ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

বর্ণিল আয়োজনে উদীচীর সাংস্কৃতিক সম্মেলন শুরু

প্রকাশিত: ০৫:১০, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭

বর্ণিল আয়োজনে উদীচীর সাংস্কৃতিক সম্মেলন শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘দ্রোহে বিদ্রোহে বিপ্লবে, গড়ি বিশ্ব সপ্তসুরে’ স্লোগানে শুরু হলো বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত জাতীয় সাংস্কৃতিক সম্মেলন। বৃহস্পতিবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তিন দিনের এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রবীণ কৃষক নেতা ও লোকশিল্পী আবুল হাশিম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সভাপতি সৈয়দ হাসান ইমাম, গোলাম মোহাম্মদ ইদু ও কামাল লোহানী। উদ্বোধনী পর্বের শুরুতেই জাতীয় সঙ্গীত ও সংগঠন সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের শিল্পীরা। এরপর উদ্বোধন ঘোষণা করেন আবুল হাশিম। এরপর একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শহীদ মিনার থেকে বের হয়ে টিএসসি দিয়ে শাহবাগ হয়ে আবার শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। সারাদেশ থেকে আসা উদীচীর শিল্পী-কর্মীরা শোভাযাত্রায় নেচে-গেয়ে আনন্দে মাতেন। শোভাযাত্রা শেষে শুরু হয় উদ্বোধনী সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ‘জীবন খুঁজে পাবি’ শিরোনামের এ পরিবেশনাটি গ্রন্থনা করেছেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন। নির্দেশনা দিয়েছেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম আর সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি হাবিবুল আলম। এ পরিবেশনায় কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী মানুষের দৈনন্দিন জীবন-সংগ্রামের চিত্র তুলে ধরা ছাড়াও দেশে চলমান সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে জোরাল প্রতিবাদ তুলে ধরা হয়। আলোচনা পর্বে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন। এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সভাপতি সৈয়দ হাসান ইমাম, বর্তমান সহ-সভাপতি মাহমুদ সেলিম এবং উদীচীর উপদেষ্টামন্ডলীর অন্যতম সদস্য ও বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম। এ পর্বটি সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে। আলোচনা শেষে শুরু হয় উদ্বোধনী দিনের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এ পর্বের শুরুতেই সিলেট অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী গান পরিবেশন করেন উদীচীর দক্ষিণ সুনামগঞ্জ সংসদের শিল্পীরা। এরপর সুনামগঞ্জের দিরাই শাখার শিল্পীরা পরিবেশন করেন লোকগান। এরপর গণসঙ্গীত নিয়ে মঞ্চে আসেন উদীচী চাঁদপুর জেলা সংসদের শিল্পীরা। এরপর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন উদীচী মৌলভীবাজার জেলা সংসদের শিল্পীরা। তাদের পরিবেশনার পর ছিল নড়াইলের নড়াগাতি শাখার শিল্পীদের পরিবেশনা। দিনাজপুরের শিল্পীরা আদিবাসী বিয়ের গান গেয়ে মঞ্চ মাতান। আর প্রথম দিনের সবশেষ পরিবেশনা ছিল উদীচী সিলেট জেলা সংসদের নাটক ‘ভানুবিলের লড়াই’। এ পর্বটি সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম ও সম্পাদকম-লীর সদস্য কংকন নাগ। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত উদীচীর তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনে সারাদেশ থেকে উদীচীর শিল্পী-কর্মীরা নিজ নিজ অঞ্চলের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ভা-ার নিয়ে অংশ নিচ্ছেন। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে পরিবেশিত হবে আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী নানা পরিবেশনা। বিভিন্ন জেলা ও শাখার পরিবেশনা ছাড়াও রয়েছে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের প্রদর্শনীর আয়োজন। যেখানে প্রায় ৪০টি দেশীয় বাদ্যযন্ত্র প্রদর্শিত হচ্ছে। রয়েছে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও বইয়ের দোকান। সারাদেশে শিশু চলচ্চিত্র উৎসব ॥ সারাদেশে একযোগে শুরু হলো ‘বাংলাদেশ শিশু চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৭’। শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে দেশের ৬৪ জেলায় চারদিনের এ উৎসবের উদ্বোধন হয়েছে। উৎসব সাজানো হয়েছে শিশুতোষ চলচ্চিত্র ও শিশু নির্মাতাদের ৪০টি চলচ্চিত্র দিয়ে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে উৎসব উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার, মুনিরা মোর্শেদ মুন্নী, শিশু নির্মাতা ফারাহ জাবীন ঐশি প্রমুখ। উদ্বোধনী বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ছোট-বড় সকলের ভাল লাগে এমন ছবি নির্মিত হওয়া উচিত। এতে পরিবারের সবাই মিলে একত্রে ছবি দেখার আনন্দ উপভোগ করা যায়। শিশু চলচ্চিত্রকে উৎসাহিত করার জন্য সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রতি বছর ১টি শিশুতোষ চলচ্চিত্রকে অনুদান প্রদানের চেষ্টা করা হচ্ছে। উৎসবের প্রথম দিনে দেখানো হয় সাতটি চলচ্চিত্র। আজ দ্বিতীয় দিন ঢাকাসহ সকল জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে একই চলচ্চিত্র দেখানো হবে। উৎসব সবার জন্য উন্মুক্ত।
×