ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রণ সমস্যায় ঘরোয়া সমাধান

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭

ব্রণ সমস্যায় ঘরোয়া সমাধান

ব্রণ শব্দটির সঙ্গে আমরা কম বেশি সকলেই পরিচিত। এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন যাদের কখনও ব্রণের অভিজ্ঞতা হয়নি। অনেকেই বংশগত অথবা হরমোনজনিত সমস্যাকেই ব্রণের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন। ব্রণ খুব মারাত্মক জটিল সমস্যা না হলেও অত্যাধিক ব্রণ ত্বকের বাহ্যিক সৌন্দর্য অনেকটাই ম্লান করে দেয়। কারও কারও ক্ষেত্রে ব্রণের সমস্যা খুব অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায়। এসব ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া অন্য উপায় নেই। তবে অতিরিক্ত ওষুধ এবং রাসায়নিক ক্রিমের ব্যবহারে ত্বকের অনেক বাহ্যিক ক্ষতি হতে পারে। ফলে ব্রণের সমস্যার সমাধান প্রথমেই ঘর থেকে শুরু হওয়া উচিত। বিভিন্ন ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্রণ কম থাকতেই এর প্রতিকারের চেষ্টা করতে হবে। মুখে সরিষার ব্যবহার ত্বকের যত্নে যে ভেষজ উদ্ভিদ দারুণ কাজ করে, তা হলো সরিষা। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরিষায় রয়েছে স্যালিসাইলিক এসিড। এই এসিড বিভিন্ন সংক্রামক থেকে ত্বককে রক্ষা করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। তাই একটি পাত্রে টেবিল চামচের এক-চতুর্থাংশ সরিষা গুঁড়ো নিয়ে তাতে একই পরিমাণ মধু মিশিয়ে নিতে হবে। মিশ্রণটি ভালভাবে মিশিয়ে মুখে ব্রণের চারপাশে ভালভাবে লাগিয়ে নিতে হবে। এরপর ১৫-২০ মিনিট মিশ্রণটি শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করে হালকা ঠাণ্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। চন্দন কাঠের গুঁড়া ব্রণ নিরাময়ে চন্দন কাঠের গুঁড়া ব্যবহার একটি অনন্য উপায়। তবে বাংলাদেশে আসল চন্দন কাঠ পাওয়া রীতিমতো কষ্টসাধ্য ব্যাপার। ভাল কোন দোকান থেকে চন্দন কাঠ বা এর গুঁড়া সংগ্রহ করে এর সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে এক ধরনের হালকা পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এর সঙ্গে দুই ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নেয়া যেতে পারে। ঘরে যদি গোলাপ জল না থাকে, সেক্ষেত্রে গোলাপজলের পরিবর্তে মধু ব্যবহার করা যেতে পারে। মিশ্রণটি ব্রণের চারপাশে যত্ন সহকারে লাগিয়ে নিতে হবে। কিছু সময় পর মিশ্রণটি শুকনো হয়ে এক ধরনের আবরণ তৈরি করবে এবং মুখের ত্বক কিছুটা টেনে আসবে। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। হালকা ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে নিলেই পুরো মুখে এক ধরনের সতেজ অনুভূতি ফিরে আসবে। রাতে ঘুমানোর আগে মুখে মিশ্রণটি লাগিয়ে নিলে বেশ ভাল উপকার পাওয়া যায়। আপেল ও মধুর মিশ্রণ অনেক আগে থেকেই প্রাকৃতিক উপায়ে ব্রণ সমস্যার সমাধানে আপেলের রসের ব্যবহার হয়ে আসছে পৃথিবীর সর্বত্র। প্রথমে আপেল ব্লেন্ড করে অথবা অন্য কোনো উপায়ে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এরপর পেস্টের সঙ্গে ৪-৫ ফোঁটা মধু মিশিয়ে নিতে হবে। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। আপেলের রস মুখের বাহ্যিক পুষ্টি প্রদান করতে সক্ষম। ফলে ত্বক হয়ে ওঠে আরও সজীব। সপ্তাহে নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ভাল উপকার পাওয়া সম্ভব, যা কিছুদিনের মধ্যেই চোখে পড়তে বাধ্য। তুলসী পাতার রস সকল রোগের ওষুধ হিসেবে তুলসি গাছের পাতা যেন অনন্য। তুলসি পাতায় রয়েছে হাজার রোগের ভেষজ প্রতিকার। তাই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাতেও এই পাতার ভূমিকা অনস্বীকার্য। ব্রণের চিকিৎসাতেও তুলসি পাতার রস বেশ উপকারী। প্রথমে তুলসি পাতা থেকে রস বের করে নিতে হবে। ব্রণ আক্রান্ত অংশে খুব ভালভাবে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এরপর হালকা কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। তুলসী গাছ পাওয়া খুব সহজসাধ্য ব্যাপার। চাইলে ঘরের বারান্দাতেও লাগিয়ে নিতে পারেন একটি তুলসি গাছ। ডিমের সাদা অংশের ব্যবহার ত্বকের যতেœ ডিমের সাদা অংশ অনেকসময় ভাল কাজ দিতে পারে। ভাল ফল পেতে হলে ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস যুক্ত করে ভালভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর মিশ্রণটি ব্রণের চারপাশে লাগিয়ে সারারাত রেখে দিতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে পরিষ্কার পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। কমলালেবুর খোসা ত্বকের যতেœ ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে কমলালেবুর খোসা এক অসাধারণ ভূমিকা পালন করে। এর জন্য প্রথমে কমলার খোসা রোদে ভালভাবে শুকিয়ে গুঁড়া তৈরি করে নিতে হবে। বাড়িতে মসুর ডাল আর চাল থাকলে সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন তা পিষে অথবা ব্লেন্ড করে নিতে হবে। কমলালেবুর খোসার গুঁড়ো, ডাল ও চালের মিশ্রণের সঙ্গে ভালভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এই পেস্টের সঙ্গে চাইলে মধু, চন্দনের গুঁড়া, কাঁচা হলুদ বা দুধের ব্যবহার করা যেতে পারে। এই মিশ্রণটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে অধিকাংশ সময় ব্রণ একেবারে অদৃশ্য হয়ে যায় এবং ব্রণের দাগও ধীরে ধীরে মুছে যাবে। রসুনের পেস্ট ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে রসুন কতটা উপকারী তা কমবেশি আমরা সকলেই জানি। রসুনে আছে এ্যান্টিসেপটিক ও এ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ব্রণ দূর করতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। রসুন দেহের ভেতরে এবং বাইরে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধে বেশ উপকারী।
×