ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলা নাট্যসাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধ -সালাহ উদ্দিন মাহমুদ

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২২ ডিসেম্বর ২০১৭

বাংলা নাট্যসাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধ  -সালাহ উদ্দিন মাহমুদ

বাংলা সাহিত্যে নাটকের স্থানও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। দৃশ্যকাব্য হিসেবে নাটকের আবেদন দিন দিন বেড়েই চলছে। শুধু মঞ্চকেন্দ্রিক নাটকই নয়; টেলিভিশন আবিষ্কারের পর নাটকের প্রয়োজনীয়তা ভিন্ন মাত্রায় রূপান্তরিত হয়েছে। সে হিসেবে মঞ্চ বলি আর রেডিও বা টেলিভিশন বলি- নাটকের চাহিদাও বেড়েছে। জাতির ক্রান্তিলগ্নেও নাটককে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। প্রতিবাদ-প্রতিরোধ-সচেতনতা-সংগ্রামে নাটক হয়ে উঠেছে সমাজ বা রাষ্ট্র বদলের হাতিয়ার। তারই ধারাবাহিকতায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শ্রুতি নাটক, মঞ্চ নাটক এবং টিভি নাটক বিশাল ভূমিকা রেখেছে। এমনকি মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং চেতনা নতুন প্রজন্মের ভেতরে ছড়িয়ে দিতে নাটকের সবিশেষ প্রচেষ্টা উজ্জ্বল আভা হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। সাহিত্যের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, বাংলা নাট্যসাহিত্যের ইতিহাসের ক্রমবিকাশে দুশ’ বছরেরও বেশি সময় অতিক্রম করেছে বাংলা নাটক। সে যাত্রার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের অনুপ্রেরণা হিসেবে তৎকালীন মঞ্চ নাটক ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। তবে এ কথা সত্য যে, মঞ্চ নাটক স্বাধীনতার আগে যতটা এগিয়েছে, তার চেয়েও অনেক বেশি বিকশিত হয়েছে স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে। কারণ ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধকে অবলম্বন করে প্রায় অর্ধশতাধিক নাটক রচিত হয়েছে। যেগুলোতে স্থান পেয়েছে রণাঙ্গনের মুক্তিযুদ্ধ, পাকিস্তানি সেনাদের হাতে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, ধর্ষিত ও নির্যাতিতের আর্তনাদ, বাঙালির অকুতোভয় সংগ্রাম, মুক্তির নেশায় অবিরাম পথচলা আর বীরত্বগাথাসহ বাঙালির চিরশত্রু ঘৃণিত রাজাকার, আল বদর, আল শামস তথা পাকিস্তানি নরপশুদের অমানবিক নিষ্ঠুরতার লোমহর্ষক নানা চিত্র। তখন দেশি নাট্যকারদের পাশাপাশি বিদেশি বহু নাট্যকারের বিপ্লবী নাটক অনুবাদ ও রূপান্তরের মাধ্যমে উপস্থাপন করে মুক্তিকামী বাঙালিকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। বলতে গেলে, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বিকশিত শিল্প মাধ্যম হচ্ছে মঞ্চ নাটক। যুদ্ধ ফেরত একদল তেজী তরুণের পদভারে মুখরিত হয়েছিল নাট্যাঙ্গন। তাঁদের অকৃত্রিম শ্রম, সৎসাহস এবং নিবিড় পরিচর্যায় একের পর এক অসাধারণ নাটক সৃষ্টি হয়েছে। তখন থেকে নব্বই দশক পর্যন্ত মঞ্চ নাটকে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ। তবে সে সময়ে দু’একটি মুক্তিযুদ্ধের নাটক আলোচিত হলেও সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট নিয়ে নাটক হয়েছে তুলনামূলক বেশি। বাংলাদেশের নাট্যমঞ্চে বিভিন্ন সময়ে আলোড়ন তুলেছে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক নাটক। সে সব নাটকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাটক হচ্ছে পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়, সময়ের প্রয়োজনে, কথা ৭১, লাল জমিন, বিদেহ, আমি বীরাঙ্গনা বলছি, টার্গেট প্লাটুন, ক্ষ্যাপা পাগলার প্যাঁচাল, জিয়ন্তকাল, যুদ্ধ এবং যুদ্ধ, জয় জয়ন্তী, একাত্তরের পালা, মুখোশ, কিংশুক, যে মরুতে, বিবিসাব, সময়ের প্রয়োজনে, খারন্নি, বলদ প্রভৃতি। তবে নূরলদীনের সারাজীবন, কোর্ট মার্শাল, সাতঘাটের কানাকড়ি ইত্যাদি নাটককেও মুক্তিযুদ্ধের নাটক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এতে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের কথা না থাকলেও চেতনা প্রবাহমান রয়েছে। পাশাপাশি পরবর্তী সময়ে মামুনুর রশীদ রচিত ‘সমতট’, মমতাজ উদ্দিন আহমদের ‘কি চাহ শঙ্খচিল’, ও ‘রাজা অনুস্বারের পালা’, সৈয়দ শামসুল হকের ‘তোরা জয়ধ্বনি কর’, আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘তোমরাই’ ও ‘দ্যাশের মানুষ’, মান্নান হীরার ‘একাত্তরের ক্ষুদিরাম’ ও ‘ফেরারি নিশান’, নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর ‘ঘুম নেই’, নীলিমা ইব্রাহিমের ডায়েরি অবলম্বনে ‘শামুক বাস’, শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’ থেকে নির্বাচিত অংশ অবলম্বনে শ্রুতি নাটক ‘স্মৃতিসত্তা ভবিষ্যত’, হুমায়ূন আহমেদের ‘১৯৭১’, শান্তনু বিশ্বাসের ‘ইনফরমার’, সেলিম আল দীনের ‘নিমঞ্জন’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এসব নাটকে শুধু বাংলাদেশের মুক্তির কথাই বলা হয়নি; সমগ্র পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের ইচ্ছার কথা বলা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বিশ্বজুড়ে গণহত্যার দলিল উপস্থাপিত হয়েছে। এছাড়াও যুদ্ধের আগে মঞ্চস্থ হওয়া ‘এবারের সংগ্রাম’ ও ‘স্বাধীনতার সংগ্রাম’ নাটকও উল্লেখযোগ্য। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কেটে গেছে চারটি দশক। সব মিলিয়ে এই চার দশকে সারা দেশের বিভিন্ন নাট্যদল মঞ্চে এনেছে আনুমানিক পাঁচ শতাধিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক। শুধু তা-ই নয়, কেবল ২০১৩ সালেই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পৃষ্ঠপোষকতায় সারা দেশে কলেজ পর্যায়ে মঞ্চে এসেছে শতাধিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক। বাংলা নাটকের ইতিহাসে এটি একটি যুগান্তকারী অধ্যায়। এ ছাড়া সরকারী অনুদানে বিভিন্ন নাট্যদল মঞ্চে এনেছে ত্রিশটির মতো নাটক। এছাড়া বিভিন্ন নাট্যদল সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই নিজেদের অর্থায়নে অনেক নাটক মঞ্চে এনেছে শুধু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য। এত কিছুর পরও কেউ কেউ বলেছেন নাটকে মুক্তিযুদ্ধ শৈল্পিকভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে না। মুক্তিযুদ্ধের আবেগকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে নাটক হয়ে উঠেছে স্লোগাননির্ভর। কেউ আবার বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ তো স্লোগানেরই ফসল। নাট্যজনদের বক্তব্যে উঠে এসেছে মঞ্চ নাটকে জাতি গঠনের যুদ্ধ ও তার রূপায়নের সঙ্গে শিল্পমানের সম্পর্ক নিয়ে। ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউটের সাম্মানিক সভাপতি রামেন্দু মজুমদার বলেছেন, ‘চার দশকের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাট্যচর্চা যেমন সমৃদ্ধ হয়েছে; তেমনি আমাদের স্বপ্ন বিস্মৃতও হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা বেড়েছে। আমরা মনে করছি, আরও শৈল্পিকভাবে নাটকে মুক্তিযুদ্ধ আসতে পারে। এ প্রজন্মের অনেক নির্দেশকের হাতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটকের নবরূপায়ণ ঘটছে।’ নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আতাউর রহমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশের নাট্যচর্চা একটা অহংকার করার মতো পর্যায়ে এসেছে। তবে চুয়াল্লিশ বছরে নাট্যচর্চায় মুক্তিযুদ্ধ কতটা শিল্পোত্তীর্ণ হতে পেরেছে; সেই বিচার করাটা কঠিন। মুক্তিযুদ্ধ একটি মহাকাব্য। তার সবটুকু কোন কালেই নাটকে তুলে আনা সম্ভব নয়। ভিন্ন ভিন্ন গল্প নিয়ে এখন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক তৈরি হচ্ছে। এভাবেই মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাট্যচর্চা আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে।’ নাট্যবোদ্ধারা মনে করেন, এ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের ওপর যে সব নাটক লেখা হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাটক হচ্ছে সৈয়দ শামসুল হকের ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’। নাটক হিসেবে এটি সফলতম একটি নাটক। মুক্তিযুদ্ধের ওপর এমন সাহিত্য-শিল্পমানসম্পন্ন নাটক বা সাহিত্যকর্ম এর আগে বা পরে দৃষ্টিগোচর হয়নি। সুসাহিত্য হতে হলে উপমা, রুপক, চিত্রকল্প, প্রতীকীব্যঞ্জনা ইত্যাদির প্রয়োজন। নাট্যকার সফলভাবে তা ব্যবহার করেছেন। নাটকটির আরও একটি বিশেষ দিক হচ্ছে যা নাট্যকার শেষ দৃশ্যে নিজেই আলোর নির্দেশনা দিয়েছেন, যা বিশেষ ইঙ্গিত বহন করে। সবশেষে আলো স্থির হয় পতাকার ওপর। কারণ এই পতাকার জন্যই যুদ্ধ। আর যুদ্ধের বিভীষিকা নিয়েই এ অমর নাটক। পাশাপাশি মমতাজ উদ্দীন আহমেদের ‘স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা’, ‘এবারের সংগ্রাম’, ‘স্বাধীনতার সংগ্রাম’ এবং ‘বর্ণচোর’ নাটকেও পাকিস্তানি শোষকদের অত্যাচার-নির্যাতনের কথা তুলে ধরা হয়েছে। ‘বর্ণচোর’ নাটকে তিনি রাজাকার, আল বদরদের বিশ্বাসঘাতকতার চিত্র সুনিপুণভাবে অঙ্কন করেছেন। তাঁর ‘কি চাহ শঙ্খচিল’ নাটকটিও পাকিস্তানি হায়েনাদের নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের নিষ্ঠুর বর্বরতা নিয়ে রচিত। আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘তোমরাই’, ‘দ্যাশের মানুষ’ ও ‘বিবিসাব’ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক। তিনি তাঁর নাটকের মধ্যে বিপথগামী তরুণদের স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে সচেষ্ট ছিলেন। স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের বিরুদ্ধে তার ক্ষোভ ফুটে উঠেছে। তাদের প্রতিহত করার জন্য তিনি সচেতন মানুষের আরেকটি সংগ্রামের আহ্বান জানিয়েছেন নাটকের মধ্য দিয়ে। তাঁর নাটকের বিষয়বস্তু এখনও মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছে। তাই আশা করা যায়, ভবিষ্যতেও মানুষের চেতনাকে জাগ্রত করবে। ফলে বলাই যায় যে, আব্দুল্লাহ আল মামুন জনগণকে অনুপ্রাণিত করতে সফল হয়েছেন। সমকালে এসেও মামুনুর রশীদের ‘সমতট’ ও ‘জয় জয়ন্তী’ নাটকে মুক্তিযুদ্ধ এবং তৎকালীন প্রেক্ষাপটের চিত্র পাওয়া যায়। তবে সেগুলো পরিপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক বলা যায় না। কারণ তিনি নাটকে শ্রেণী বৈষম্যের কথা বলতে চেয়েছেন। বলতে চেয়েছেন ১৯৭১ পরবর্তী জনজীবনের নানাবিধ ঘটনা। যেখানে বামপন্থী কোন রাজনৈতিক ভাবধারার ইঙ্গিত সুস্পষ্ট। জয় জয়ন্তীতে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত চিত্র আঁকতে চেয়েছেন। তাই দুটি নাটকেই তিনি অনেক ঘটনার সমাহার করতে গিয়ে কোনটিই শক্তিশালীরূপে দাঁড় করাতে ব্যর্থ হয়েছেন। অপরদিকে নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু রচিত ‘একাত্তরের পালা’ একটি পূর্ণ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক। যদিও নাটকটি সাহিত্য হিসেবে সমৃদ্ধ নয়। তবুও বিষয়বস্তুগত দিক থেকে এটি জনগণকে সচেতন করার জন্য যথেষ্ট। তাঁর আরেকটি নাটকের কথা বলা যায়, তা হলো ‘ঘুম নেই’। এতে তিনি শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের কথা বলেছেন। শহীদদের জাগিয়ে তুলেছেন। তবে মুক্তিযুদ্ধ ও প্রতিবাদী নাটকের ক্ষেত্রে সম্প্রতি মান্নান হীরা রচিত ‘লাল জমিন’, মামুনুর রশিদের ‘টার্গেট প্লাটুন’ ও ‘ভঙ্গবঙ্গ’, বাবুল বিশ্বাসের ‘পোড়ামাটি’ নাট্যাঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন তুলতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন নাটকে বিভিন্নভাবে উঠে এসেছে মহান মুক্তিযুদ্ধ তথা দেশাত্মবোধের অপার চেতনা। মঞ্চ নাটকের পাশাপাশি টিভি নাটকেও মুক্তিযুদ্ধ এসেছে বহুবার। বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বেসরকারী টেলিভিশনগুলোর কল্যাণে নাট্যকার এবং নাট্যনির্মাতারা অনেক নাটক উপহার দিয়েছেন। বিশেষ করে স্বাধীনতা দিবস এবং বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রতিবছরই নির্মিত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার হওয়া প্রথম নাটকটি মুক্তিযুদ্ধের। ‘বাংলা আমার বাংলা’র নাট্যকার ড. ইনামুল হক, প্রযোজক আবদুল্লাহ আল মামুন। ১৯৭২ সালের মধ্যবর্তী সময়ের আলোচিত মুক্তিযুদ্ধের নাটক ‘জনতার কাছে আমি’। আমজাদ হোসেনের লেখা নাটকটি মুস্তাফিজুর রহমান পরিচালনা করেন। এ সময়ের আরেকটি উল্লেখযোগ্য নাটক ‘এরা ছিল এধারে’ মোর্শেদ চৌধুরীর লেখায় প্রযোজনা করেছিলেন মোহাম্মদ বরকতউল্ল্যাহ। ১৯৭৩ সালে জেসমিন চৌধুরীর লেখা ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ নাটকটি প্রযোজনা করেন আবদুল্লাহ ইউসুফ ইসাম। শুধু তা-ই নয়, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে টিভি নাটকে মুক্তিযুদ্ধ এসেছে বহুবার। তারই ধারাবাহিকতায় আলোচিত টিভি নাটকের মধ্যে আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘আয়নায় বন্ধুর মুখ’ ও ‘একটি যুদ্ধ অন্যটি মেয়ে’, আসাদুজ্জামান নূরের ‘এ মোর অহংকার’, রাহাত খানের ‘সংঘর্ষ’, আল মনসুরের ‘শেকল বাঁধা নাও’ ও ‘নয়ন সমুখে তুমি নাই’, আতিকুল হক চৌধুরীর ‘যদিও দূরের পথ’ ও ‘স্বর্ণতোড়ন’, মামুনুর রশীদের ‘খোলা দুয়ার’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তাই দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, বাংলা নাট্যসাহিত্যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ চির সমুজ্জ্বল হয়ে থাকবে।
×