ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় সাবেক স্বামীর নির্যাতনে বাড়িছাড়া দুই সন্তানের জননী

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭

নওগাঁয় সাবেক স্বামীর নির্যাতনে বাড়িছাড়া দুই সন্তানের জননী

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ২৪ ডিসেম্বর ॥ নওগাঁ সদর উপজেলার চকরামচন্দ্র মধ্যপাড়া গ্রামের তালাকপ্রাপ্ত পাষ- স্বামীর অমানুষিক নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ রশিদা বেগম (৩৮) বিচারের আশায় এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। থানায় অভিযোগ করেও কোন ফল পাননি। উল্টো তালাক দেয়া স্বামী মোকছেদ আলী (৪৫) ও তার লোকজনের অব্যাহত হুমকিধমকির মুখে গৃহবধূ নিজের বসতবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন বোনের বাসায়। রবিবার দুপুরে জেলা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে তার করুণ কাহিনী বর্ণনা করতে গিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন তিনি। চকরামচন্দ্র মধ্যপাড়া গ্রামের অছিম উদ্দিনের মেয়ে রশিদা বেগম জানান, প্রাপ্ত বয়স্ক না হলেও প্রায় ২২ বছর আগে একই গ্রামের মৃত জালাল সরদারের ছেলে মোকছেদ আলীর সঙ্গে বাবা-মা তাকে বিয়ে দেয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই মোকছেদ আমার ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। এই অবস্থায় আমাদের এক ছেলে ও দুই মেয়ের জন্ম হয়। তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে শত নির্যাতন সহ্য করে স্বামীর সংসার করে আসছিলাম। পরে নির্যাতনের হাত থেকে আমাকে রক্ষায় আমার পিতা আমাদের দুই জনের নামে ৩ শতক জমি লিখে দিয়ে সেখানে বাড়ি তৈরি করে দেন। ওই বাড়িতে বসবাস করার সময় মোকছেদ আলী আমার নামে পিতার লিখে দেয়া জমি তার নিজের নামে লিখে দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। ওই সম্পত্তি লিখে না দেয়ার কথা বলার পর থেকে আমার ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে তার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এক বছর আগে মোকছেদকে তালাক করি। এতে মোকছেদ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। গত ২৯ নবেম্বর বিকেল ৫টার দিকে মোকছেদ ও তার লোকজন আমার বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে আমার দুই হাত ভেঙ্গে ফেলে। আমার সারা শরীরে ফোলা জখম করে। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে গ্রামবাসী আমাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। দুইদিন পর জ্ঞান ফিরে পাই। এর কিছুদিন পর গত ৯ ডিসেম্বর মোকছেদ আলীকে আসামি করে থানায় লিখিত একটি অভিযোগ করি। কিন্তু থানা পুলিশ এখন পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করেনি। উল্টো মোকছেদ ও তার লোকজন আমাকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছে। নিরুপায় হয়ে আমি আমার বোনের বাসায় আশ্রয় নিয়েছি। এ ব্যাপারে মোকছেদের সঙ্গে কথা হলে তিনি দম্ভভরে বলেন, রশিদাকে মেরেছি। পারলে আরও মারব। আপনারা যা করার করেন। আমার কিছুই হবে না।
×