ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আগামী জুনে ১৫ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হওয়ার আশাবাদ. আমন সংগ্রহ এবার লক্ষ্যমাত্রার;###;চেয়ে বেশি হবে

সোয়া ৯ লাখ মেট্রিক টন॥ খাদ্য মজুদ সন্তোষজনক

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭

সোয়া ৯ লাখ মেট্রিক টন॥ খাদ্য মজুদ সন্তোষজনক

তপন বিশ্বাস ॥ নাজুক পরিস্থিতি কাটিয়ে সরকারের খাদ্য মজুদ এখন সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে মজুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় সোয়া ৯ লাখ মেট্রিক টন। আমন সংগ্রহ এবার লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি হবে। ইতোমধ্যে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত ৫০ হাজার মেট্রিক টন বেশি সংগ্রহের নতুন চুক্তি হয়েছে। আরও ৫০ হাজার বাড়ানো হতে পারে বলে খাদ্য সচিব মোঃ কায়কোবাদ হোসেন জনকণ্ঠকে বলেছেন। জানুয়ারিতে মজুদ খাদ্যের পরিমাণ ১০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে এবং জুনে ১৫ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। পাশাপাশি বেসরকারী পর্যায়ে আমদানিকৃত ৭ লাখ ২৯ হাজার মেট্রিক টন চাল বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। সূত্র জানায়, ২৪ ডিসেম্বর খাদ্য অধিদফতরের তথ্যমতে সরকারের হাতে মজুদ খাদ্যের পরিমাণ ৯ লাখ ২২ হাজার ৮২৫ মেট্রিক টন। এর মধ্যে গুদামে রয়েছে ৭ লাখ ৮৫৫ মেট্রিক টন। বাকি ২ লাখ ২১ হাজার ৯৭০ মেট্রিক টন বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। গুদামজাতের মধ্যে চালের পরিমাণ ৪ লাখ ২৯ হাজার ১১৬ মেট্রিক টন এবং ২ লাখ ৭১ হাজার ৭৩৯ মেট্রিক টন গম রয়েছে। এছাড়া ডাব্লিউ. টি. সি-এর ২৪ ডিসেম্বরের প্রতিবেদন অনুযায়ী বেসরকারী খাতে আমদানিকৃত ৭ লাখ ২৯ হাজার ৭৬৬ মেট্রিক টন চাল চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। খাদ্য অধিদফতরের তথ্যমতে চলতি অর্থবছরে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারী বিতরণ মোট ৬ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন। খাদ্য সচিব বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী সরকারের মজুদ ৮ লাখ মেট্রিক টন থাকতে হবে। এই পরিমাণ খাদ্য মজুদ থাকলে তা সন্তোষজনক বলে ধরা হয়। বর্তমানে মজুদের পরিমাণ প্রায় সোয়া ৯ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। তিনি বলেন, জানুয়ারিতে মজুদের পরিমাণ ১০ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে। আশাকরি জুনের মধ্যে মজুদ ১৫ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হবে। অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে আমন সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা কতটুকু অর্জিত হবে এমন প্রশ্নের জবাবে খাদ্য সচিব বলেন, সংগ্রহ এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এবার আমন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩ লাখ মেট্রিক টন। তিনি বলেন, আশাকরি এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আমন সংগ্রহ হবে। ইতোমধ্যে কোথাও কোথাও নতুন করে আরও আমন সংগ্রহের চুক্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে রংপুরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের জন্য নতুন করে চুক্তি করা হয়েছে। ফলন ভাল হওয়ায় সেখানে নতুন করে আরও চুক্তি হতে পারে। রংপুর, রাজশাহী ও বরিশাল জেলায় মোট ৫০ হাজার মেট্রিক টন আমন অতিরিক্ত সংগ্রহের জন্য নতুন করে চুক্তি করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় আরও ৫০ হাজার মেট্রিক টন সংগ্রহের চুক্তি হতে পারে। তিনি বলেন, দেশের সব জেলায় ফলন সমান হয়না। যে জেলায় ফলন ভাল হয়নি, সেখানে সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নাও হতে পারে। তাই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলে তা ভাল ফলন হয়েছে এমন জেলা থেকে সংগ্রহ করা হবে। এবার আমন মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে মোট ৩ লাখ মেট্রিক টন আমন চাল কেনার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী ৩৯ টাকা দরে এ চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। ৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে সংগ্রহ অভিযান চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি-২০১৮ পর্যন্ত। এবার প্রতি কেজি আমন চাল উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৩৭ টাকা। গত বছর ৩৩ টাকা দরে ৩ লাখ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করে সরকার। ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে সংগ্রহ অভিযান ১৫ মার্চ ২০১৭ পর্যন্ত চলে। প্রতি কেজি চাল উৎপাদনে খরচ পড়ে ২৯ টাকা। সূত্র জানায়, ৩ ডিসেম্বরে শুরু হয়ে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে আমন চাল এ পর্যন্ত ৮৩ হাজার মেট্রিক টন সংগ্রহ করা হয়েছে। সরকারী তথ্যমতে ঢাকার বাজারে খাদ্যশস্যের বর্তমান খুচরা বাজার মূল্য সরু চাল ৫৭ থেকে ৬৮ টাকা। মাঝারি চাল ৪৬ থেকে ৫৬ টাকা। মোটা চাল ৪৩ থেকে ৪৫ টাকা। আর খোলা আটার মূল্য ২৮ থেকে ৩০ টাকা।
×