ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

একজন আর্টিস্টের ব্যবহার মার্জিত হওয়া উচিত ॥ ইরফান সাজ্জাদ

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭

একজন আর্টিস্টের ব্যবহার মার্জিত হওয়া উচিত ॥ ইরফান সাজ্জাদ

সময়ের তরুণ অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম ইরফান সাজ্জাদ। ছোট-বড় দুই পর্দাতেই রেখেছেন কৃতিত্বের স্বাক্ষর। নিজের মধ্যে অন্যের চরিত্রকে প্রবেশ করিয়ে পর্দায় তার আবেশ ফুটিয়ে তুলে দর্শকদের দৃষ্টি আটকে দিয়েছেন তিনি। তারকা হয়ে হারিয়ে যাওয়া নয়, বরং ভাল কাজে সকলের মাঝে প্রাণবন্ত থাকাই তার মূল উদ্দেশ্য। বর্তমান কাজের অবস্থা জানতে চাইলে ইরফান আনন্দকণ্ঠকে বলেন, আলহামদুলিল্লাহ সব কিছুই ভালমতো এগোচ্ছে। কয়েক বছর ধরে আমি অভিনয়ের সঙ্গে আছি। সব সময় চেষ্টা করি ভূরি ভূরি কাজ না করে অল্প কিছু ভাল কাজ করতে। অল্প কাজ করে যদি দর্শককে ভাল কিছু দিতে পারি তাহলে সেটিই আমার বড় প্রাপ্তি। এখন আর আপনাকে ধারাবাহিক নাটকে দেখা যাচ্ছে না। না দেখার কারণ কি? সে রকম কোন কারণ নেই। ধারাবাহিক নাটকে কাজ করলে ৩০ দিনই কাজ করতে হয় সে ক্ষেত্রে খুব প্রেশার পড়ে। আর খুব বেশি মানসম্মত সিরিয়াল হচ্ছে তা কিন্তু নয়। তাই আমি চাচ্ছি না সব কাজে যুক্ত থাকি। যদি খুব ভাল গল্পের সিরিয়াল হয় তাহলে সেগুলোতেই যুক্ত হই। আমাদের এখন বেশ ভাল ভাল খ- নাটক হচ্ছে। ভাল কাজ হওয়ার জন্য বেছে গল্প দেখে খ- নাটক করছি। যাতে করে কাজ মানসম্মত থাকে সেই চেষ্টাই করছি। প্রচারের অপেক্ষায় রয়েছে কতটি নাটক? অনেক নাটক প্রচারের অপেক্ষায় রয়েছে। এত নাটক রয়েছে নাম বলে শেষ করা যাবে না। সোমবার করলাম তোমার চুল বাঁধা নাটকের কাজ। আমার বিপরীতে আছে মেহজাবিন চৌধুরী। তোমার চুল বাঁধা নাটকের গল্পটি কেমন? এটি একটি স্বামী স্ত্রীর খুনসুটির গল্প। দু’জন দু’জনকে খুব পছন্দ করে। হঠাৎ করে স্ত্রীর মনে হলো সে চাকরি করবে। কিন্তু স্বামী চায় না সে চাকরি করুক। স্বামী চায় সে কোন প্রেশার না নিয়ে বাসার ভেতরেই থাকুক। এ সব নিয়েই খুনসুটি মান অভিমান শুরু এক পর্যায়ে দেখা যায় স্বামী গুম হয়ে যায়। তার কোন হদিস পাওয়া যায় না। এভাবেই গল্পটি এগিয়ে যায়। মিডিয়াতে কাজের শুরু কি ভাবে হয়েছিল? ২০১৩ সালে রিয়েলিটি শোর মাধ্যমেই আমার মিডিয়াতে পা দেয়া। তবে ছোটবেলা থেকেই শোবিজে কাজ করার একটা ইচ্ছা ছিল। অনেক আগে থেকেই থিয়েটার করতাম। আসলে খুব আগ্রহ থেকেই স্কুলের সাংস্কৃতিক বিভাগের সব কিছুতেই অংশগ্রহণ করতাম। তখন থেকেই ধীরে ধীরে ইচ্ছার লালন হয়। বলতে পারেন আমি অনেকটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। সেই ইচ্ছা থেকেই আজ এখানে আমি। যদিও মাঝে একটা সময় বিরতি নিয়েছিলাম। সব কিছু থেকেই। এমনকি থিয়েটার থেকেও। মিডিয়ায় কাজের ক্ষেত্রে নিজেকে কতটা প্রস্তুত মনে করেন? মিডিয়াতে কাজের ব্যাপারে আসলে আমার ইচ্ছা ছিল এবং আমার মনে হতো আমি এই কাজ করতে পারব। অনেকের ইচ্ছে থাকে না ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হবে তেমনটা আমারও ইচ্ছে ছিল মিডিয়াতে কাজ করব। যত দিন যাচ্ছে নিজেকে তত দক্ষ করার সুযোগ পাচ্ছি। আগের কাজের সঙ্গে বর্তমান কাজের পার্থক্য? প্রথমে এককভাবে কাজ করতাম আর এখন কেমন কাজ করি, তা আমি অবশ্যই বুঝতে পারি। তখন আসলে চাইতাম কাজ আর কাজ। মানে কোন রকম কাজ পেলেই হলো, করব। তবে এখন সেটা করি না। এখন একটা কাজ করলে সেটা নিয়ে ভেবে ফিল্টার করতে চেষ্টা করি। একটা সুযোগ পাই কাজের অবস্থাটা বোঝার ও শুধরে ফেলার। কোন কাজ ভাল, কোনটা কেমন তার একটা মাপ করি। ক্যামেরার সামনে প্রথম কাজের অভিজ্ঞতা? আমার শুরুটা রিয়েলিটি শো দিয়ে। সে ক্ষেত্রে শোতে অনেক বারই ক্যামেরার সামনাসামনি হতে হয়েছে। কিন্তু নাটকের কাজ করার সময় প্রথমবার কিছুটা নার্ভাসনেস তো অবশ্যই কাজ করেছিল। কারণ রিয়েলিটি শোতে অভিজ্ঞতা ছিল অন্য রকম আর নাটকে কাজটা ভিন্ন। নাটকের ফ্রেম বুঝতাম না। তবে হ্যাঁ আমি নার্ভাস ছিলাম তবে উৎসাহের মাত্রাও কম ছিল না। ইরফানের যে কথাটি সকলের অজানা? আমি আসলে বাইরে যেমন ভেতরেও ঠিক তেমন। আমার নিজের এমন কোন লুকিয়ে রাখার কিছু নেই কারও কাছে। আমার কাছের মানুষেরা এবং আমার সঙ্গে যারা কাজ করে তারা জানে আমি কেমন। ভক্তদের প্রতি একজন শিল্পীর কেমন মনোভাব থাকা উচিত? অনেকেই অনেক অনেক ভক্তের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানসিক ভারসাম্যটা রাখতে পারে না তাই ইগ্নোর করে। আনেক দিন আগের কথা আমি যশোরে যাই একটা শূটের কাজে, তো সেখানে প্রায় ২০০ মানুষকে আমার সামলাতে হয়েছিল। তারা সবাই ছিল কো-আর্টিস্ট। সবার সঙ্গে আমি যত সেলফি তুলেছি এত সেলফি আমি আমার সারা জীবনেও তুলিনি। এত মানুষের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলা, সেলফি তোলা আসলেই কঠিন। আমার মতে ভক্তদের প্রতি একজন আর্টিস্টের ব্যবহারটা খুব সাধারণ হওয়া উচিত। নিজেকে আলাদা না করে তাদের মতো করেই কথা বলা উচিত। আনন্দকণ্ঠ ডেস্ক
×