ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রহস্যে ঘেরা বনানী হোটেলে ধর্ষণের ঘটনা ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭

রহস্যে ঘেরা বনানী হোটেলে ধর্ষণের ঘটনা ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ

আজাদ সুলায়মান ॥ বনানীর হোটেলে এক সন্তানের জননী ধর্ষণ মামলার তদন্তে পুলিশ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। পুলিশ সেই রাতে হোটেলে কি ঘটেছিল- তার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। ফুটেজে দেখা যায়, ২০ নবেম্বর রাত ১২টায় ওই নারী (৩২) স্বামী পরিচয়ে কুশানকে নিয়ে বেশ হাসিমুখে অভ্যর্থনা কেন্দ্রে গিয়ে কিছু সময় কাটান। পরে একটি কক্ষে রাত যাপনের পরদিন ২১ নবেম্বর সকালে ওই নারী একাকী হোটেল থেকে বের হয়ে যান। তার ঘণ্টাখানেক পর তিনি আবার ফিরে আসেন। তখন তিনি রিসিপসনে থাকা কর্তব্যরত স্টাফদেরকে বলেন, কিছুক্ষণ পর কয়েকজন অতিথি আসলে তাদেরকে যেন ওপরে কুশানের রুমে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এ কথা বলেই তিনি ওপরে নিজের রুমে চলে যান। তার ঘণ্টাখানেক পর পুলিশ আসলে তাদেরকে ওপরে নিয়ে যেতে রিসিপসনে অনুরোধ জানান তিনি। এরপর পুলিশ ওপরে গিয়ে কুশান ও তাকে নিয়ে নিচে চলে আসে। তারা উভয়েই পুলিশের সঙ্গে স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই বনানী থানায় চলে যান। হোটেলের ম্যানেজার সাগর জনকণ্ঠকে বলেন, ওই নারী আগের রাতে হাসিখুশি হোটেলে এসে কুশানের স্ত্রী পরিচয়ে একত্রে কাটান। সকালে তিনি কুশানকে রুমে রেখে একাকী বের হয়ে গিয়ে মিনিট চল্লিশেক পর পরনের জামা বদল করে অন্য জামা পরিহিত অবস্থায় হোটেলে ঢুকেন। জানা গেছে, ২১ নবেম্বর থানায় উভয় পক্ষই এ ঘটনায় দফারফা করার চেষ্টা চালায়। কিন্তুু ওই নারী এত বেশি আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করেন- যা কুশানের পক্ষ মানতে রাজি হননি। তারপরও বিয়ের আশ্বাসে মুচলেকা আদায় করে তাদেরকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনার তিন সপ্তাহের মধ্যে কুশানের সঙ্গে কোন ধরনের সমঝোতা না হওয়ায় ১৩ ডিসেম্বর বনানী থানায় এসে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন ওই নারী। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই শিরিন বলেন, ভিডিও ফুটেজের সব চিত্রই বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে। সেদিন সকালে ভিকটিম একাকী হোটেল থেকে বের হয়ে গিয়ে পরনের জামা কাপড় বদলিয়ে মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যে আবার ফেরার রহস্যও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই সময়ে তিনি কোথায় গিয়েছিলেন এবং কি উদ্দেশে পরনের কাপড় বদল করেছেন সেটার তদন্ত প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ দিকে মামলায় অভিযুক্ত কুশানের পরিবারের অভিযোগ, ওই নারী একজন তালাকপ্রাপ্ত ও এক সন্তানের বিষয়টি গোপন রেখেই কুশানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে দীর্ঘ দেড় বছর অবাধে মেলামেশা করেছে। তারপর হঠাৎ কি কারণে সে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে, এর পেছনে কারা মদদ জুগিয়েছে সেটাও তদন্ত করতে হবে। জানতে চাইলে গুলশান জোনের পুলিশের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, ওই নারীকে বৃহস্পতিবার ডেকে সেই ভিডিও ফুটেজের চিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মামলার তদন্তে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। এখন কুশানকে বাদীর মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা যাবে। তিনি বলেন, উভয় পক্ষের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ আমলে নিয়েই পুলিশ যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে মামলাটি তদন্ত করছে। এ ধরনের ঘটনা তো এই প্রথম নয়, এর আগেও কয়েকটি ঘটেছে। নিজেদের মধ্যে জানাশোনা ও প্রেম ভালবাসার সম্পর্ক হঠাৎ কেন ধর্ষণে গড়ায় সেটার মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যার দাবি রাখে।
×