ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারের জেনারেল যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকায়

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭

মিয়ানমারের জেনারেল যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকায়

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নির্মূল অভিযানে নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগে মিয়ানমারের মেজর জেনারেল মাউং মাউং সোয়েকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব ট্রেজারির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং দুর্নীতির অভিযোগে ৫২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। বিবিসি জানায়, জেনারেল সোয়ে ওই অভিযুক্তদের একজন। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ওই সময়ে মাউং সোয়ের অধীনে থাকা সেনাবাহিনীই মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হওয়ার পর গত মাসে জেনারেল সোয়েকে বদলি করা হয়। তবে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাকে বদলির কারণ সম্পর্কে কিছু বলেনি। গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইনে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ঘাঁটিতে হামলার পর সেখানে সেনা অভিযান শুরু হয়। রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও পোড়াও শুরু হলে সেখানকার প্রায় সাড়ে ছয় লাখ বাসিন্দা পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তাদের কেউ কেউ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এসেছে, কারো শরীরে পোড়া ক্ষত ছিল। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সেখানে সেনাবাহিনীর চরম নিপীড়নের বর্ণনা দিয়েছেন। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও মিয়ানমারের সেনাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। জাতিসংঘ মিয়ানমারের সেনা অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযানের বাস্তব উদাহরণ’ বলে বর্ণনা করেছে। যদিও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দাবি তারা সেখানে জঙ্গী দমন অভিযান চালাচ্ছে, বেসামরিক নাগরিক তাদের লক্ষ্য নয়। জাতিসংঘ রাখাইনের বাস্তব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সেখানে আন্তর্জাতিক তদন্তদল পাঠাতে চাইলেও আউং সান সুচি নেতৃত্বাধীন মিয়ানমার সরকার তার অনুমতি দিচ্ছে না। ৫২ জনের ওই তালিকায় পাকিস্তানের শল্যচিকিৎসক মুখতার হামিদ শাহ আছেন। তার বিরুদ্ধে দরিদ্র শ্রমিকদের অপহরণ করে তাদের অঙ্গ কেটে নেয়ার অভিযোগ আছে। এই তালিকায় জাম্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াহইয়া জামেহও আছেন। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যক্তি বা সংস্থার সম্পদ জব্দ করা হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কোন নাগরিক তাদের সঙ্গে লেনদেন করলে তাদেরও নিষিদ্ধ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিভ মুচিন বলেন, ‘নিজেদের অপকর্মের জন্য তাদের চরমমূল্য দিতে হবে’ এই নিষেধাজ্ঞা তাদের সেই বার্তাই দিচ্ছে।
×