ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জিতেই শিরোপা জয়ের উৎসবের অপেক্ষায় খুলনা

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭

জিতেই শিরোপা জয়ের উৎসবের অপেক্ষায় খুলনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়ালটন জাতীয় ক্রিকেট লীগের (এনসিএল) ষষ্ঠ বা শেষ রাউন্ডের শেষদিন আজ। এদিনেই ঢাকার বিপক্ষে খুলনার জয় মিলতে পারে। আর এ জয় দিয়েই শিরোপা উৎসবে মাতার অপেক্ষায় আছে খুলনা। এনামুল হক বিজয়ের ডাবল সেঞ্চুরিতে পাহাড়সম রান করেই জয়ের দ্বারপ্রান্তে আছে খুলনা। জয়টি না পেলেও চ্যাম্পিয়ন হয়ে উৎসব করবে খুলনা। তবে জিতেই সেই উৎসব করতে চায় দলের ক্রিকেটাররা। ঢাকা এখনও ১৭৭ রানে পিছিয়ে আছে। হাতে আছে ৬ উইকেট। ১৭৭ রানের আগে এই ৬ উইকেট তুলে নিতে পারলে ঢাকাকে ইনিংস ব্যবধানে হারাবে খুলনা। আর তা না হলে টার্গেট অতিক্রম করে জিতলেও শিরোপা উৎসবে মাতবে দলটি। তৃতীয়দিন শেষে খুলনার জয়ের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। আরেকদিকে তৃতীয়দিনে এনসিএলে যেন সেঞ্চুরির ঢল নেমেছে। খুলনার বিজয় আগেরদিনই সেঞ্চুরি করেছিলেন। তৃতীয়দিন ডাবল সেঞ্চুরি করলেন। রংপুরের নাসিরেরও একই অবস্থা। অপরাজিত ২৭০ রানের ইনিংস খেলেন নাসির। খুলনার আরিফুল হকও সেঞ্চুরি করেন। রাজশাহীর নাজমুল হোসেন ও মিজানুর রহমানও সেঞ্চুরি হাঁকান। আর চট্টগ্রামের ইয়াসির আলীর ব্যাট থেকেও আসে সেঞ্চুরি। প্রথম স্তর বিকেএসপিতে খুলনার বাজিমাত চলছেই। প্রতিটি দিন নিজেদের করে নিয়েছে খুলনা। প্রথমদিনেই ৭ উইকেট নেয়া মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে ঢাকাকে প্রথম ইনিংসে ১১৩ রানে অলআউট করে দিয়ে দিনটি নিজেদের করে নিয়েছে। এরপর খুলনা ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয়দিন ১টি উইকেট হারিয়ে ৩৭০ রান করে। বিজয় ও মেহেদী মিলে ২৮১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছিলেন। বিজয় ১৬৭ রানে ও মেহেদী হাসান ১৬৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। দ্বিতীয়দিনটিও খুলনা নিজেদের করে নেয়। তৃতীয়দিনও সেই ঝলক বজায় থাকে। বিজয় তো ডাবল সেঞ্চুরিই করে ফেলেন। ২৫১ বলে ২৩ চার ও ৪ ছক্কায় ২০২ রানের ইনিংস খেলে আউট হন বিজয়। অসাধারণ ব্যাটিং করেন। মেহেদী অবশ্য ১৭৭ রানের বেশি করতে পারেননি। তবে দুইজন মিলে ২৯৫ রানের জুটি গড়েন। যা খুলনাকে বিশাল রান সংগ্রহ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ৪৫৯ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে খুলনা। ঢাকা থেকে ৩৪৬ রানে এগিয়ে যায়। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান করে ঢাকা। ১৭৭ রানে এখনও পিছিয়ে আছে। আজ দলকে ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে পারভেজ (৩৫*) ও নাদিফ চৌধুরী (২*) ব্যাট হাতে নামবেন। যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে ঢাকার হারের সম্ভাবনাই বেশি। যদি হারে তাহলে খুলনা জয় নিয়েই শিরোপা উৎসব করবে। চট্টগ্রামে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আরেকটি ডাবল সেঞ্চুরির দেখা মিলে। সেটি করেন নাসির হোসেন। ৪৬৭ বলে ২৯ চার ও ৩ ছক্কায় ২৭০ রানের ইনিংস খেলেন নাসির। আবার অপরাজিতও আছেন। আরিফুল হকও ১৬২ রানের ইনিংস খেলেন। দুইজন মিলে আবার পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৩৬৮ রানের জুটিও গড়েন। এই ম্যাচটি নিশ্চিতভাবেই ড্র হতে চলেছে। কারণ বরিশালের প্রথম ইনিংস শেষ হলেও রংপুরের এখনও প্রথম ইনিংসই শেষ হয়নি। বরিশাল প্রথম ইনিংসে ৩৩৫ রান করে। এরপর রংপুর ব্যাট হাতে নেমে নাসিরের ডাবল সেঞ্চুরি ও আরিফুলের সেঞ্চুরিতে ৫ উইকেট হারিয়ে ৫৭০ রান করে। ২৩৫ রানে এগিয়ে রয়েছে রংপুর। আজ ম্যাচের চতুর্থ ও শেষদিন। ম্যাচটি নিশ্চিত ড্র’ই হচ্ছে। দ্বিতীয় স্তর রাজশাহীতে শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে ঢাকা মেট্রো-রাজশাহী ম্যাচটিও ড্র’র পথেই এগিয়ে চলেছে। ঢাকা মেট্রো প্রথম ইনিংসে ৩২৮ রান করে। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে বিনা উইকেটে ৯৫ রান করে রাজশাহী। তৃতীয়দিন ৫ উইকেট হারিয়ে ৪৬০ রান করেছে রাজশাহী। নাজমুল হোসেনের ১৯৪ ও মিজানুর রহমানের ১৭৫ রানে বিশাল রান করে রাজশাহী। ফরহাদ হোসেন ৬৫ রানের ইনিংস খেলেন। এখনও রাজশাহীর একটি ইনিংসই শেষ হয়নি। আজ শেষদিনে তাই ম্যাচটি ড্রই হচ্ছে বলা চলে। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হারের মুখে পড়ে গেছে সিলেট। ৪৫৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে এখনও দলটির জিততে ৩৮০ রান লাগবে। হাতে আছে ৮ উইকেট। জয় কঠিন। তবে ড্র করার সম্ভাবনা থাকছে। যদি সিলেট ব্যাটসম্যানরা বিশেষ কিছু করে দেখাতে পারেন। উইকেট আঁকড়ে থাকতে পারেন। কিন্তু চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংসে ২১৫ রানে অলআউট হওয়ার পর সিলেটও প্রথম ইনিংসে ১৩৭ রানে গুটিয়ে যায়। এমন অবস্থা হলে হারতে পারে সিলেট। দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে দ্বিতীয়দিনে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান করেছিল চট্টগ্রাম। ২৬৭ রানে এগিয়ে ছিল চট্টগ্রাম। তৃতীয়দিন ইয়াসির আলীর অপরাজিত ১০২ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩৮০ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে চট্টগ্রাম। সিলেটের সামনে জিততে বিশাল টার্গেট পড়ে। এ টার্গেট অতিক্রম করতে গিয়ে ২ উইকেট হারিয়ে ৭৮ রান করে সিলেট। আজ শেষদিনে সিলেটকে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নামতে হবে। স্কোর ॥ ঢাকা-খুলনা ম্যাচ বিকেএসপি ঢাকা প্রথম ইনিংস ১১৩/১০ (৩৮.৪ ওভার; রকিবুল ২৮, শুভাগত ২১; মিরাজ ৭/২৪) ও দ্বিতীয় ইনিংস ১৬৯/৪ ৬৬ (ওভার; রকিবুল ৫৮, পারভেজ ৩৫*, মজিদ ২৭, শুভাগত ২৫; মেহেদী ১/১৯)। খুলনা প্রথম ইনিংস দ্বিতীয়দিন ৩৭০/১ (বিজয় ১৬৭*, সৌম্য ৩০, মেহেদী ১৬৮* ও তৃতীয়দিন ৪৫৯/৮ (ইনিংস ঘোষণা); ৯১ ওভার (বিজয় ২০২, মেহেদী ১৭৭, মিরাজ ১৫*; শরীফ ৩/৭০)। রংপুর-বরিশাল ম্যাচ চট্টগ্রাম বরিশাল প্রথম ইনিংস ৩৩৫/১০ (৯৩.৫ ওভার; নুরুজ্জামান ৫৮, রাব্বি ২২*; তানভির ৩/৫৩)। রংপুর প্রথম ইনিংস দ্বিতীয়দিন ২৬৪/৪ (নাসির ১০১*, নাঈম ৫৪, আরিফুল ৩৪*; মনির ৩/৬৯ ও তৃতীয়দিন ৫৭০/৫; ১৬৬ ওভার (নাসির ২৭০*, আরিফুল ১৬২)। রাজশাহী-ঢাকা মেট্রো ম্যাচÑ রাজশাহী ঢাকা মেট্রো প্রথম ইনিংস ৩২৮/১০ (৯০.৩ ওভার; আশরাফুল ২২, মেহরাব জুনিয়র ৩৯, জাবিদ ৩৬, হায়দার ২৭*; তাইজুল ৫/১০৫)। রাজশাহী প্রথম ইনিংস দ্বিতীয়দিন ৯৫/০ (মিজানুর ৪৭*, নাজমুল ৪৩* ও তৃতীয়দিন ৪৬০/৫; ১০০.২ ওভার (নাজমুল ১৯৪, মিজানুর ১৭৫)। চট্টগ্রাম-সিলেট ম্যাচ সিলেট চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংস ২১০/১০ (৬৭.৪ ওভার; ইয়াসির ৮১, সাদিকুর ৪৬, তাসামুল ৩৮; আবুল ৩/৩৪, এনামুল জুনিয়র ৩/৪৪ ও দ্বিতীয় ইনিংস দ্বিতীয়দিন ১৮৯/৫; জসিম ৫৬, সাদিকুর ৫৪, ইয়াসির ১৪*, সাইদ ১৩*; এবাদত ২/৪২ ও তৃতীয়দিন ৩৮০/৭ (ইনিংস ঘোষণা); ১০৬ ওভার (ইয়াসির ১০২*, সাইদ ৭৬; এনামুল জুনিয়র ৩/১৩১)। সিলেট প্রথম ইনিংস ১৩৭/১০ (৪৯.৪ ওভার; আবুল ২৭, সায়েম ২৬, রাজিন ২৬; রনি ৫/৪৩) ও দ্বিতীয় ইনিংস ৭৮/২; ৩৪.১ ওভার (সায়েম ৪৮, ইমতিয়াজ ৯*, এনামুল জুনিয়র ২*)।
×