ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফিরে দেখা ২০১৭ ॥ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, প্রকৃতির রোষে বিশ্ব

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭

ফিরে দেখা ২০১৭ ॥ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, প্রকৃতির রোষে বিশ্ব

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ২০১৭ সালে একের পর এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা ঘটেছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। দাবানল থেকে ভূমিকম্প, বৃষ্টিপাত থেকে বন্য ভয়াবহ ভূমিধস আর একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ের তা-বে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ল-ভ- হয়ে গেছে। দাবানল গ্রাস করেছে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়াকে। ফ্লোরিডা, টেক্সাস ও ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের একাংশ কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড়ের তা-বে। মেক্সিকো কেঁপে উঠেছে ভূমিকম্পে। বন্যায় প্লাবিত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার সুবিশাল এলাকা। ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে সিয়েরা লিওন ধ্বংসস্তূপে পরিণত। বিজ্ঞানীদের মতে, উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ায় এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভয়াবহ আকার নিয়েছে। ব্রিটিশ আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে এ বছর প্রতি ডিগ্রী তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সার্বিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে অন্তত দুই থেকে তিন শতাংশ। অতি বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে ছয় থেকে সাত শতাংশ। খবর ওয়েবসাইটের। হারিকেন : আগস্টের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথম দিক পর্যন্ত সময়ে হার্ভের দাপটে ভেসে গিয়েছিল পুরো হিউস্টন। প্রাণহানি হয় ৭৭ জনের। হারিকেন ইরমার আঘাতে ফ্লোরিডা ও উত্তর ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ সেপ্টেম্বরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিরাপত্তার কারণে শুধু ফ্লোরিডা থেকে ৬০ লাখ লোককে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়। ইরমা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ, বারবুডা, এ্যান্টিকা ও কিউবাকেও ল-ভ- করে দেয়। ডিসেম্বরে হারিকেন মারিয়া ল-ভ- করে দিয়েছে পুয়ের্তো রিকোকে। ক্যাটাগরি পাঁচ মাত্রার এই হারিকেনের গতি ছিল ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার। ৬৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। দাবানল : অক্টোবরে ভয়ঙ্কর দাবানল ছড়িয়ে পড়ে ক্যালিফোর্নিয়ায়। এতে মার যায় ৪৩ জন। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সোনোমা, মেন্ডোসিনো, ইউবা ও নাপা কাউন্টি। এর আগে এত বড় দাবানল আর কখনও হয়নি। বৃষ্টিপাত : অক্টোবরে প্রবল বর্ষণে জিম্বাবুইয়েতে ২৫০ জনে মৃত্যু হয়। মে মাসের শেষে অতিবৃষ্টিতে শ্রীলঙ্কায় মৃত্যু হয় ২১৩ জনের। চার লাখ ৫০ হাজারের মতো লোক ক্ষতিগ্রস্ত হন। প্রবল বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসে কঙ্গোয় মৃত্যু হয় ১৭৪ জনের। সিয়েরা লিওনে ছয় শ’ লোক প্রাণ হারায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৬ হাজারেরও বেশি। ভূমিকম্প : এ বছর তিনটি ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মেক্সিকো। মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধান হওয়ায় ভূমিকম্পগুলোর মতো এত তীব্রতা গত একশ’ বছরেও হয়নি। সেপ্টেম্বরের প্রথমে হওয়া ভূকম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৮ দশমিক এক। মারা যায় ৫০ জন। মেক্সিকো-গুয়েতেমালা সীমান্তের কাছে এর উৎপত্তিস্থল ছিল। দেড় সপ্তাহের ব্যবধানে আবার ৭ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে তিনশ’র বেশি লোক মারা যায়। চারদিন পর ৬ দশমিক এক মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে পুরো মেক্সিকো। বন্যা : চীনে জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রবল বন্যায় ১৫০ জন প্রাণ হারায়। এপ্রিল মাসের ধসে কলম্বিয়ায় প্রাণ হারায় তিনশ’র বেশি লোক। বছররের প্রথম দিকে পেরুতে বন্যায় ১৫০ জন মারা যান। পানিবন্দী হন দশ লাখেরও বেশি মানুষ। আগস্টে দক্ষিণ এশিয়ার বন্যায় এক হাজার দুই শ’ লোক প্রাণ হারায়। পানিবন্দী হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন চার কোটিরও বেশি মানুষ। তুষার ধস : ফেব্রুয়ারিতে তুষার ধসে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ১৫৬ জন প্রাণ হারান।
×