ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আমি অনেক বেশি লাকি -মাহি

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭

আমি অনেক বেশি লাকি -মাহি

ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি। বেশকিছু ছবি হাতে রয়েছে তার। ব্যস্ত সময় পার করছেন শূটিং নিয়ে। সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেন আনন্দকণ্ঠর সঙ্গে। সাক্ষাতকার নিয়েছেন- রুহুল আমিন ভূঁইয়া আনন্দকণ্ঠ : বেশ ব্যস্ত মনে হচ্ছে। কি নিয়ে ব্যস্ত আছেন? মাহিয়া মাহি : শূটিং নিয়ে ব্যস্ত। কয়েক দিন আগে পাবনার বিভিন্ন লোকেশনে মাহমুদ হাসান পরিচালিত ‘অবতার’ ছবিটির শূটিং করে ঢাকা ফিরে মন দেব মন নেব ছবি নিয়ে এখন বেশ ব্যস্ত আছি। আনন্দকণ্ঠ : ছবিতে কি চরিত্রে দেখা যাবে আপনাকে? মাহিয়া মাহি : ‘মন দেব মন নেব’ ছবিতে একেবারে ভিন্নধর্মী চরিত্রে দর্শকরা আমাকে দেখতে পাবেন। এই চরিত্রে কমেডি, এ্যাকশন ও রোমান্স সবই আছে। সব মিলিয়ে সবাই পছন্দ করবেন, এমন একটা চরিত্র। আর গল্পটিও নারী প্রধান। পুরো গল্প আমাকে ঘিরে। আশা করছি ভাল একটি চলচ্চিত্র উপহার পাবেন দর্শক।’ আনন্দকণ্ঠ : চরিত্রের জন্য প্রস্তুতি কেমন ছিল? মাহিয়া মাহি : সত্যি কথা বলতে কী, আমি কোন ব্যাপারে আগে থেকে কোন প্রস্তুতি নিতে পারি না। প্রস্তুতি নিলে আমার সবকিছু গুবলেট হয়ে যায়। ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে পরিচালক যা বলেন বা যেভাবে চান, সেটাই করে ফেলি। এ রকম অবস্থা কিন্তু আমার পড়াশোনা করার সময়ও ছিল। প্রস্তুতি ছাড়াই পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছি। আনন্দকণ্ঠ : আজকাল নায়িকা প্রধান ছবির বাইরে কাজ করতে চান না। কেন? মাহিয়া মাহি : কাজ করতে চাই না এটা সত্যি নয়। সত্যিটা হলো নায়িকা প্রধান ছবিতে কাজ করতে বেশি আগ্রহী আমি। সারা দুনিয়ায় নায়িকা নির্ভর গল্প নিয়ে ছবি নির্মিত হচ্ছে। আর আমাদের দেশে নায়িকা কেবল নায়কের সাপোর্টিং ক্যারেক্টার! এই জায়গাটায় পরিবর্তন আনতে চেষ্টা করছি। বেশ কিছু ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করতে পারছি। এই দেশে নায়িকা হয়ে একসঙ্গে এতগুলো ছবিতে নাম ভূমিকায় কাজ করতে পারা ভাগ্যের ব্যাপার। আমার মনে হয় চাওয়ার চেয়ে বেশি পাচ্ছি আমি। আনন্দকণ্ঠ : ঢাকা এ্যাটাক নিয়ে কেমন অভিজ্ঞতা হলো? মাহিয়া মাহি : খুব ভাল। দেশ ছাড়া বিদেশেও ছবিটি বেশ দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। আর বেশি অবাক হয়েছি, ইতালির ভেনিস শহরের একটি হলো প্রিমিয়ার শোতে দর্শকপূর্ণ ছিল। এই প্রথম দেশের বাইরে বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের এই দৃশ্য দেখে সত্যিই খুব ভাল লাগছিল। যেসব জায়গায় ঘুরেছি, সবখানেই ছবিটি দর্শক দারুণ আগ্রহ নিয়ে দেখেছে। আনন্দকণ্ঠ : ২০১৭ সাল কেমন কাটালেন? মাহিয়া মাহি : খুবই ভাল। মানুষ যখন আমার খুব প্রশংসা করত তখন আমার কাছে মনে হত এটা মানুষ একটু বেশি বেশি বলছে। কিন্তু এখন আমি ফিল করি এটা আমার জন্য অনেক বেশি প্রযোজ্য। আমি অনেক বেশি লাকি। আমি যতদূর জানি বিয়ের পরে নায়িকারা অনেকটাই হারিয়ে যায়। সবাই বলে এ সময় তেমন একটা ক্রেজ থাকে না, সিনেমা পাওয়া যায় না, ডিরেক্টররা নিতে চান না, ফ্যামিলি থেকেও তেমন একটা সাপোর্ট পাওয়া যায় না। আর এক্ষেত্রে আমার বেলায় একদম ভিন্ন। বিয়ের আগে আমি যতটুকু কাজ করতাম তার চেয়ে বছরের অর্ধেক সময় ঘুরে বেড়াতাম আর বাকি সময় কাজ করা হতো। আর এখন আমি অনেক ব্যস্ত। ২০১৭ সাল আমার জন্য বেশি লাকি। আমার স্বামী অপু আমার জন্য লাকি। বিয়ের পর আমার কাছে অসংখ্য ভাল ভাল ছবির অফার আসছে। আমার হাতে এখন অনেক কাজ। কোনটা ছেড়ে কোনটা করব টেনশনে থাকি। ডিরেক্টররা আমাকে নেয়ার জন্য অনেক বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এখন অনেক ভাল ভাল ডিরেক্টরের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হচ্ছে। আনন্দকণ্ঠ : অভিনয়ের জন্য স্বামীর পরিবার থেকে কেমন সহযোগিতা পাচ্ছেন? মাহিয়া মাহি : স্বামীর পরিবার আমাকে খুব সাপোর্ট করছে। মাসের পর মাস শূটিংয়ের জন্য আমি বাহিরে থাকি। এসব ব্যাপারে তাদের দিক থেকে কোন অভিযোগ নেই। বরং তারা আরও জানতে চায় কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা, শূটিং ঠিকমতো চলছে কিনা। তাদের সহযোগিতা সব সময় থাকে। আমি যখন একদিন গ্যাপ পাই সিলেটে চলে যাই। এ সময় অপু আনা-নেয়া করে। রাত তিনটার সময় যদি শূটিং শেষ হয় দেখি অপু গাড়ি নিয়ে এসে হাজির। এই যে সাপোর্টগুলো এসব আমাকে খুব উৎসাহিত করে। তখন আমার মনে হয় আমাকে আরও অনেক বেশি ভাল কাজ করতে হবে। যাতে তারা আমাকে দেখে প্রাউড ফিল করতে পারে। আনন্দকণ্ঠ : অনেক দিন জাজে কাজ করলেন এখন কেন গ-ির বাইরে? মাহিয়া মাহি : আমি মনে করি নির্দিষ্ট গ-ির মধ্যে থাকা ভাল তবে সেটা প্রথম স্টেজে। যাতে বেজটাকে শক্ত করা যায়। আমি প্রথম দিকে একটানা জাজে কাজ করেছি। একটার পর একটা সিনেমা করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। ভাল ভাল ছবিতে কাজ করেছি। উল্টা-পাল্টা কোন ছবিতে কাজ করিনি। যদি করতাম তাহলে আমার ক্যারিয়ারটা নিচে নেমে যেত। আমি মনে করি একটা সময় পর্যন্ত গ-ির মধ্যে থাকাটা ভাল। ওই সময়টা চলে গেলে ওপেন হয়ে যাওয়া উচিত। আমার অনুভূতি হলো আমার লাইফে যা যা হয়েছে সব পারফেক্টলি হয়েছে। জাজে কাজ করার মাধ্যমে নিজেকে প্রস্তুত করেছি। এখন আমি বাইরে কাজ করতে পারি। আনন্দকণ্ঠ : মুক্তি প্রতিক্ষীত কি কি ছবি রয়েছে? মাহিয়া মাহি : মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘জান্নাত’, শাহনেওয়াজ শানুর ‘পলকে পলকে তোমাকে চাই’, বদিউল আলম খোকনের ‘হারজিৎ’ গাজী জাহাঙ্গীরেরর প্রেমের বাঁধন, একে সোহলের ‘পবিত্র ভালোবাসা’ সহ আরও বেশকিছু ছবি মুক্তি প্রতিক্ষীত রয়েছে। আনন্দকণ্ঠ : ভবিষ্যত পরিকল্পনা? মাহিয়া মাহি : দর্শকের অগণিত ভালবাসা পাচ্ছি। ভবিষ্যতেও সবার ভালবাসা নিয়েই আরও ভাল ভাল কাজ করে সবার হৃদয়ে বেঁচে থাকতে চাই। আনন্দকণ্ঠ : সংসার কেমন চলছে? মাহিয়া মাহি : সবার দোয়ায় খুব ভাল আছি। অপু আমাকে খুব ভালবাসে। আমাকে হুটহাট সারপ্রাইজ দেয়। আমি খুব এনজয় করি। সবার কাছে দোয়া চাই যেন এভাবেই বাকিটা জীবন একসঙ্গে কাটাতে পারি।
×