ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দেশব্যাপী গ্রাম থিয়েটারের মুক্তিযুদ্ধের নাটক মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৬:২২, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭

দেশব্যাপী গ্রাম থিয়েটারের মুক্তিযুদ্ধের নাটক মঞ্চায়ন

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ ‘হাতের মুঠোয় হাজার বছর আমরা চলেছি সামনে’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে তিনযুগ ধরে কাজ করছে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার বাংলা নাটকের নিজস্ব আঙ্গিক গড়ে তোলার আন্দোলন করে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতির ইতিহাস ঐতিহ্য শিকড় থেকে তুলে আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এই সংগঠনটি সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাট্যজন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর নির্দেশে দেশব্যাপী নিজ নিজ এলাকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে নাটক রচনা এবং মঞ্চায়নের কর্মসূচী হাতে নেয়। উপলক্ষ হিসেবে বেছে নেয় বিজয়ের মাস ডিসেম্বরকে। কেন্দ্রীয়ভাবে তৃণমূলের সংগঠনগুলোকে নিজ নিজ এলাকার শহীদ মিনার কিংবা উপযুক্ত স্থানে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৪-১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে নাটক মঞ্চায়নের তাগিদ দেয়া হয়। কেন্দ্রের এই কর্মসূচী পালন করার পরেও সংগঠনগুলো নিজ নিজ এলাকায় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নানা কর্মসূচী পালন করছে। অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে আলোচনা সভা, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, বিজয় মেলা এবং পথনাট্যোৎসব। কেন্দ্রের কর্মসূচী বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে নিজ নিজ জেলা এবং উপজেলায় মুক্তযুদ্ধের নাটক মঞ্চায়ন করে সংগঠনগুলো। এর মধ্যে রাজশাহী বিভাগ পুন্ড্র অঞ্চলে বগুড়া-জয়পুরহাটে পাঁচবিবি থিয়েটার ‘মুক্তিযোদ্ধার রক্ত’, আক্কেলপুর থিয়েটার ‘যুদ্ধ স্বাধীনতা’, শান্তিনগর থিয়েটার ‘সেতারা বানুর কেচ্ছা’, কাহালু থিয়েটার এবং সোনতলা থিয়েটার ‘ক্ষ্যাপা পাগলার প্যাঁচাল’, বগুড়া থিয়েটার ‘সোনাভানের পালা’, কলেজ থিয়েটার বগুড়া ‘মহাদেব’ এবং ‘সংসার’, যমুনা থিয়েটার ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’, গোলাবাড়ি থিয়েটার ও গাবতলী কলেজ থিয়েটার ‘৭১-এর সেই সময়’, ধুনট থিয়েটার ‘ফেরারি নিশান’, সিরাজগঞ্জ রবী অঞ্চলে প্রসুন থিয়েটার ‘স্বপ্ন চোর’, পূরবী থিয়েটার ‘জাগো’, পাবনা বনমালী অঞ্চলে পাবনা থিয়েটার ‘৭৭ ভেল্কিবাজি’, চিকনাই থিয়েটার ‘দেওয়াল’, সতীর্থ থিয়েটার ‘যাযাবর’, নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ইলামিত্র অঞ্চলে ‘ইঙ্গিত থিয়েটার ‘দাবি’, পদ্মাবড়াল থিয়েটার ‘মীরজাফরের রোজ নামচা’, রাজশাহী থিয়েটার ‘ধম্ম যখন ছোঁয়ালেন হুজুর’, চন্দ্রাবতী থিয়েটার ‘যুদ্ধ স্বাধীনতা’, পুঠিয়া থিয়েটার ‘মড়া’, সবুজ থিয়েটার ‘ফুটপাত’, নওগাঁ থিয়েটার ‘জাগো’, বরিশাল বিভাগে বরিশাল থিয়েটার ‘আমার মুক্তিযোদ্ধা’, বরগুনা থিয়েটার ‘১৯৭১’, ঝালকাঠি থিয়েটার ‘ক্ষ্যাপা পাগলার প্যাঁচাল’, দখিনা নাট্য মঞ্চ ‘নবজাগরণ’, ময়মনসিংহ বিভাগে অমৃত থিয়েটার ‘এ মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ নয়’, রংপুর বিভাগে সারথি থিয়েটার গাইবান্ধা ‘পাথর’, চিন্তক থিয়েটার গোবিন্দগঞ্জ ‘শাশ্বত বাংলা’, সুর লীলা থিয়েটার গোবিন্দগঞ্জ ‘শত্রু’, বোনারপাড়া রেলওয়ে থিয়েটারের যাত্রানাট ‘নীচু তলার মানুষ’ ও ‘জেল থেকে বলছি’, স্বাধীন পলাশ থিয়েটার পলাশবাড়ী নয় মাসের স্মৃতি কামারপাড়া থিয়েটার রাজারহাট কুড়িগ্রাম ঘড়িয়ালডাঙ্গার ‘জমিদার’, কুড়িগ্রাম থিয়েটার ‘অধিকার’, বর্ণমালা থিয়েটার লালমনিরহাট ‘মুক্তিযুদ্ধ’, রংপুর নাট্যকেন্দ্র ‘অগ্ন্যুৎপাত’, রংপুর থিয়েটার ‘এখন যুদ্ধ’, জলঢাকা থিয়েটার নীলফামারী যাত্রানাট ‘মায়ের চোখে জল’ ও ‘অনুসন্ধান’, ভবানীপুর থিয়েটার দিনাজপুর ‘নষ্ট’, নিশ্চিন্তপুর থিয়েটার ঠাকুরগাঁও ‘যুদ্ধ স্বাধীনতা’, সিলেট বিভাগে জীবনচক্র থিয়েটার ‘জোড়াতালি’, খোয়াই থিয়েটার ‘এই পিরিতি সেই পিরিতি নয়’, উচ্ছ্বাস থিয়েটার ‘মহাকাশে মঙ্গল’, পথিক থিয়েটার ‘ক্ষ্যাপা পাগলার প্যাঁচাল’, মৃত্তিকায় মহাকাল ‘স্মৃতি ৭১’, বিশ্বনাথ থিয়েটার ‘টকশো’ নাটক মঞ্চায়ন করে। এছাড়াও ভোলা থিয়েটার বিজয় উৎসব, ফ্রেন্স থিয়েটার মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, অরণি সাং¯ৃ‹তিক সংসদ বিজয় উৎসবের আয়োজন করে। আগামীতে গ্রাম থিয়েটারের সংগঠনগুলো আরও সক্রিয় করতে অঞ্চলভিত্তিক এবং বিভাগীয় নাট্যোৎসব করার পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান ময়না।
×