ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আফগানিস্তানে ঝটিকা সফর

সন্ত্রাসে মদদ ॥ পাকিস্তানকে ফের সতর্ক করলেন পেন্স

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭

সন্ত্রাসে মদদ ॥ পাকিস্তানকে ফের সতর্ক করলেন পেন্স

সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয় দানের জন্য পাকিস্তানকে আবারও সতর্ক করলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল রিচার্ড পেন্স। ডন নিউজ। বৃহস্পতিবার তিনি এক ঝটিকা সফরে আফগানিস্তানের কাবুল সফর করেন। এ সময় তিনি আফগান নেতৃবৃন্দসহ কাবুলের বাগরাম বিমান ঘাঁটিতে মার্কিন সেনা কর্মকর্তাদের সাক্ষাত করেন। বাগরাম বিমান ঘাঁটিতে এক বক্তব্যে পেন্স বলেন, পাকিস্তানকে আফগানিস্তানে মার্কিন স্বার্থসমূহে হামলাকারী তালেবান গোষ্ঠী ও অন্যান্য মিলিশিয়া বাহিনীকে নিরাপদে আশ্রয় দান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে পাকিস্তানের অনেক কিছুই পাওয়ার আছে, একই সঙ্গে সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়ায় দেশটি অনেক কিছু হারাতেও হতে পারে। এ সময় তিনি পাকিস্তানের উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সতর্কবার্তা পুনরায় স্মরণ করিয়ে দেন। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অংশ হিসেবে আফগানিস্তানে বর্তমানে প্রায় ১৫ হাজার মার্কিন সেনা উপস্থিত আছে। বাগরাম বিমান ঘাঁটিতে দেয়া বক্তব্যে মার্কিন সেনাদের তাদের আত্মত্যাগ ও সেবার জন্য ধন্যবাদ জানান মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স। এ সময় তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তানের স্বাধীনতার জন্য মার্কিন বাহিনী দেশটিতে কি করছে তা জানার অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের আছে। তিনি বলেন, আফগান সহযোগীদের সঙ্গে একান্ত হয়ে তারা দেশটিতে সন্ত্রাস দূর করতে আগের চেয়ে অনেক বেশি বিমান আক্রমণ করছেন। যেখানেই তারা লুকিয়ে থাকুক না কেন, সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে তালেবানরা এখন দেশটিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে সন্ত্রাসের পেছনে অর্থায়ন বন্ধে তিনি দেশটির মাদক উৎপাদন এবং তা পাচারে জড়িতদের নিশ্চিহ্ন করার আহ্বান জানান। গোটা আফগানিস্তানেই মার্কিন বাহিনীর সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের সুফল আসতে শুরু করেছে। আফগান জনগণের উদ্দেশে পেন্স বলেন, আমরা একসঙ্গে বহুবছর বহুদূর পথ চলেছি, অনেক ত্যাগ করেছি, একসঙ্গেই এই সমস্যা নিরসন করব। তিনি মার্কিন সেনাদের আফগানিস্তানে উপস্থিতি নিয়ে কোন সংশয়ে না থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থেই তাদের এদেশে অবস্থান করা জরুরী। পরে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা সংখ্যা আগামীতে আরও বাড়তে পারে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মাইকেল পেন্স বলেন, বিষয়টি এখানে দায়িত্বরত সেনাপ্রধানের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। নাইন ইলেভেনের হামলার পর ২০০১ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের নির্দেশে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা অভিযান শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মেয়াদের শেষের দিকে আফগানিস্তানে ৮ হাজার ৪০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন ছিল। অথচ ২০১১ সালেই এই সংখ্যা ছিল অন্তত এক লাখ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার আগে ট্রাম্প নিজেই আফগানিস্তানে সেনা মোতায়েনের বিরোধিতা করেছিলেন। সে সময় তিনি একে অর্থ অপচয় বলে দাবি করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে অবশ্য সুর পাল্টেছেন তিনি। চলতি বছরই ফোর্ট মাইয়ারে দেয়া এক ভাষণে আফগানিস্তানে সেনা সংখ্যা বাড়ানোসহ তাদের উপস্থিতি দীর্ঘায়িত করার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের আশঙ্কা, সময়সীমা অক্ষুণœ রাখতে গিয়ে বিজয় নিশ্চিত হওয়ার আগেই যদি আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করা হয় তবে সেখানে শূন্যতা সৃষ্টি হবে। আর সেটি পূরণ করবে সন্ত্রাসীরা। ট্রাম্প জানান, কিছু শর্তের ভিত্তিতে তারা আফগানিস্তান ইস্যুতে কৌশল নির্ধারণ করবেন, তবে সেনা সরিয়ে নেয়ার কোন সময়সীমা ঘোষণা করা হবে না।
×