ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হল জীবনের স্বাদ না পেয়েই শিক্ষা জীবন শেষ হচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭

হল জীবনের স্বাদ না পেয়েই শিক্ষা জীবন শেষ হচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরই স্বপ্ন থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থেকে শিক্ষা জীবন শেষ করা। কারও সেই স্বপ্ন পূরণ হয়, আবার অনেকের স্বপ্ন অধরায় রয়ে যায়। ঠিক সেরকমই যেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা শেষ করতে হচ্ছে হল জীবনের স্বাদ না পেয়েই। ২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন -২০০৫ পাসের মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ পায় জবি। প্রতিষ্ঠার এক দশক পার হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ। যেখানে হল ছাড়া একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অনেকাংশেই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। সেদিকে জবির শিক্ষার্থীদের এগিয়ে যেতে হচ্ছে এই আবাসন সঙ্কট, নিরাপত্তাহীনতা ও অর্থনৈতিক সঙ্কটকে সঙ্গে নিয়েই। হল না থাকায় শিক্ষার্থীদের কি ধরনের সমস্যা হচ্ছে সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় জবির অনেক শিক্ষার্থীদের কাছে। জবির ভূগোল পরিবেশ বিজ্ঞানের এক শিক্ষার্থী জেসমিন জুঁই জানায়, হল না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হয়ে ও তাকে থাকতে হচ্ছে মেসে। মেসে থাকা খাওয়া বাবদ প্রায় ৬-৭ হাজার টাকা খরচ হয় তার। মেসের ভাড়া নিয়ে পড়তে হয় নানা ঝামেলায়। প্রতিবছর ১-২ বার ভাড়া বাড়ায় মেস কর্তৃপক্ষ। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আরেক শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার বলেন, হল না থাকায় মেসের খরচ চালাতে অনেক টিউশনি করতে হচ্ছে তাকে। এতে করে একাডেমিক পড়াশোনায় খুব কম সময় পাচ্ছেন। একাডেমিক ফলাফল ও সে কারণে সন্তোষজনক হচ্ছে না তার। এ সকল কিছুর পেছনে হল না থাকার কারণকেই দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা। এত কিছুর পর ও এমন পরিবেশের সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করে টিকে থাকতে হচ্ছে জবির শিক্ষার্থীদের। অপরদিকে আবাসন সঙ্কট নিরসনে ইতোপূর্ব বহু পদক্ষেপ নিলেও তা তলিয়ে গিয়েছে নানা ব্যর্থতায়। এ নিয়ে বহুবার আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু স্থান সঙ্কট, প্রশাসনিক জটিলতায় কোন বাস্তব রুপ আজও মেলেনি। বিভিন্ন সময় আশ্বাস পাওয়া গেলেও বাস্তবে পরিণত হয়নি। অবশেষে টানা সাত বছরের আন্দোলনের বাস্তবরূপ নিতে যাচ্ছে জবির ছাত্রী হল নির্মাণ। শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বাংলা বাজার সরকারী কলেজের পাশেই শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে প্রথম ছাত্রী হল নির্মাণ। ১৬ তলা প্রস্তাবিত ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রী হল’ নামের এ আবাসিক হলের কাজ ১০ তলা পর্যন্ত ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৮ এর জুন মাসে হলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। হল নির্মাণে দায়িত্বরত কনস্ট্রাকশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার জিল্লুর রহমান জানান, সময়ের মধ্যে এই ভবনের কাজসম্পন্ন করা যাবে না তবে এর কাঠামো সম্পন্ন হবে। পরিপূর্ণভাবে এই কাজ শেষ হতে আরও তিন থেকে চার মাস সময় লাগবে। সময় লাগার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভবনের কাজ করার জন্য আশেপাশে যে পরিমাণ জায়গার প্রয়োজন সেই পরিমাণ পর্যাপ্ত জায়গা নেই। তাই এক পাশ থেকেই কাজ চালাতে হয়। ফলে একের অধিক কাজ করা যাবে না। হল নির্মাণের বিষয়ে উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘হলের দায়িত্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর রয়েছে। তাই আমরা এ বিষয়ে তেমন কিছুই জানি না। ২০১৮ এর জুনে আমাদের কাছে হস্তান্তর করবে।’
×