ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের ষাট ভাগের শিকড় বাংলাদেশে

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭

উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের ষাট ভাগের শিকড় বাংলাদেশে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘পড়াশোনা করার পর এখনও বুঝতে পারিনি কেন শুধু হিন্দুস্থানী ক্লাসিক্যাল মিউজিক বলা হচ্ছে। ক্লাসিক্যালের প্রায় ষাট পার্সেন্ট রুটস বাংলাদেশের। অক্ষয় কুমার বোস আমার পরিবারে প্রথম তবলা বাজান। আমি একমাত্র দলছুট সরদ বাজাই। আমারও শুরু তবলাতে। যেখানে আমি থাকি আমাদের পাশেই কলকাতার শ্যামবাজারে অনাথ বোস বাস করতেন তার পুরো রুটস বাংলাদেশে। তার বাড়িতে ওস্তাদ বাদল খাঁ সাহেব সারেঙ্গীবাদক উনি বাংলাদেশের। এছাড়া এনায়েত খাঁদের পরিবার বাংলাদেশের। আলাউদ্দিন খাঁ সাহেবের মতো এরকম অগণিত আছেন যারা বাংলাদেশী যাদের শেকড় বাংলাদেশে। রাজনৈতিক কারণে ভাগাভাগি হলেও সঙ্গীততো এ রকম ভাগ করা যায় না।’ এ কথা বলেন প্রখ্যাত সরোদ বাদক দেবজ্যোতি বোস। ঢাকার ধানম-ির আবাহনী মাঠে চলমান বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের ষষ্ঠতম আসরের দ্বিতীয় রজনীতে আজ বুধবার রুনু মজুমদারের বাঁশির সঙ্গে সরদের জুগলবন্দীতে অংশ নেবেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই শিল্পী। উৎসব উপলক্ষে ঢাকার এক অভিজাত হোটেলে বৃহস্পতিবার বিকেলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এতে উপস্থিত ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত কত্থক নৃত্যশিল্পী অদিতি মঙ্গলদাস। তিনিও আজ কত্থক নৃত্য পরিবেশন করবেন। সঙ্গে থাকবে তার ড্যান্স কোম্পানির শিল্পীরা। অদিতি বলেন, বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত উৎসব নিয়ে আমি অনেক উচ্ছ্বসিত। এবার আমি নতুন কিছু ড্যান্স দর্শকদের উপহার দেব। তিনি বলেন, হিউম্যানিটির একটি ছোট অংশ হচ্ছে কত্থক। অন্যান্য নাচের চেয়ে এর মর্যাদা ভিন্ন। এটা মানসিক ও সৃজনশীলতা বাড়ায়। মঞ্চে সরাসরি দর্শকের সামনে নাচ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খুব ভাল লাগে যখন দর্শক সত্যি সত্যি এটা এনজয় করে। সত্যিকথা বলতে কি, দর্শকের সঙ্গে আমিও এনজয় করি। এর আগে সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপমহাদেশের তিন প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পী। এরা হলেন প্রখ্যাত বংশিবাদক রুনু মজুমদার ও রাকেশ চৌরাশিয়া এবং সেতারবাদক পূর্বায়ন চ্যাটার্জী। রুনু মজুমদার বলেন, পৃথিবীর কোথাও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের জন্য এতবড় আসর হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। প্রতিবার যখন এ উৎসবে আসি, মনে হয় আমার পূর্বের ভিটায় ফিরে এসেছি। কারণ ফরিদপুর আমার পূর্ব পুরুষের বসবাস। বংশিবাদক রাকেশ চৌরাশিয়া বলেন, পঞ্চাশ হাজার শ্রোতা-দর্শক বিনিদ্ররজনী উপভোগ করে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত, সত্যি এটা অবাক করার মতো ঘটনা। সেতার বাদক পূর্বায়ন চ্যাটার্জী বলেন, সূফি, জাজ বা ফোক ফ্যাস্টিভ্যাল হতে পারে কিন্তু উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের জন্য এত বড় আসর পৃখিবীতে কোথাও নেই। এ উৎসবের জন্য আমরা প্রতিবছর অপেক্ষা করে থাকি।
×