ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বছরজুড়েই ছিল নাদাল-ফেদেরারের ঝলক

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭

বছরজুড়েই ছিল নাদাল-ফেদেরারের ঝলক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টেনিসের জীবন্ত দুই কিংবদন্তি। একজন রাফায়েল নাদাল আর অন্যজন রজার ফেদেরার। অসামান্য সব কীর্তি গড়ে দুজনেই নিজেদের নিয়ে গেছেন ইতিহাসের সোনালি পাতায়। কিন্তু গত দুই-তিনটি বছর যেন টেনিস থেকেই হারিয়ে যান তারা। চোট আর ফর্মহীনতার কারণে অনেকেই শেষ দেখে ফেলেছিলেন তাদের। তবে জাত চ্যাম্পিয়ন বলে কথা! ২০১৭ সালে দুর্দান্তভাবেই প্রত্যাবর্তন ঘটে নাদাল ও ফেদেরারের। ক্যারিয়ারের গোধূলিবেলায় এসে জ্বলে ওঠেন তারা। এ বছরের চার গ্র্যান্ডস্লামের সবই ভাগাভাগি করে নেন দীর্ঘদিনের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। চিরসবুজ ফেদেরার আগামী বছরেই ৩৭ বছরে পা রাখতে চলেছেন। বছরের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেনেই বাজিমাত করেন তিনি। গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের সংখ্যাটাকে নিয়ে যান রেকর্ড ১৯-এ। স্প্যানিশ সুপারস্টার নাদালের বিপক্ষে পাঁচ সেটের লড়াই শেষে উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভাসেন ফেড এক্সপ্রেস। এছাড়া মারিন সিলিচকে পরাজিত করে নিজের অন্যতম ফেবারিট গ্র্যান্ডস্লাম উইম্বলডনে জিতেন রকর্ড অষ্টম শিরোপা। অন্যদিকে আগামী বছর জুনে ৩২ বছরে পা রাখতে যাওয়া নাদাল জয় করেছেন ক্যারিয়ারের দশম ফ্রেঞ্চ ওপেন ও তৃতীয় ইউএস ওপেন শিরোপা। সেইসঙ্গে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটাও পুনরুদ্ধার করেন এই স্প্যানিয়ার্ড। ফেদেরার বছর শেষ করেছেন র‌্যাঙ্কিংয়ের দুই নাম্বারে থেকে। অথচ শুরুটা করেছিলেন ১৬ নম্বরে থেকে। পুরো ক্লে-কোর্ট মৌসুমে বিশ্রামে থেকে দু’টি গ্র্যান্ডস্লাম ছাড়াও ইন্ডিয়ান ওয়েলস, মিয়ামি ও সাংহাইয়ে তিনটি মাস্টার্স শিরোপাসহ জিতেছেন সর্বমোট সাতটি শিরোপা। ২০১৬ সালের শেষ ছয় মাস ইনজুরির কারণে কোর্টের বাইরে থাকা ফেদেরার নিজের পারফর্মেন্সে দারুণ তৃপ্ত। তিনি বলেন, ‘এটা আমার জন্য অসাধারণ একটি বছর ছিল।’ রোলা গ্যাঁরো ও ফ্ল্যাশিং মিডোতে দু’টি গ্র্যান্ডস্লাম ছাড়াও মন্টে কার্লো ও মাদ্রিদে দু’টি মাস্টার্স শিরোপা জয় করা নাদাল বছর শেষ করেছেন ৬টি শিরোপা নিয়ে। ১৬টি গ্র্যান্ডস্লাম জয়ী নাদাল চতুর্থবারের মতো র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থেকে নতুন বছরে পা রাখতে যাচ্ছেন। এ বছরের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব না কষে নাদাল সোজাসাপ্টা বলেন, ‘আবারও মৌসুমের শেষে শীর্ষস্থানে থাকতে পারাটা আমি চিন্তাই করিনি। মৌসুমের শুরুতে এই লক্ষ্য আমার মোটেই ছিল না। ক্যারিয়ারে দারুণ একটি কঠিন সময় কাটানোর পরেও ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করতে করতে আমি এই আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম।’ নতুন মৌসুমে নাদাল তার ছোটবেলার কোচ টনিকে ছাড়াই কোর্টে নামতে যাচ্ছেন। কিন্তু ক্যারিয়ারের জন্য হুমকি সেই হাঁটুর ইনজুরি এখনো তার পিছু ছাড়েনি। বছরের শেষ টুর্নামেন্ট ওয়ার্ল্ড ট্যুর ফাইনালে প্রথম রাউন্ডের পরেই এই ইনজুরির কারণে নাদাল তার নাম প্রত্যাহার করে নেন। তাছাড়া ২৮ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিতব্য প্রীতি টুর্নামেন্টেও খেলা হচ্ছে না তার। আগামী সপ্তাহে ব্রিসবেন টুর্নামেন্টের মাধ্যমে নতুন বছর শুরু করাই এখন নাদালের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। ১৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বছরের প্রথম গ্র্যান্ডস্ল্যাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের আগে ব্রিসবেনের প্রস্তুতিটাকে সব খেলোয়াড়ই বেশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে থাকেন। তবে ইনজুরি নাদালকে শেষ পর্যন্ত কোথায় নিয়ে যায় সেটাই এখন বড় দুশ্চিন্তার বিষয়। যদিও এই ইনজুরি শঙ্কায় শুধুমাত্র নাদালই নয়, রয়েছেন বিশ্বের সাবেক শীর্ষ তারকা এ্যান্ডি মারে, সুইজারল্যান্ডের স্ট্যানিস্লাস ওয়ারিঙ্কাও। উইম্বলডনের পর থেকে সুইস তারকা ওয়ারিঙ্কা কোর্টের বাইরে রয়েছেন। তার হাঁটুতে দুইবার অস্ত্রোপচার হয়েছে। অন্যদিকে কোমরের ইনজুরিতে ভুগছেন মারে। অস্ট্রেলিয়া সফরে তাই মারের যাওয়া এখনও অনিশ্চিত। নাদালের মতোই ওয়ারিঙ্কাও আরব আমিরাতের টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তবে স্বস্তির বিষয় হচ্ছে কব্জির ইনজুরি কাটিয়ে উইম্বলডনের পরে দীর্ঘদিন বিশ্রামে থাকা নোভাক জোকোভিচ খেলবেন আবুধাবীতে। বর্তমানে জোকোভিচ র‌্যাঙ্কিংয়ের ১২ নাম্বারে রয়েছেন, মারে ১৬তম ও ওয়ারিঙ্কা রয়েছেন নয়ে। তারকাদের পাশাপাশি নতুন কিছু প্রতিভা নিয়েও ২০১৮ সালে ভাবতে হচ্ছে টেনিস বিশ্বকে। এর মধ্যে অন্যতম ২০১৭ সালে পাঁচটি শিরোপা জয় করা আলেক্সান্দার জেভরেভ। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রথম রাউন্ডে বিদায়ের পর উইম্বলডনে খেলছেন শেষ ১৬ পর্যন্ত। এরপর প্যারিসে নাদালের কাছে তৃতীয় রাউন্ডে বিদায়ের পরে নিউ ইয়র্কে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই ছিটকে যান তিনি।
×