ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মাদারীপুরে সালিশে কিশোরীকে জুতাপেটা

প্রকাশিত: ০৬:২২, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭

মাদারীপুরে সালিশে কিশোরীকে জুতাপেটা

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ২৭ ডিসেম্বর ॥ মাদারীপুর শহরের মধ্যখাগদি এলাকায় সালিশ মীমাংসার নামে এক কিশোরীকে জুতাপেটা করার অভিযোগ উঠেছে এক পৌর কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি মঙ্গলবার বিকেলে ঘটলেও বিষয়টি বুধবার জানাজানি হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভের পাশাপাশি চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। জানা গেছে, গত ১৮ ডিসেম্বর ওই কিশোরীকে ফুসলিয়ে নিয়ে যায় একই এলাকার কুদ্দুস শরীফের ছেলে হাসান শরীফ। এরপরে মেয়েটিকে তামান্না নামে এক মহিলার কাছে বিক্রি করে দেয় হাসান। বিষয়টি ওই কিশোরীর পরিবার জানতে পেরে মাদারীপুর সদর উপজেলার খাগছাড়ার করম বাজার থেকে গত শুক্রবার মেয়েটিকে উদ্ধার করে। পরে কিশোরীর পরিবার স্থানীয়দের জানালে মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি নিয়ে সালিশ বসে তারা। সালিশে উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুর পৌরসভার এক কাউন্সিলর, এক আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক এক কাউন্সিলর, স্থানীয় প্রভাবশালীসহ শতাধিক লোক। সালিশে তারা ওই কিশোরীকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ ঘা জুতাপেটার নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে হাসান শরীফকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ১০ ঘা জুতাপেটা প্রদানের নির্দেশ দেয়। নির্দেশ পেয়ে সালিশে উপস্থিত আকলিমা বেগম নামে এক নারী কিশোরীকে জুতাপেটা করে। এ ঘটনার পর থেকে নির্যাতিত ওই কিশোরীর পরিবার নিরাপত্তাহীন এবং লোকলজ্জার ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। লাঞ্ছিতা ওই কিশোরীর ভাই জসিম ফকির বলেন, ‘আমার বোনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বিক্রি করে দেয় হাসান। এরপর আমরা বোনকে উদ্ধার করি। পরে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়ার নামে আমার বোনকে জুতাপেটা করেছে।’ লাঞ্ছিতা ওই কিশোরী বলেন, ‘আমরা কোন দেশে বসবাস করি। আমার অনেক বড় ক্ষতি করেছে ওরা। এর বিচার তো পাইনি; উল্টো সালিশের নামে আমাকে জুতাপেটা করেছে। আমি এর বিচার চাই।’ লাঞ্ছিতা কিশোরীর ফুফু আকিমন বেগম বলেন, ‘আমার ভাই গরিব মানুষ, ভ্যান চালিয়ে সংসার চালায়। আমরা গরিব বলে আমাদের সঙ্গে ওরা অবিচার করেছে। আমরা ওদের বিচার চাই।’ সালিশদার ও আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘মেয়ের চরিত্র খারাপ। সালিশে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আমরা জুতাপেটা করেছি।’
×