ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ

তুরস্কে আরও দুই হাজার আট শ’ শিক্ষক-কর্মচারী বরখাস্ত

প্রকাশিত: ০৭:১৯, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭

তুরস্কে আরও দুই হাজার আট শ’ শিক্ষক-কর্মচারী বরখাস্ত

তুরস্কে সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত এই অজুহাতে শিক্ষক ও মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীসহ সরকারী প্রতিষ্ঠানের ২৭৫৬ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ইয়াহু নিউজ। রবিবার সরকারী গেজেটে প্রকাশিত এক ডিক্রিতে বলা হয়েছে, চাকরিচ্যুত কর্মীরা জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে কাজ করে এমন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, সংস্থা, বা প্রতিষ্ঠানের সদস্য বা তাদের সঙ্গে কোননা কোনভাবে জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়ার পরই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গত বছরের জুলাইয়ে তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে প্রায় ৫০ হাজার লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং সেনা, পুলিশ, শিক্ষক, বিচারপতি ও সরকারী কর্মচারীসহ প্রায় দেড়লাখ মানুষকে তাদের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তুরস্ক সরকার যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনকে গত বছরের ওই ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পেছনের নায়ক হিসেবে দায়ী করে। ১৯৯৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসেলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের সেইলর্সবার্গে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা গুলেন তার বিরুদ্ধে আনা তুরস্ক সরকারের এ অভিযোগ অস্বীকার করে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানান। তবে রাইটস গ্রুপসহ কিছু পশ্চিমা মিত্রের মতে তুরস্কে চলমান দমন-পীড়ন চালিয়ে নিজের ক্ষমতা একছত্র করার জন্য ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানকে একটা অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টাকালে তুরস্কে প্রায় আড়াই শ’ সামরিক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়। এ সময় অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান প্রেসিডেন্ট এরদোগান। ১৯৪১ সালের ২৭ এপ্রিলে জন্ম নেয়া গুলেন একজন সাবেক ইমাম এবং লেখক। তিনি গুলেন আন্দোলনের জনক। তুরস্কে এই আন্দোলন হিজমেত বা জনসেবা আন্দোলন নামে পরিচিত। তিনি বিজ্ঞান, আন্তঃধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে বিতর্ক ও বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলে দাবি করেন। ২০১৩ সালের আগ পর্যন্ত তিনি প্রেসিডেন্ট এরদোগানের মিত্র ছিলেন। কিন্তু ওই বছর তুরস্ক সরকারের সমর্থকদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের সূত্র ধরে তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। গুলেনপন্থি স্কুল ও হিজমেত আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ করার এরদোগানের প্রচেষ্টার প্রতিশোধ হিসেবে ওই দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয় বলে মনে করে একে পার্টি। বর্তমানে তুরস্কের ফেরারি শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকায় গুলেনের নাম আছে। তুর্কী কর্মকর্তারা তাকে গুলেনপন্থি সন্ত্রাসী সংস্থার নেতা বলে অভিহিত করে। তুরস্কের একটি ফৌজদারি আদালত গুলেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে। তুরস্ক গুলেনকে ফেরত পাঠানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দাবি জানিয়েছে।
×