ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হাওড়ে এখনও শুরু হয়নি বাঁধ নির্মাণ

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭

হাওড়ে এখনও শুরু হয়নি বাঁধ নির্মাণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ, ২২ ডিসেম্বর ॥ গেল বছর বাঁধ নির্মাণের গাফিলতিতে তলিয়ে যায় সুনামগঞ্জের হাওড়ের শতভাগ ফসল। সময়মতো বাঁধে মাটি না দেয়ায় চৈত্রের প্রথম থেকেই শুরু হয় কৃষকের কান্না। একের পর এক হাওড় তলিয়ে যাওয়ায় দীর্ঘ ১০ মাস খাদ্য সংকটে ছিল কৃষক। হাওড়ের বাঁধ রক্ষার্থে এবং কৃষকদের সোনার ফসল গড়ে তুলতে সরকার নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। এই নীতিমালা অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর থেকে হাওড়ের বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন করার কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের ৮ দিন পার হলেও বাঁধের কাজ এখনও শুরু হয়নি। শুধু তাই নয় পিআইসি গঠন নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ। এখনও জেলার ১১টি উপজেলার পিআইসি গঠন হয়নি। তবে প্রকল্প অনুমোদন, পিআইসি গঠন ও মাঠের কাজে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধিদের সহায়তা না পাওয়াসহ নানান গাফিলতি রয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের দাবি। জেলার তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, বিশ্বম্ভরপুর, দিরাই, শাল্লা, ছাতক, জগন্নাথপুর দোয়ারাবাজার উপজেলাসহ ১১টি উপজেলার ৩৬টি বৃহত্তর হাওড়ে ১৭টি উপ-প্রকল্পসহ মোট ৫৩টি হাওড়ের ৯১৪ পিআইসি গঠন করার কথা। এবার পিআইসি গঠনের দায়িত্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের। নতুন নীতিমালা নদী, খাল পুনঃখননের জন্য স্কিম প্রস্তুত ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাবিটা নীতিমালা-২০১৭ অনুমোদন হয়েছে। সেই নীতিমালা অনুযায়ী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে পিআইসি গঠনের নির্দেশনা ছিল। হাওড় রক্ষার বাঁধ নির্মাণের চাহিদা ১ হাজার ৪৫০ কিলোমিটার হলেও রাজস্ব খাতে ৩৬টি হাওড়ে কাজ হবে ৫৭৯ কিলোমিটার। তার সাথে অনুন্নয়ন খাতের আরও ১ শত কিলোমিটার বাঁধের কাজ যোগ করা হয়েছে। উনুন্নয়ন খাতে ৯৫ কোটি টাকার চাহিদা থাকলেও অনুমোদন হয়েছে ২৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। উন্নয়ন খাতে ৩৬টি হাওড়সহ আরও ১৭টি হাওড় মিলে ৫৩টি হাওড়ের ১শত কিলোমিটার বাঁধের নির্মান ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। গত ৩১শে অক্টোবর পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ে ১ হাজার ৮৮টি প্রকল্পের খসরা পাঠিয়েছে সুনামগঞ্জ পাউবো। আরও শতাধিক প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। তবে প্রকল্পগুলো এখনও অনুমোদন হয় নি। তবে উন্নয়নর খাতের ৩৬টি হাওড়ের বাঁধ ঠিকাদারের মাধ্যমে নির্মিত হবে এর প্রকল্প শেষ হয়েছে। অনুন্নয়ন খাতের (উন্নয়ন খাতের ৩৬টি সহ) ৫৩টি হাওড়ের পিআইসি এখনও সম্পন্ন হয় নি। চলতি মাসেই পিআইসি গঠন করা সম্পন্ন হবে বলে জানান পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক ভূইয়া। পাউবো সূত্রে জানা যায়, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী হাওড় পাড়ের কৃষকদের দিয়েই পিআইসি গঠন করা হবে। এবার পিআইসির সদস্য সংখ্যা হবে ৫ থেকে ৭ সদস্য বিশিষ্ট। জেলা ও উপজেলা কমিটিতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সভাপতি করে স্থানীয় প্রকৌশলী অধিদপ্তেরের প্রকৌশলী, ভূমি, মৎস, কৃষি অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরকে সংযুক্ত করা হয়েছে। বাঁধের কাজের জমির প্রকৃত মালিকদের সমন্বয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিআইসি গঠন করবেন। জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মাসুম বিল্লাহ জানান, এ উপজেলায় এখনও প্রকল্পগুলো অনুমোদন হয় নি। যার ফলে পিআইসির কমিটিও দেরি হচ্ছে। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূনেন্দ্র দেব জানান, উপজেলায় পিআইসি গঠন করা শেষ ও অনুমোদন হয়েছে। সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক ভূঁইয়া জানান, নতুন নীতি মালা অনুযায়ী ৩০ নবেম্বরের মধ্যে সকল পিআইসি গঠন করার কথা কিন্তু এখনও শেষ হয় নি। খুব শীঘ্রই সব পিআইসি গঠনের তালিকা পেয়ে যাব। এ পর্যন্ত ১ হাজার ৮৮টি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। আরও শতাধিক প্রকল্প প্রস্তুত করা হচ্ছে।
×