ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘পিয়ংইয়ংয়ের সমরাস্ত্র পরীক্ষা কার্যক্রমে আরেকটি বড় পদক্ষেপ’

স্যাটেলাইট পাঠাচ্ছে উ. কোরিয়া

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭

স্যাটেলাইট পাঠাচ্ছে উ. কোরিয়া

দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সংবাদপত্র মঙ্গলবার জানিয়েছে , উত্তর কোরিয়া কক্ষপথে আরেকটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এ প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা এই মর্মে সতর্ক করেছেন, পরমাণু অস্ত্রসজ্জিত পিয়ংইয়ং-এর এই মহাশূন্য কার্যক্রম দেশটির সমরাস্ত্র পরীক্ষা কার্যক্রমে আরেকটি বড় ধরনের পদক্ষেপ। খবর এএফপির। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কার্যক্রম ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জন্য দেশটির ওপর আগে থেকেই জাতিসংঘ নানাবিধ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে। এছাড়াও দেশটির ওপর স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণসহ ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রযুক্তি ব্যবহার সংক্রান্ত সব ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার ওপর নিষেধাজ্ঞা বজায় রয়েছে। তা সত্ত্বেও স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করে পিয়ংইয়ং-এর দলীয় সংবাদপত্র রোডং সিনমুন বলেছে, মহাশূন্য প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধন ও স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ তার দেশের অধিকার। পিয়ংইয়ং-এর আগেও গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কাওয়াং মিয়ংসং ৪ নামে একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছিল। তবে আন্তর্জাতিক মহলের অনেকেই মনে করেন, আসলে সেটি ছিল পিয়ংইয়ং-এর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের গোপন পরীক্ষা। একনায়কতান্ত্রিক দেশ উত্তর কোরিয়ার অভ্যন্তরস্থ কোন তৎপরতাই সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়না। অনেক সময়ই অনুমান বা উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যে কোন ধরনের অস্বাভাবিক তৎপরতা অথবা স্বপক্ষত্যাগী সৈন্য বা পর্যটকের মাধ্যমে প্রাপ্ত ভাসা ভাসা তথ্যচিত্রের মাধ্যমে অনেক খবরের কাঠামো গড়ে তোলা হয়। এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চীফ অব স্টাফের একজন মুখপাত্র বলেন, বর্তমান (উত্তেজনাকর) পরিস্থিতিতে কোন কিছুই সাধারণ ঘটনা বলে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের আড়ালে উত্তর কোরিয়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাসহ অন্য কোন উস্কানিমূলক তৎপরতা চালায় কি না সেদিকে সিউল সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। গত সোমবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদপত্রের এক সম্পাদকীয় মন্তব্য প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ‘শান্তিপূর্ণ মহাকাশ কর্মসূচী একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের ন্যায়সঙ্গত অধিকার এবং পিয়ংইয়ং এর স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ সম্পূর্ণভাবে আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’ গত অক্টোবরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বক্তৃতাকালে উত্তর কোরিয়ার উপ-রাষ্ট্রদূত কিম ইন রিয়ং বলেন, তার দেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে স্বীয় নাগরিকদের জীবনমানের উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে স্যাটেলাইট কর্মসূচীর বাস্তব উৎকর্ষ সাধনের দিকে মনোনিবেশ করেছে। একই সঙ্গে তিনি দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার জন্য উত্তর কোরিয়া তার স্যাটেলাইট নির্মাণ ও উৎক্ষেপণের অধিকার ছেড়ে দেবে না। বেশ কয়েক বছরের ক্রমাগত ব্যর্থতার পর উত্তর কোরিয়া ২০১২ সালে সফলভাবে কক্ষপথে কাওয়াংমিয়ং সং ১ নামে একটি স্যাটেলাইট পাঠাতে সক্ষম হয়। এটি ছিল সম্পূর্ণভাবে পরীক্ষামূলক। চলতি মাসের শুরুতে রোশিয়াস্কায়া গেজেটা নামে রাশিয়ার এক সংবাদপত্রে সমর বিশেষজ্ঞ ভ্লাদিমির খ্রুস্তালেভ এই তথ্য প্রকাশ করেন যে, অদূর ভবিষ্যতে উত্তর কোরিয়া দু’টি স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠাবে- এর একটি ভূ-মন্ডল গবেষণা কাজে এবং অপরটি যোগাযোগ কার্যক্রমে ব্যাপৃত থাকবে। খ্রুস্তালেভের উল্লেখিত তথ্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে হচ্ছে এই কারণে যে, গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে তার সপ্তাহব্যাপী উত্তর কোরিয়া সফরকালে তিনি সে দেশের ন্যাশনাল এরোস্পেস ডেভেলপমেন্ট এ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি আলোচনা বৈঠকে মিলিত হন।
×