ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রযুক্তির ছোঁয়া, কৃষিতে দিন বদল উদ্যমী কৃষক লাভবান

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭

প্রযুক্তির ছোঁয়া, কৃষিতে দিন বদল উদ্যমী কৃষক লাভবান

রফিকুল ইসলাম আধার প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে আধুনিক বিশ্ব। সেই ছোঁয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের কৃষি ও খাদ্য সমৃদ্ধ স্বদেশ ভূমি-বাংলাদেশ। আধুনিক প্রযুক্তির সেই ছোঁয়া এখন আমাদের গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত খাদ্য-কৃষি ভান্ডারখ্যাত শেরপুরের ঘরে ঘরে। বিশেষ করে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় প্রতিনিয়ত আমূল বদলে যাচ্ছে এলাকার কৃষি। সেইসঙ্গে প্রযুক্তিগত সহায়তায় বেশি লাভবান হচ্ছেন এলাকার উদ্যমী কৃষকরা। ফলে দিন বদল হচ্ছে কৃষকদের, গতি সঞ্চার হচ্ছে কৃষি অর্থনীতির। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতি মজবুত করার লক্ষ্যে সরকারের কৃষিবান্ধব নানামুখী কর্মসূচীর বদৌলতে উন্নয়নে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন প্রযুক্তি। হালে কৃষিক্ষেত্রে যোগ হওয়া এমনই এক প্রযুক্তি ব্যবস্থা হচ্ছে কমিউনিটি ও আদর্শ বীজতলা। কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর কল্যাণে শেরপুর অঞ্চলে ওই বীজতলা তৈরি ও চাষে কৃষকের মাঝে এখন ব্যাপক সাড়া জাগাচ্ছে। জেলার প্রতিটি উপজেলায় কমিউনিটি বীজতলা তৈরিতে কয়েক বছর ধরে আগ্রহ বেড়েই চলেছে। তবে নকলা উপজেলায় ওই বীজতলা তৈরিতে কৃষকরা বেশি ঝুঁকেছেন। দিনদিন ওই পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরিও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কমিউনিটি বা আদর্শ বীজতলা তৈরি করায় কৃষকের ধান উৎপাদন খরচ ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ কম লাগছে। জেলা খামারবাড়ীর তথ্যমতে, চলতি বোরো মৌসুমে জেলার ৫ উপজেলায় হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতসহ মোট ৯১ হাজার ৬শ ৩৫ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ওই লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৫ হাজার ৫৩৪ হেক্টর জমিতে সাধারণ বীজতলা তৈরিরও লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ওই লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে সদর উপজেলা ব্যতীত ৪টি উপজেলায় বিশেষ প্রকল্পের আওতায় ৮০টি কমিউনিটি বীজতলা এবং সদরসহ ৫টি উপজেলায় প্রায় ৫ শতাধিক আদর্শ বীজতলা রয়েছে। তারই আওতায় নকলা উপজেলায় হাইব্রিড জাতের ধান ৬ হাজার ৪৭৫ হেক্টর, উফশী জাতের ৬ হাজার ১৯৫ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ৮০ হেক্টর জমিসহ মোট ১২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই আবাদের জন্য ৮০৫ হেক্টর জমিতে বীজতলা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধেক জমিতে বীজতলা তৈরি শেষ হয়েছে। এর মধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ন্যাশনাল এগ্রিকালচার টেকনোলজি প্রোগ্রাম ফেজ প্রজেক্ট (এনএটিপি-২)’র আওতায় ২৫টি প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে সাড়ে ৩ একর জমিতে ৫৮০ কেজি ধানের বীজ কমিউনিটি বা আদর্শ পদ্ধতিতে বপন করা হয়েছে। সরেজমিন এলাকায় গিয়ে কথা হয় নকলা উপজেলার চরকৈয়া এলাকার কৃষক ফরিদুল ইসলাম, কৃষাণী ইয়াসমিন, ভুরদী গ্রামের কৃষক ছাইদুল হক, হেলাল উদ্দিন, কামাল হোসেন ও কুর্শাবাদাগৈড় এলাকার কৃষক লিয়াকত আলীসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে। তারা জানান, স্থানীয় কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে কমিউনিটি বা আদর্শ পদ্ধতিতে যে কোন জমিতে বীজতলা তৈরি করতে পেরে তারা লাভবান হচ্ছেন। আদর্শ বীজতলা থেকে চারা তোলা সহজ এবং রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে রোপণ করা যায়। আগের পদ্ধতির চেয়ে কমিউনিটি পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করলে বীজ, শ্রম, সার, জায়গা, সেচ ও সময়সহ খরচ অনেক কম লাগে। কিন্তু ফলন ভাল পাওয়া যায়।
×