ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় ক্রিকেট লীগ ॥ নাসিরের ৫ রানের আক্ষেপ, সিলেটকে বাঁচালেন সেঞ্চুরিয়ান রাজিন, রাজশাহীর ফরহাদ রেজাও সেঞ্চুরি করলেন

খুলনার হ্যাটট্রিক শিরোপা

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭

খুলনার হ্যাটট্রিক শিরোপা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়ালটন জাতীয় ক্রিকেট লীগের (এনসিএল) ১৯তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে খুলনা বিভাগ। ষষ্ঠ ও শেষ রাউন্ডে ঢাকা বিভাগকে ইনিংস ও ৪৯ রানের ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় খুলনা। এ শিরোপা জেতায় রেকর্ড ষষ্ঠবারের মতো এনসিএলের শিরোপা জিতল খুলনা। সেই সঙ্গে হ্যাটট্রিক শিরোপা জেতাও হয়ে গেল। এর আগে পাঁচবারসহ সর্বোচ্চ টানা চারবার শিরোপা জয়ের রেকর্ড ছিল রাজশাহী বিভাগের। শিরোপা জয়ের দিক থেকে রাজশাহীকেও পেছনে ফেলল খুলনা। ম্যাচের শেষদিন ইনিংস ব্যবধানে জেতা খুলনা ৮ পয়েন্ট পেয়েছে। সঙ্গে একটি বোনাস পয়েন্টও যোগ হয়েছে। আসরে ৬ ম্যাচে দুই জয় ও চার ড্র’তে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপা জিতলো তারা। খুলনার শিরোপা জেতার সঙ্গে রংপুর ও বরিশাল বিভাগ নিরাপদে থাকল। নিয়ম অনুযায়ী প্রথম স্তর থেকে পয়েন্ট তালিকায় সবচেয়ে নিচে থাকা দল দ্বিতীয় স্তরে নেমে যাবে। আর দ্বিতীয় স্তরে পয়েন্ট তালিকার সেরা দল প্রথম স্তরে উঠবে। প্রথম স্তরে পয়েন্ট তালিকার সেরা দল চ্যাম্পিয়ন হবে। খুলনা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। প্রথম স্তর থেকে ১২ পয়েন্ট পেয়ে রংপুর নিরাপদে আছে। সেই সঙ্গে বরিশালও ১০ পয়েন্ট নিয়ে আগামী মৌসুমে প্রথম স্তরেই খেলবে। বরিশালের সমান ১০ পয়েন্ট পেয়েও ঢাকা বিভাগ পয়েন্ট তালিকায় সবার নিচে থাকায় দ্বিতীয় স্তরে নেমে গেছে। আর দ্বিতীয় স্তর থেকে সর্বোচ্চ ২৩ পয়েন্ট নিয়ে রাজশাহী প্রথম স্তরে উঠে গেছে। প্রথম স্তর ॥ খুলনাই শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করল। বিকেএসপিতে প্রথমদিনে মেহেদী হাসান মিরাজ (৭/২৪) যে বোলিং দ্যুতি দেখিয়েছিলেন সেই নৈপুণ্যে খুলনা যে প্রথমদিন থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে; তা শেষ পর্যন্ত বজায় থাকে। ঢাকাকে প্রথম ইনিংসে ১১৩ রানে অলআউট করে দিয়ে এনামুল হক বিজয় ও মেহেদী হাসান তো উড়ন্ত ব্যাটিং করেন। বিজয় ডাবল সেঞ্চুরি (২০২ রান) করেন। আর মেহেদীর ব্যাট থেকে আসে ১৭৭ রান। এ দুইজনের ২৯৫ রানের জুটিতে ৮ উইকেট হারিয়ে ৪৫৯ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে খুলনা। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে তৃতীয়দিন ১৬৯ রান করে ঢাকা। ১৭৭ রানে পিছিয়ে ছিল। বোঝাই যাচ্ছিল হার নিশ্চিত হতে চলেছে। শিরোপা উৎসবের অপেক্ষায় আছেন খুলনার ক্রিকেটাররা। শেষ পর্যন্ত ২৯৭ রানেই গুটিয়ে যায় ঢাকা। মিরাজ আরও ৩টি উইকেট নেন। তাতে ইনিংস ব্যবধানে জিতে খুলনাই শিরোপা ঘরে তুলেছে। রংপুর-বরিশালের মধ্যকার ম্যাচটি যে ড্র হবে তা তৃতীয়দিনেই বোঝা গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত হলোও তাই। তবে ম্যাচটিতে নাসির হোসেনের আফসোস থেকেই গেল। আর ৫ রান হলেই যে ক্যারিয়ারের প্রথম ত্রিপল সেঞ্চুরি তুলে নিতে পারতেন। কিন্তু ২৯৫ রান করতেই আউট হয়ে যান নাসির। ২৭০ রানে অপরাজিত ছিলেন। সেখান থেকে চতুর্থদিনে ব্যাট হাতে নেমে ২৫ রানের বেশি স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পারেননি। তাতে রংপুরও ৭ উইকেটে ৬১৪ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। প্রথম ইনিংসে বরিশাল ৩৩৫ রান করে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ২১৭ রান করতেই দিন ফুরিয়ে যায়। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন। ম্যাচটি ড্র হওয়াতে, খুলনার কাছে ঢাকা হারাতে, বরিশাল দ্বিতীয় স্তরে নেমে যাওয়া থেকে বেঁচে যায়। দ্বিতীয় স্তর ॥ ষষ্ঠ রাউন্ড শুরুর আগেই প্রথম স্তরে খেলা নিশ্চিত করে ফেলে রাজশাহী। তাই রাজশাহী হারলেও বিপদ ছিল না। এরপরও দলটি খুবই ভাল নৈপুণ্য দেখায়। ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে ম্যাচটি ড্র হয়। তবে প্রথম ইনিংসেই পাহাড়সম রান করে ফেলে রাজশাহী। ঢাকা মেট্রোকে প্রথম ইনিংসে ৩২৮ রানে অলআউট করে দিয়ে নাজমুল হোসেন ও মিজানুর রহমানের পর ফরহাদ রেজার (১০৬) সেঞ্চুরিতে ৬৬৮ রান করে রাজশাহী। এরপর ঢাকা মেট্রো ব্যাট হাতে নেমে ৫ উইকেটে ১১৮ রান করতেই দিন শেষ হয়। ম্যাচও ড্র হয়ে যায়। চট্টগ্রাম ও সিলেটের মধ্যকার ম্যাচটিও ড্র হয়ে যায়। বড়ই বিপদে ছিল সিলেট। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলটি হার এড়ায়। ৪৫৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে তৃতীয়দিন শেষে দলটির জিততে ৩৮০ রান দরকার ছিল। হাতে ছিল ৮ উইকেট। রাজিন সালেহ অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখান। ১০৪ রান করেন। তাতে সিলেট হার এড়ায়। ৭ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রান করে। দিনে আর খেলা না গড়ানোয় ম্যাচটি ড্র হয়। স্কোর ॥ ঢাকা প্রথম ইনিংস ১১৩/১০ (৩৮.৪ ওভার; রকিবুল ২৮, শুভাগত ২১; মিরাজ ৭/২৪) ও দ্বিতীয় ইনিংস তৃতীয়দিন ১৬৯/৪; রকিবুল ৫৮, পারভেজ ৩৫*, মজিদ ২৭, শুভাগত ২৫; মেহেদী ১/১৯ ও চতুর্থদিন ২৯৭/১০ (৯৯.৫ ওভার; রকিবুল ৫৮, পারভেজ ৫১, শরীফ ৪৭, নাদিফ ৪৩; রুবেল ৩/৬৪, মিরাজ ৩/৮৯)। খুলনা প্রথম ইনিংস ৪৫৯/৮ (ইনিংস ঘোষণা) (৯১ ওভার; বিজয় ২০২, মেহেদী ১৭৭, মিরাজ ১৫*; শরীফ ৩/৭০)। ফল ॥ খুলনা ইনিংস ও ৪৯ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মেহেদী হাসান মিরাজ (খুলনা বিভাগ)।
×