ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চাকরিপ্রার্থীরা শঙ্কিত

রেলের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলে সিন্ডিকেট তৎপর

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭

রেলের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলে সিন্ডিকেট তৎপর

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ রেলের পূর্বাঞ্চলে নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে চক্রান্ত শুরু করেছে একটি চক্রের কয়েক সদস্য। অভিযোগ রয়েছে এসব চক্রের সদস্যরা তাদের প্রার্থী নিয়োগে নিশ্চিত করতে না পারায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি চাউর করেছে। এছাড়াও নিয়োগ কমিটিকে ম্যানেজ করতে না পারায় নানা চক্রান্ত শুরু করেছে সিন্ডিকেট সদস্যরা। গত ১৫ ডিসেম্বর শেষ হওয়া অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদের নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ পাওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষার্থীদের দাবি প্রশ্নপত্র নিয়ে চক্রান্ত সৃষ্টি করে লিখিত পরীক্ষার ফল স্থগিত করার চেষ্টা করছে চক্রটি। অভিযোগ রয়েছে, কোন ধরনের প্রশ্নপত্র ফাঁসের তথ্য আগেভাগে প্রকাশের কোন নজির নেই। এমনকি সোস্যাল মিডিয়ায়ও পরীক্ষা শুরুর আগে কোন ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি এমন অভিযোগ রেল কর্তৃপক্ষের। তবে পরীক্ষা শুরুর পর চট্টগ্রামের ডাঃ খাস্তগীর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোবাইলে এমএমএস ও মেসেঞ্জারে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তর দেখা নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ দুই পরীক্ষার্থীসহ আরেক অভিভাবককে আটক করলেও পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। অথচ দীর্ঘ এক বছর পর ইস্যু করা প্রবেশ পত্রের বিপরীতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও এখন আবার চক্রান্তের কারণে আবারও রেলের এই পদের নিয়োগ পিছিয়ে পড়ে কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন চাকরি প্রার্থীরা। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানা সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ডাঃ খাস্তগীর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে মোবাইলের মাধ্যমে এমএমএস ও মেসেঞ্জারে প্রশ্নপত্র প্রেরণ ও উত্তর সংগ্রহের ঘটনায় দুই পরীক্ষার্থীসহ মোট তিন জনকে আটক করেছিল পুলিশ। কারণ এ দুই পরীক্ষার্থী একে অপরের বিরুদ্ধে মোবাইলে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তর প্রদানের অভিযোগ করেন শ্রেণী পরিদর্শকের কাছে। এমনকি কেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে বাকবিত-ায় জড়ানোর পাশাপাশি হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোন অভিযোগ উত্থাপন না করায় তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। এদিকে রেলের পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা কোটা থেকে শুরু করে পোষ্য কোটা এমনকি সাধারণ কোটায়ও অনেক পরীক্ষার্থী সরকারী চাকরিতে আবেদনের যোগ্যতা হারাতে বসেছে। অতিরিক্ত আবেদনের কারণে যাচাই-বাছাই ও ইন্টারভিউ কার্ড ইস্যুতে পার হয়েছে দীর্ঘ এক বছর। এরপর মৌখিক পরীক্ষা নেয়া ও অফার লেটার ইস্যুসহ নিয়োগ পেতে সময় লাগবে আরও প্রায় এক বছর। এতে শূন্য পদগুলো নিয়ে বেকায়দায় আছে রেলের বিভিন্ন দফতর। এক্ষেত্রে চাকরি প্রার্থীদের বয়স বিবেচনায় এনে নিয়োগ কমিটি মিথ্যা গুজবে কান না দিয়ে দ্রুত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার আহ্বান জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা। পরীক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে জানা গেছে, ৬৬ শূন্য পদের বিপরীতে গত বছরের ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৩৬ হাজার ৯৫ প্রার্থীর আবেদন পেয়েছে কমিটি। যাচাই বাছাইয়ের পর অসম্পূর্ণতার কারণে ৩৭৪১টি আবেদন বাতিল করা হয়েছে। বাকি ৩২ হাজার ৩৫৪ প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ইন্টারভিউ কার্ড ইস্যু করা হয়। এ ব্যাপারে নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফরিদ আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা সঠিক নিয়মে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীর ২৩টি কেন্দ্রে চাকরি প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা নিয়েছি। এ পরীক্ষায় যারা শতকরা ৫০ ভাগ নম্বর পাবে তাদের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে ডাকা হবে। এর পর ৬৬টি পদের বিপরীতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হবে।
×