ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অর্থনীতি ও নৈতিকতার সমন্বয়ে বৈষম্যহীন সমাজ গড়া সম্ভব

প্রকাশিত: ০৪:০১, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭

অর্থনীতি ও নৈতিকতার সমন্বয়ে বৈষম্যহীন সমাজ গড়া সম্ভব

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ অর্থশাস্ত্র ও নৈতিকতার মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে দেশে বৈষম্যহীন শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে উঠতে পারে। কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে এদেশকে ভুলপথে পরিচালিত করা হয়েছে। সমাজ-রাজনীতি-অর্থনীতি সবই দুর্বৃত্তায়িত হয়েছে। সাধারণ মানুষের প্রিয় স্বদেশ, জন্মভূমি চলে যায় মুষ্টিমেয় রেন্ট-সিকার, লুটেরা, ধর্মীয় মৌলবাদ সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে। কিন্তু সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে এখন জাতির জনকের কাক্সিক্ষত বাংলাদেশ গড়তে কাজ শুরু হয়েছে। তবে সেখানেও ধর্মীয় মৌলবাদ, জঙ্গীবাদ ও স্বাধীনতা বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির অপরাজনীতির মতো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিআইবি) ভবনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ২০তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘অর্থশাস্ত্র ও নৈতিকতা’। বাংলাদেশ অর্থনীতির সমিতির বিদায়ী সভাপতি অধ্যাপক ড. আশরাফ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট মোঃ ফজলে রাব্বী মিয়া। এছাড়া সংগঠনটির নবনির্বাচিত সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত এবং বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ বক্তব্য রাখেন। অর্থনীতি শাস্ত্রের চর্চা ও গবেষণায় অসামান্য অবদান রাখার জন্য এবার অর্থনীতি সমিতির স্বর্ণপদক সম্মাননা ২০১৭ পেয়েছেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান, ড. মাহবুব হোসেন এবং অধ্যাপক ড. আশরাফ উদ্দিন চৌধুরী। নব নির্বাচিত সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেন, নৈতিকতার বিষয়টি অর্থশাস্ত্র ও প্রায়োগিক অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই দৃষ্টিকোণ থেকে এবার সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় রাখা হয়েছে ‘অর্থশাস্ত্র ও নৈতিকতা’। এবারের দ্বিবার্ষিক এই সম্মেলনের ১২টি কর্মঅধিবেশনে মোট ১১৫টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়েছে। সমাপনী অনুষ্ঠানে দারিদ্র্যবিমোচন এবং বৈষম্য নিরসনের ক্ষেত্রে আরও কার্যকর নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করার ওপর তাগিদ দেয়া হয়েছে। এছাড়া কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দিয়েই আয় বৈষম্য ও দারিদ্র্যবিমোচন করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন প্রবৃদ্ধির সুবিধা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া। বক্তরা বলেন, নৈতিকতার সঙ্গে অর্থনীতিকে যুক্ত করলে আমরা দারিদ্র্যবিমোচন এবং বৈষম্য নিরসনের ক্ষেত্রে আরও কার্যকর নীতি, পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারি। বিশ্ব অর্থনীতিতেও আজ বৈষম্য প্রবল। এমডিজিতে বৈষম্য দূর করার ওপর জোর দেয়া হয়নি। তবে এসডিজিতে বৈষম্য নিরসনে বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে। সভায় জানানো হয় বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত অগ্রসরমান। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সকল সূচকে বাংলাদেশ শক্ত ভিতের ওপর অবস্থান করছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ ধারাবাহিকভাবে অর্জিত হচ্ছে, বৈদেশিক রিজার্ভ ১৬শ’ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে, রফতানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ শতাংশ এবং প্রবাসী আয় বেড়েছে ১২ শতাংশ। জনবান্ধব কর্মসূচী গ্রহণের ফলে দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে ২৩ শতাংশে নেমে এসেছে। আবুল বারকাত বলেন, অর্থনীতি ও নৈতিকতা বিষয়টি বহুমাত্রিক ও জটিল। আনুুষ্ঠানিক অর্থে অর্থনীতিবিদদের প্রথম দলের শুরুটা ষোড়শ শতকের মাঝামাঝি সময় টমাস বেকনসহ বেশ কিছু ধর্মযাজকের সমন্বয়ে।
×