ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘তাকে রাখা হয়েছিল নোংরা রুমে ॥ দেয়া হতো হোটেলের ঠান্ডা খাবার’

টাকার জন্য অপহরণ করা হয়েছিল- বাড়ি ফিরে জানান সিজার

প্রকাশিত: ০৪:৫৪, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭

টাকার জন্য অপহরণ করা হয়েছিল- বাড়ি ফিরে জানান সিজার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিখোঁজের দীর্ঘদিন পর হদিস মিলেছে বেসরকারী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোবাশ্বার হাসান সিজারের। তাকে টাকার জন্য অপহরণ করা হয়েছিল। তাকে এয়ারপোর্ট রোডের কোন এক জায়গায় চোখ বাঁধা অবস্থায় গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। তাকে একটি নোংরা রুমে রাখা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাত একটার দিকে সিজার বাসায় ফেরেন। শুক্রবার সকালে মোবাশ্বার হাসান সিজার রাজধানীর বনশ্রীর নিজ বাসার সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, গত ৭ নবেম্বর তিনি আগারগাঁওয়ের ইউএনডিপি ভবন থেকে বের হয়ে উবারে গাড়ি পাওয়ার জন্য মোবাইল ফোন করছিলেন। উদ্দেশ্য রোকেয়া সরণির দিকে যাওয়া। যথারীতি তিনি গাড়িতে ওঠেন। এরই মধ্যে কয়েকজন এসে তার গাড়ি থামায়। তারা বলে গাড়িটি চোরাই। তিনি নেমে অন্য গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এমন সময় পেছন থেকে কেউ একজন তার চোখে কিছু একটা লাগিয়ে দেয়। এরপর ধাক্কা দিয়ে গাড়িতে তোলে। একটি কাপড় দিয়ে মুখ চেপে ধরে। এরপর ‘আমার জ্ঞান হারিয়ে যায়’। দীর্ঘ সময় পর ঘুম থেকে উঠি। উঠেই দেখেন তিনি একটি কক্ষে। হাত পেছনে বাঁধা। রুমে ময়লা একটা তোশক। ঘরের জানালা আছে কিন্তু বাইরে থেকে বন্ধ। পাশে আরেকটি রুম আছে। ওই রুমে চার-পাঁচজনকে কথা বলতে শোনা যেত। ওই রুমেই ছিলেন সিজার। জানান হোটেল থেকে আনা ঠা-া খাবার দেয়া হয়েছিল তাকে। তাকে তার পরিচিত এমন কেউ আছে কিনা, যে অপহরণকারীদের টাকা দিতে পারবে? এমন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তার কাছে সরাসরি টাকা চায়নি। অন্য যাদের অপহরণ করা হয়েছিল, তাদের পরিবারের কাছে টাকা চেয়েছিল অপহরণকারীরা। তাকে যে রুমে রাখা হয়েছিল, সেখানে টাকা-পয়সা নিয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে। তার কাছে ২৭ হাজার টাকা ছিল, তা নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। মোবাশ্বের বলেন, তিনি অনেকদিন পর দিনের আলো দেখলেন। ছেড়ে দেয়ার আগে অপহরণকারীরা তাকে একটা গাড়িতে বসায়। এক থেকে দেড় ঘণ্টা গাড়িটা চলে। চোখ গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল। পুরো সময় তাকে একজনের কোলে শুইয়ে রাখা হয়েছিল। এক সময় নামিয়ে দেয়। পেছনে তাকালে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। নামার পর জায়গাটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা বলে নিশ্চিত হয়। সেখান থেকে সিএনজি নিয়ে বাসায় ফিরি। কাছে কোন টাকা ছিল না। পিতা সিএনজি ভাড়া দেয়। সিএনজিতে ওঠার পর চালকের ফোন থেকেই বাবাকে ফোন দিই। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে মোবাশ্বার বলেন, আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি নতুন জীবন পেয়েছি। মোবাশ্বার হাসানের বোন তামান্না তাসমিন বলেন, তার ভাই ফিরে এসেছে এতেই তারা খুশি। এ বিষয়ে তাদের কোন অভিযোগ বা প্রশ্ন নেই। এর আগে গত ২৩ আগস্ট দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের খানা বাসমতি রেস্টুরেন্টের সামনে থেকে বেসরকারী আইএফআইসি ব্যাংকের কর্পোরেট কমিউনিকেশন্স ও ব্র্যান্ডিং বিভাগের এ্যাসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট শামীম আহমেদ অপহৃত হয়েছিলেন। বেশ কিছু দিন পর তার হদিস মেলে। সম্প্রতি নিখোঁজের প্রায় আড়াই মাস পর হদিস মেলে সাংবাদিক উৎপল দাশের।
×