ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে তোড়জোড় কিন্তু থামছে না অনুপ্রবেশ

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে তোড়জোড় কিন্তু থামছে না অনুপ্রবেশ

মোয়াজ্জেমুল হক/এইচএম এরশাদ ॥ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে তোড়জোড় চলার মাঝেও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ থামছে না। শনি ও রবিবার দুদিনে টেকনাফ উপকূলের বিভিন্ন পয়েন্টে অনুপ্রবেশ করেছে তিন শতাধিক রোহিঙ্গা নারীপুরুষ ও শিশু। এ নিয়ে গত একসপ্তাহের দেড় হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটল। এদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে নিবন্ধিত করে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে আশ্রয় শিবিরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এদিকে আগামী ২২ জানুয়ারি থেকে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে এমন খবরেও রোহিঙ্গারা কেন এখনও দলে দলে পালিয়ে আসছে মিয়ানমার সরকারের পক্ষে এ নিয়ে কোন ব্যাখ্যা নেই। বরঞ্চ রোহিঙ্গাদের সীমান্ত পেরিয়ে চলে আসার জন্য সে দেশের বিজিপি সদস্যরা বিভিন্ন পয়েন্ট উন্মুক্তই করে রেখেছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সমঝোতা স্মারকের পর ইতোমধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠিত হয়েছে। ওয়ার্কিং গ্রুপের কার্যক্রমও চলছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের মাঝে সে দেশে ফিরে গিয়ে জীবনের নিশ্চয়তা নিয়ে এখনও বড় ধরনের শঙ্কা বিরাজমান। এছাড়া এপারে চলে আসা রোহিঙ্গারা ওপারে এখনও থেকে যাওয়া স্বজনদের বাংলাদেশে চলে আসার জন্য নানাভাবে প্ররোচিত করছে। মূলত রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য এখনও কোন পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় রোহিঙ্গাদের দলে দলে এখনও পালিয়ে আসার ঘটনা অব্যাহত রয়েছে বলে আলোচনায় উঠে এসেছে। রাখাইনে ক্যাম্প নির্মাণ শুরু ॥ বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমার নাগরিক রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে আপাতত স্থান করে দেয়ার জন্য সে দেশের সরকারী উদ্যোগে রাখাইন রাজ্যে শেড নির্মাণ শুরু হয়েছে। সীমান্তের ওপারের সূত্রগুলো জানিয়েছে, মংডুর অদূরে নলবনিয়াপাড়ায় বিশাল এলাকা জুড়ে বেশকিছু ক্যাম্প নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণাধীন ক্যাম্প এলাকার আশপাশে এখনও রোহিঙ্গা বসতি রয়েছে। মংডু শহরে প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা নিজ নিজ বাড়িঘরে বসবাস করছে। তবে তা শঙ্কার মধ্যে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ইতোপূর্বে রোহিঙ্গাদের জন্য সেখানে যে আশ্রয় ক্যাম্প নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা রয়েছে। শীতবস্ত্র বিক্রি করে দিচ্ছে রোহিঙ্গারা ॥ বৃদ্ধ ও শিশুদের শীতের কষ্ট লাঘবে সরকারী ও বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বিতরণ করা শীতবস্ত্র বিক্রি করে দেয়ার কাজে লিপ্ত রয়েছে এক শ্রেণীর রোহিঙ্গারা। ৪ মাস ধরে নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধ ॥ রোহিঙ্গা সঙ্কটের কারণে নাফ নদীতে গত ৪ মাস ধরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিকভাবে নানা সমস্যায় রয়েছে স্থানীয় জেলেরা। তাদের অনাহারে-অর্ধাহারে জীবন কাটাতে হচ্ছে। চলতি বছরের ১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ না ধরার জন্য সরকারীভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
×