এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ ডুলাহাজারায় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে অবমুক্ত করা হরিণ শাবক সুস্থ হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে। প্রাণ বাঁচাতে বিপন্ন প্রাণী পাহাড় থেকে ঝাঁপ দিয়ে চলে এসেছিল সমুদ্র সৈকতে। কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের প্রাণবৈচিত্র সমৃদ্ধ হিমছড়ি বনাঞ্চলে শিকারী ও রোহিঙ্গাদের উৎপাতে প্রাণীকূল বিপন্ন হয়ে পড়েছে। সর্বশেষ রবিবার সকালে আহত এক হরিণ শাবককে দরিয়ানগর এলাকার সমুদ্র সৈকত থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে অবমুক্ত করা হয়েছে।
জানা যায়, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের হিমছড়ির শতাধিক ফিট উঁচু খাড়া পাহাড় থেকে মেরিন ড্রাইভে ঝাঁপ দেয় এক বছর বয়সী একটি মাদি হরিণ শাবক। পরে হরিণ শাবকটি সমুদ্র সৈকতে এসে ক্লান্ত হয়ে লুটিয়ে পড়ে। সেখান থেকে বনকর্মীরা স্থানীয়দের সহায়তায় হরিণ শাবকটি উদ্ধার করে প্রাণী চিকিৎসকের (ভেটেরিনারি সার্জন) কাছে নিয়ে যায়। চিকিৎসা শেষে বিকেলে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ কক্সবাজার শহরে এসে হরিণ শাবকটি নিয়ে যায় এবং সেখানে অবমুক্ত করে। হরিণ শাবকটি বনাঞ্চলে তাড়া খেয়ে সমুদ্র সৈকতে চলে এসেছে বলে মনে করেন স্থানীয় পর্যটনকর্মীরা। উদ্ধারের পর শাবকটির শরীরে আঘাতের নানা চিহ্ন দেখা গেছে। সেখান থেকে রক্ত ঝরছিল।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: আলী কবীর জানান, খবর পেয়ে বনকর্মীরা হরিণ শাবকটি উদ্ধার করে প্রাণী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা শেষে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে। এই বনাঞ্চলে অন্তত এক দশক পর হরিণের দেখা মিলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে হিমছড়ি বনাঞ্চলে বনায়ন করে পাহাড়গুলোকে সবুজে আচ্ছাদিত করা হয়েছে। এ কারণে ওই বনাঞ্চল থেকে অতীতে হারিয়ে যাওয়া অনেক পশুপাখি আবারও ফিরে আসছে। এরই মধ্যে অন্যতম হরিণ। গত ছয় মাস আগে এ বনাঞ্চলে হরিণের একাধিক দল বাচ্চা প্রসব করেছে।
স্থানীয়দের মতে, কক্সবাজারের দক্ষিণাঞ্চলের বনাঞ্চল প্রাণবৈচিত্র সমৃদ্ধ হলেও গত দুই বছরে রোহিঙ্গা বসতিসহ নানা কারণে বনাঞ্চল কমে যাওয়ায় এবং শিকারীদের উৎপাতে প্রাণীকূল বিপন্ন হয়ে পড়েছে। প্রাণীরা বনাঞ্চল ছেড়ে প্রায়শ লোকালয়ে চলে আসছে। গত মাসাধিককাল ধরে দরিয়ানগর থেকে মাঙ্গালাপাড়া পর্যন্ত এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই নেমে আসছে হাতি, শুকরসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী।