ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনের ফল নিয়ে অনিশ্চয়তা

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭

নির্বাচনের ফল নিয়ে অনিশ্চয়তা

স্পেনের কাতালোনিয়া রাজ্যে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে স্বাধীনতাকামী দলগুলো বেশি আসন পেলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। রাজ্যের ক্ষমতাচ্যুত নেতা কার্লেস পুজদামন দলগুলোকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। মাদ্রিদপন্থী একটি দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। এর ফলে রাজ্যটিতে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিবিসি ও ওয়েবসাইট। স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা পুজদামন ব্রাসেলস থেকে বলেছেন, ‘কাতালান রিপাবলিকের’ জন্য নির্বাচনের ফল একটি বড় জয়। তিনি বলেন, এই নির্বাচনে স্পেন পরাজিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানা রাহয় ও তার জোট শরিকরা হেরে গেছেন। পুজদামন দাবি করেন, কাতালোনিয়ার ‘বৈধ’ সরকারকে এখন পুনর্বহাল করতে হবে এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো তুলে নিতে হবে। রাজ্য পার্লামেন্টে স্বাধীনতাকামী দলগুলো সামান্য ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। এ নির্বাচনের ফল নিয়ে কেউ বিতর্ক করবেন না বলেও পুজদামন আশা প্রকাশ করেন। বিদ্রোহ ও সহিংসতায় প্ররোচনা দেয়ার দায়ে মামলা হওয়ার পর পুজদেমন এখন বেলজিয়ামে স্বেচ্ছা নির্বাসনে রয়েছেন। মামলার কারণে তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না। ব্রাসেলস থেকে পুজদামন বলেছেন, তাকে গ্রেফতার করা হবে না বলে স্পেন সরকার নিশ্চয়তা দিলে তিনি নিজ দেশে ফিরতে রাজি আছেন। বিবিসি জানিয়েছে, স্বাধীনতাকামী দলগুলো অর্ধেকেরও বেশি আসনে জিতেছে। স্পেনের সঙ্গে থাকতে চাওয়া সিটিজেনস পার্টি (সিউদাদানোস) একক দল হিসেবে ৩৭টি আসন পেলেও তাদের পক্ষে সরকার গঠন করা কঠিন হবে। বৃহস্পতিবার রাতে আঞ্চলিক রাজধানী বার্সেলোনায় সিউদাদানোস সমর্থক ভিভা এসপানা বা স্পেন বেঁচে থাকুক সেøাগানে মুখরিত করে তোলে। নির্বাচনের এই ফল কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের দূরত্ব আরও বাড়াবে। কারা সরকার গঠন করতে যাচ্ছে তাও অনিশ্চিত। স্বাধীনতা ইস্যুতে ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গণভোটের পর মাদ্রিদ সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক বিবাদে জড়িয়েছিল কাতালোনিয়া। ওই গণভোটকে অবৈধ অ্যাখ্যা দেয় স্পেন সরকার। ভোটে স্বাধীনতার পক্ষে রায় পড়ায় ২৭ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিল আঞ্চলিক পার্লামেন্ট। এর প্রতিক্রিয়ায় ওই রাজ্যের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেয় মাদ্রিদ। আঞ্চলিক পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করে সেখানে নতুন নির্বাচনের ডাক দেয়। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ভোটেও শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতাকামীরা এগিয়ে যায়। ৯৯ শতাংশ ভোট গণনার পর দেখা গেছে, পুজদামনের টুগেদার ফর কাতালোনিয়া (জেএক্সক্যাট) ৩৪টি আসন, স্বাধীনতাকামী রিপাবলিকান লেফট অব কাতালোনিয়া (ইআরসি) ৩২টি আসন ও পপুলার ইউনিটি ক্যান্ডিডেসি ৪টি আসন পেয়েছে। ১৩৫ আসনের মধ্যে স্বাধীনতাকামী দলগুলো সব মিলিয়ে মোট ৭০টি আসনে জয়ী হয়েছে। ২৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জেনস পার্টি (সিউদাদানোস) ৩৭টিতে জিতলেও তারা সরকার গঠন করতে পারবে না বলেই মনে হয়। তাদের বিরোধী আসনে বসার সম্ভাবনাই বেশি। সিউদাদানোসের প্রধান ইনেস আরিমাদা নিজেদের বিজয়ী দাবি করে বলেছেন, তারা অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে তৈরি আছেন। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল পিপলস পার্টি পেয়েছে মাত্র ৩ টি আসন। গত পার্লামেন্টেও দলটির ১১টি আসন ছিল। পুজদামনের দলের সমর্থক ৬৫ বছর বয়সী শিল্পী লরা ইনিয়েস্তা বলছিলেন, ‘কাতালোনিয়ার নির্বাচিত নেতাকে অপসারণের ‘কোন অধিকার’ মাদ্রিদের নেই। স্পেনের অংশ হিসেকে কাতালোনিয়ায় প্রতি মুহূর্তে আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি। ফ্যাসিস্ট রাহয় সরকার এখন সংলাপের পরিবর্তে শক্তি প্রয়োগের পথ বেছে নিয়েছে।’ অন্যদিকে মাদ্রিদের সমর্থক ৬৪ বছর বয়সী পেইন্টার কাল মাইয়োল বলেছেন, ‘যা ঘটে গেছে তা এক বিপর্যয়। কাতালোনিয়া থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমরা শেষ হয়ে যাব।’
×