স্টাফ রিপোর্টার,মুন্সীগঞ্জ ॥ শ্রীনগর বাজারের স্বর্ণের মার্কেটে গত কয়েক বছরে অর্ধশতাধিক দোকানে দুর্ধর্ষ চুরি হয়েছে। পর্যায়ক্রমে হাজার ভরি স্বর্ণ ও রৌপ চুরি হলেও স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। অভিযোগ না করার নেপথ্যে রয়েছে জমজমাট চোরাই স্বর্ণের ব্যবসা। আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী হানা দিয়ে মার্কেটের দু -একটি দোকান থেকে ডাকাতির স্বর্ণ উদ্ধার করলেও বাকিদের অবস্থান ধরাছোঁয়ার বাইরে।
শ্রীনগর বাজার বণিক সমিতি ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির কর্তাব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় স্বর্ণের মার্কেটে চুরি হওয়ার ঘটনায় থানায় অভিযোগ না হওয়ার বিষটি স্বীকার করেন। তবে কি কারণে অভিযোগ হয় না তা প্রকাশ করতে অপারগতা জানান। স্থানীয়রা জানায়, শ্রীনগর বাজারের স্বর্ণপট্টিতে প্রায় দেড় শতাধিক স্বর্ণের দোকান রয়েছে। স্বর্ণ বন্ধকের মাধ্যমে এই মার্কেটের দোকানগুলোতে রয়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার জমজমাট সুদের ব্যবসা। এছাড়া অধিকাংশ দোকানে স্বর্ণালঙ্কার তৈরি হওয়ায় গ্রাহকের স্বর্ণও দোকানিদের কাছে জমা থাকে। সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে সুনীল পোদ্দারের দোকানের দ্বিতীয় তলায় ২২ টি তালা ভেঙ্গে ৩ টি সিন্ধুক থেকে বিপুল স্বর্ণ ও রৌপ চুরির ঘটনা ঘটেছে। চুরির পর থেকে সুনীল পোদ্দার ভাবলেশহীনভাবে দোকানে এসে বসে থাকলেও কি পরিমান স্বর্ণ ও রৌপ চুরি হয়েছে তা তিনি কাছের লোক ছাড়া প্রকাশ করছেন না। এমন দুর্ধর্ষ চুরির পরও থানায় কোন অভিযোগ হয়নি। স্বর্ণ শিল্প সমিতির সভাপতি নিতাই দাস ৩ টি সিন্ধুক ভাঙ্গার কথা স্বীকার করে বলেন, প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটে। স্বর্ণপট্টি শুক্রবার সারাদিন বন্ধ থাকে। সংঘটিত প্রায় প্রতিটি চুরির ঘটনাই শুক্রবার রাতে ঘটেছে। একটির সঙ্গে হয়ত আরেকটির যোগসাজশ রয়েছে। এর আগে স্বর্ণপট্টির পরিমল দাস, জীতেন কুড়ি, ননী গোপাল সরকার, লক্ষণ পোদ্দারের দোকানসহ প্রায় অর্ধশতাধিক দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। কোন ঘটনায়ই থানায় কোন অভিযোগ হয়নি। এর নেপথ্যে রয়েছে চোরাই ও ডাকাতির স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা। এর আগে র্যাব নোয়াখালীর বেগম গঞ্জের একটি ডাকাতির ঘটনায় লুট হওয়া স্বর্ণালঙ্কার শ্রীনগর বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী উজ্জল কাটিং হাউস থেকে উদ্ধার করে। স্বর্ণ সিমিতির সাধারণ সম্পাদক সমর দত্ত বলেন, চুরির ঘটনায় কেউ অভিযোগ করবে কি করবে না তা ব্যক্তিগত ব্যপার। সমিতির পক্ষ থেকে কিছুই করার নেই। শ্রীনগর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি বিজয় চক্রবর্তী বলেন, স্বর্ণপট্টি বাজারের ভেতর হলেও তারা বণিক সমিতির কোন নিয়মকানুন মানে না।
চুরির ঘটনায় তাদের থানায় অভিযোগের পরামর্শ দেয়া হলেও তারা তা গ্রহণ করে না। তবে বিষয়টি প্রশাসনের দেখা উচিত।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: