বই উৎসবের আয়োজন সম্পর্কে জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বই উৎসবের তাৎপর্য বাড়াতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়াও কয়েকজন তারকাকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। অন্যদিকে, আজিমপুর খেলার মাঠে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত বই উৎসবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ একাধিক মন্ত্রী-এমপি ও শিক্ষাবিদদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উৎসবেকে আনন্দমুখর করতে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা লাল-নীল প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুনসহ মাথায় ফিতা ও টুপি পরে অনুষ্ঠানে যোগ দিবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুফাদ আহমেদ চৌধুরী। এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলছিলেন, শিক্ষার্থীদের হাতে সময় মতো বই তুলে দেয়াটা ছিল চ্যালেঞ্জ। এ জন্য শুরু থেকেই এনসিটিবি, বইয়ের মনিটরিংয়ে থাকা দুটি পরিদর্শন টিম ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তৎপর ছিল। শুরুতে নানা জটিলতা দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ের আগেই ছাপানোর কাজ শেষ হয়েছে।
×