ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এ পর্যন্ত ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে

দরজায় কড়া নাড়ছে বাণিজ্যমেলা

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭

দরজায় কড়া নাড়ছে বাণিজ্যমেলা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দরজায় কড়া নাড়ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। সময় বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। তবে কাজ এখনও ঢের বাকি। তাই শেষ সময়ে প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে চলছে তোড়জোড়। কাজ চলছে দিন রাত। প্রতিবারের মতো এবারও রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে খোলা মাঠে বসছে মেলা। এবারও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) মেলার দায়িত্ব পালন করছে। বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, মেলার অবকাঠামোগত কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন চলছে ফোয়ারা তৈরি ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ। তবে এখনও মূল ফটক নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি। জানা যায়, এ মাসের ২৮ তারিখের মধ্যেই কাজ শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ হওয়া নিয়ে ঠিকাদারদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। যদিও শেষ সময়ে সাজসজ্জার কাজে দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছে নির্মাণ শ্রমিকরা। স্টল বরাদ্দের ক্ষেত্রে তরুণ আর নারী উদ্যোক্তাদের দেয়া হয়েছে প্রাধান্য। মেলায় পাঁচ স্তরের নিরাপত্তার পাশাপাশি থাকছে শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা। সেই সঙ্গে এবারই প্রথম নির্ধারণ করে দেয়া হবে মেলায় খাদ্যপণ্যের দাম। হাতুড়ি-বাটাল আর ইট সুড়কি দিয়ে কাজের এই শব্দই বলে দেয় বিশাল আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। মনোমুগ্ধকর ডেকোরেশন, আর নিখুঁত কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার নির্মাণ শ্রমিকরা। বলছি, ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার প্রস্তুতির খবর, দেয়া হচ্ছে রং-তুলির শেষ প্রলেপ। ২৭ দেশের অংশ গ্রহণে এবারের মেলায় সাজানো হচ্ছে দেশী-বিদেশী ৫৪০টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন দিয়ে। সেই সঙ্গে থাকছে শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থাসহ নানা আয়োজন। ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ করার নির্দেশ দিলেও সরজমিনে দেখা যায় কাজ হয়েছে ৮০ ভাগ। তবে নির্ধারিত সময়েই শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ঠিকাদাররা। মেলার ভেতরে স্টল বরাদ্দ পাওয়াদের দম ফেলার সময় নেই। সবাই ব্যস্ত নিজেদের স্টল সাজাতে। মেলার চারদিকে শুধু খটখট আর টুংটাং শব্দ। এ শব্দে মেলার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির চিত্র ফুটে ওঠে। মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, সামনের রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। আশপাশের ভাঙ্গা রাস্তাগুলো ঠিক করার চেষ্টা চলছে। মেলায় গাড়ি রাখার স্থান, মেলা পরিচালনা অফিস, বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রের গেট থেকে মেলার মূল গেটে যাওয়ার রাস্তাসহ অন্যান্য কাজও শেষ পর্যায়ে। এখন চলছে টিকিট কাউন্টার ও মূল ফটকের নির্মাণ কাজ। জানতে চাইলে মেলা আয়োজক কমিটির সচিব আবু হেনা মুর্শেদ জামান বলেন, সব ধরনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। এখন প্যাভিলিয়ন নির্মাণ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ চলছে। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যেই শতভাগ কাজ শেষ হবে। মেলা ১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন বলে জানান তিনি। দেখা যায়, মেলায় বড় প্যাভিলিয়ন থেকে শুরু করে ছোট স্টল, ফোয়ারা, রাস্তাসহ সব ধরনের অবকাঠামো নির্মাণেও বেশ অগ্রগতি হয়েছে। মেলার এ নির্মাণ কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে শ্রমিকদের যেন দম ফেলার সময় নেই। আর তাদের খাবার ও নাস্তা-পানির যোগান দিতে মেলা প্রাঙ্গণে আশপাশে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি ছোট খাবার দোকান। কিছু সময় কাটানোর জন্য কয়েকটি চায়ের দোকানও গড়ে উঠেছে। ইপিবির সূত্র জানিয়েছে, আসন্ন বাণিজ্য মেলায় জায়গা পেতে এবার ১৩০০ আবেদন জমা পড়ে। এ আবেদনের বিপরীতে লটারি ও টেন্ডারের মাধ্যমে মাত্র ৫১৪ স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, এবারে মেলা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। মেলায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ২৬টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিদেশী উদ্যোক্তাদের জন্য রাখা হয়েছে প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ১৮টি, মিনি প্যাভিলিয়ন আটটি এবং প্যাভিলিয়ন ২৭টি। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এবারে মেলা নতুন আঙ্গিকে সাজানোর পরিকল্পনা অনুযায়ী নকশায় ভিন্নতার পাশাপাশি নান্দনিক গেট, ডিজিটাল লে-আউট প্ল্যান করা হবে। এবারে মেলার সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে প্রধান ফটক। গত কয়েক বছর ধরে কার্জন হলের আদলে তৈরি হয়েছিল মেলার প্রধান ফটক। এবার তা পরিবর্তন করে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের চিত্র তুলে ধরা হবে। সে ক্ষেত্রে এবারের ফটক ঢাকা গেটের আদলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলা হবে। এ ছাড়া মেলার মধ্যে ডিজিটাল টাচ স্কিন থাকবে। এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্টল ও প্যাভিলিয়ন চেনা যাবে। এবারের মেলার ব্যতিক্রমী আয়োজন বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নকে আরও তথ্যবহুল করা হবে। এজন্য প্যাভিলিয়নের আয়তন বাড়ানো হয়েছে। মেলায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও পাখির পরিচিতির জন্য আলাদা আয়োজন থাকবে। মেলায় গতবছর সুন্দরবনের আদলে কোন পার্ক ছিল না। এবার সুন্দরবন পার্ক করা হবে। মেলায় এবার মঞ্চ থাকবে। যেখানে প্রতি সপ্তাহে দুদিন লোকজ ঐতিহ্য ধারণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন হবে।
×