ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খুবির শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭

খুবির শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ওয়াহিদুজ্জানের বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী জান্নাত আরা ফেরদৌস। মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, শিশু সন্তানসহ তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ভুয়া তালাকনামা দেখিয়ে তার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। মিথ্যা মামলায় তাকে ও তার পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে খুবির গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ ওয়াহিদুজ্জান বলেন, যৌতুক দাবি করার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি কোন প্রকার নির্যাতনও করেননি। বরং তার উপর নির্যাতন হয়েছে। এক সঙ্গে থাকা সম্ভব না হওয়ায় গত ২০ মার্চ স্ত্রীকে আইনীভাবে তালাক দিয়েছেন বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে যশোর সরকারী এম এম কলেজের দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী জান্নাত আরা ফেরদৌস বলেন, ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জামানের সঙ্গে পারিবারিক ও আনুষ্ঠানিকভারে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাকে খুলনা মহানগরীর নিরালার একটি ভাড়া বাসায় আনা হয়। সংসারে সুখের স্থায়িত্বকাল ছিল মাত্র চার মাস। এরপর বিয়ের সময় কন্যাপক্ষ উপঢৌকন দিতে না পারার অভিযোগে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ ওই পরিবারের অন্য সদস্যরা নানাভাবে তাকে অপমান করতে শুরু করেন। গর্ভের সন্তান নষ্ট করার উদ্দেশে তার স্বামী চার বার মারপিট করে তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিল। এ অবস্থায় তার বাবা-মা এসে তাকে যশোরে তাদের বাড়িতে নিয়ে যান। সন্তান প্রসবকালে হাসপাতালে গিয়েও স্বামী তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। হাসপাতাল থেকে বাবার বাড়িতে যাওয়ার পর স্বামী ওয়াহিদুজ্জামান স্ত্রী-সন্তানের কোন খোঁজ নিত না। ৫-৬ মাস কোন যোগাযোগ না রাখায় পারিবারিক শালিসের মাধ্যমে শিশু সন্তানসহ তিনি বাসায় ফেরেন। কিছুদিন পর তাকে সন্তানসহ স্বামীর গ্রামের বাড়ি গাজীপুরে নিয়ে একরকম আটকে রেখে নির্যাতন এবং যৌতুক দাবি করা হয়। পরে পরীক্ষার জন্য খুলনায় চলে আসেন। কিন্তু এসে প্রচন্ড নির্যাতনের শিকার হতে হয়। অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য সরাসরি ১০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মারধর করে তাকে শিশু সন্তানসহ বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। কোন উপায় না থাকায় বাবার বাড়ি যেতে বাধ্য হন। পরে ভার্সিটিতে গিয়ে ডিসিপ্লিন প্রধানের কাছে অভিযোগ করলে তার স্বামী একটি ডিভোর্স লেটার দেখান। যেটা তালাক দেয়ার কাগজ হিসেবে আদালতে প্রমাণিত হয়নি। আদালত গত ১৩ সেপ্টেম্বর তাকে তার স্ত্রী হিসেবে অস্থায়ী সুরক্ষার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। সেটা বানচাল করতে সে দায়রা জজকোর্টে রিভিশন করেছে। তিনি বলেন, তার স্বামী মিথ্যাবাদী, অত্যাচারী ও পাপাচারি। তার অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তিনি সরকার, মানবাধিকার সংস্থা, মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট সহযোগিতা কামনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জান্নাত আরা ফেরদৌসের বড় বোন মাহফুজা খানম, ভাই হোজায়ফা আল মাহমুদ ও শিশু পুত্র জাবির জাওয়াদ।
×