ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এনসিএলে রংপুরের নাসির হোসেনের সেঞ্চুরি

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০১৭

এনসিএলে রংপুরের নাসির হোসেনের সেঞ্চুরি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়ালটন জাতীয় ক্রিকেট লীগের (এনসিএল) ষষ্ঠ বা শেষ রাউন্ডে দুর্দান্ত খেলছে খুলনা। বুধবার প্রথমদিনে সাত উইকেট নেয়া মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতেই শিরোপার সুবাতাস পেয়েছে। বৃহস্পতিবার এনামুল হক বিজয় (১৬৭*) ও মেহেদী হাসানের (১৬৮*) অসাধারণ ব্যাটিংয়ে সেই স্বপ্ন যেন সফল হওয়ার দ্বারপ্রান্তে আছে। এখন শুধু খেলা শেষ হওয়ার অপেক্ষা মাত্র। শিরোপা উৎসব করে ফেলবে খুলনা। দ্বিতীয়দিন শেষেই যে ঢাকা বিভাগ থেকে ২৫৭ রানে এগিয়ে রয়েছে খুলনা। খুলনার শিরোপা জেতার সামনে কাটা হয়ে ছিল ঢাকা। দলটি সেই রেস থেকে ছিটকে পড়েছে। এই রেসে ছিল রংপুর ও বরিশালও। এ দুই দলের যে অবস্থা তাতে ম্যাচ ড্র’র পথে হাঁটতে পারে। বরিশাল প্রথম ইনিংসে ৩৩৫ রান করার পর নাসির হোসেনের (১০১*) সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৬৪ রান করেছে রংপুর। এখনও রংপুর ৭১ রানে পিছিয়ে রয়েছে। তবে ম্যাচটি ড্র’র দিকেই হাঁটছে। তাই যদি হয়, তাহলে খুলনার ক্রিকেটারদের হাতেই শিরোপা দেখা যাবে। প্রথম স্তর বিকেএসপিতে খুলনা প্রথমদিনই বাজিমাত করে। ঢাকাকে ১১৩ রানে অলআউট করে দেয়। এরপর খুলনা ব্যাট করতে নেমে ২৩ রান করে ৯০ রানে পিছিয়ে থাকে। দ্বিতীয়দিন ১টি উইকেট হারিয়ে ৩৭০ রান করে খুলনা। বিজয় ও মেহেদী মিলে ২৮১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন। বিজয় ২০৬ বলে ১৮ চার ও ৪ ছক্কায় অপরাজিত ১৬৭ রান করেন। মেহেদীর ব্যাট থেকে আছে ১৫১ বলে ২০ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ১৬৮ রান নিয়ে। মেহেদী দ্রুত রান তোলেন। তাতে করে মিরাজের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর বিজয় ও মেহেদী যেন রান উৎসবে মাতেন। ৬৮ ওভারেই এ বিশাল রান করে ফেলে খুলনা। এই ধারা বজায় থাকা মানেই যে শিরোপা উৎসবেও মাতা হবে। আজ বিজয় ও মেহেদী মিলে তৃতীয়দিনের খেলার শুরু করবেন। প্রথম ইনিংসে ঢাকা যেভাবে ধসে পড়েছে তাতে খুলনা ম্যাচটি জিতেও যেতে পারে। জিতেই হয়তো শিরোপা স্বপ্ন পূরণ করবে দলটি। ঢাকার বাজে অবস্থা যদি দ্বিতীয় ইনিংসেও দেখা যায় আর ম্যাচ হারে তাহলে দ্বিতীয় স্তরে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে ঢাকার। চট্টগ্রামে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বরিশালের শিরোপা জেতার আশা আর নেই বললেই চলে। সেই আশা পূরণ করতে হলে আগে জিততে হবে। কিন্তু প্রথমদিনই ৬ উইকেট হারিয়ে ২৮০ রান করার পর দ্বিতীয়দিন ৩৩৫ রান করতেই গুটিয়ে যায় বরিশাল। এরপর ব্যাট করতে নেমে ১৬৭ বলে ১২ চার ও ২ ছক্কায় নাসির হোসেনের করা অপরাজিত ১০১ রানের সুবাদে ৪ উইকেট হারিয়ে রংপুর ২৬৪ রান করে। খেলার যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে করে ম্যাচটি ড্র হওয়ার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। তাই যদি হয় তাহলে বরিশালের সেই স্বপ্ন শেষ হওয়ার সঙ্গে রংপুরেরও আশা শেষ বলা চলে। তবে প্রথম স্তর থেকে যে একটি দল পয়েন্ট তালিকার নিচে থেকে দ্বিতীয় স্তরে নেমে যাবে, সেখান থেকে বরিশাল ও রংপুর, দুই দলই বেঁচে যেতে পারে। দ্বিতীয় স্তর রাজশাহীতে শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। একাই ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন। তবে এরপরও ঢাকা মেট্রে প্রথম ইনিংসে ৩২৮ রান করেছে। বুধবার ৪ উইকেট হারিয়ে ২১০ রান করেছিল ঢাকা মেট্রো। বৃহস্পতিবার ৩২৮ রান করতেই অলআউট হয়ে যায়। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে বিনা উইকেটে ৯৫ রান করে রাজশাহী। মিজানুর রহমান অপরাজিত ৪৭ ও নাজমুল হোসেন অপরাজিত ৪৩ রান করেন। আজ তৃতীয়দিন এই দুইজন ব্যাট হাতে নামবেন। এখনও রাজশাহী ২৩৩ রানে পিছিয়ে আছে। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুইদিন যেতেই হারের শঙ্কায় পড়েছে সিলেট। চট্টগ্রামে প্রথম ইনিংসে ২১৫ রানে অলআউট হওয়ার পর সিলেটও প্রথম ইনিংসে ১৩৭ রানে গুটিয়ে যায়। ইফতেখার সাজ্জাদ রনি ৫ উইকেট শিকার করেন। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান করে চট্টগ্রাম। ২৬৭ রানে এগিয়ে রয়েছে চট্টগ্রাম। প্রথম ইনিংসে যে অবস্থা দেখা গেছে সিলেটের, দ্বিতীয় ইনিংসেও তাই হলে চট্টগ্রামই ম্যাচটি জিততে চলেছে বলা চলে। স্কোর ॥ প্রথমদিন শেষে ঢাকা-খুলনা ম্যাচ বিকেএসপি ঢাকা প্রথম ইনিংস ১১৩/১০ (৩৮.৪ ওভার; রকিবুল ২৮, শুভাগত ২১; মিরাজ ৭/২৪)। খুলনা প্রথম ইনিংস প্রথমদিন ২৩/০; বিজয় ১২*, সৌম্য ১১* এবং দ্বিতীয়দিন ৩৭০/১ (৬৮ ওভার; বিজয় ১৬৭*, সৌম্য ৩০, মেহেদী ১৬৮*)। রংপুর-বরিশাল ম্যাচ চট্টগ্রাম বরিশাল প্রথম ইনিংস প্রথমদিন ২৮০/৬ (সোহাগ ৯৯, আল-আমিন ৫০, নুরুজ্জামান ৫১*, মোসাদ্দেক ৩৫; শুভাশীষ ২/৩১ এবং দ্বিতীয়দিন ৩৩৫/১০ (৯৩.৫ ওভার; নুরুজ্জামান ৫৮, রাব্বি ২২*; তানভির ৩/৫৩)। রংপুর প্রথম ইনিংস ২৬৪/৪ (৭৬ ওভার; নাসির ১০১*, নাঈম ৫৪, আরিফুল ৩৪*; মনির ৩/৬৯)। রাজশাহী-ঢাকা মেট্রো ম্যাচ রাজশাহী ঢাকা মেট্রো প্রথম ইনিংস প্রথমদিন ২১০/৪ (সাদমান ৭৫, মার্শাল ৬৭, আশরাফুল ২২*, মেহরাব জুনিয়র ২২*; তাইজুল ৩/৬৭ ও দ্বিতীয়দিন ৩২৮/১০ (৯০.৩ ওভার; আশরাফুল ২২, মেহরাব জুনিয়র ৩৯, জাবিদ ৩৬, হায়দার ২৭*; তাইজুল ৫/১০৫)। রাজশাহী প্রথম ইনিংস ৯৫/০ (২০ ওভার; মিজানুর ৪৭*, নাজমুল ৪৩*)। চট্টগ্রাম-সিলেট ম্যাচ সিলেট চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংস ২১০/১০ (৬৭.৪ ওভার; ইয়াসির ৮১, সাদিকুর ৪৬, তাসামুল ৩৮; আবুল ৩/৩৪, এনামুল জুনিয়র ৩/৪৪ ও দ্বিতীয় ইনিংস ১৮৯/৫; ৫৪.৪ ওভার (জসিম ৫৬, সাদিকুর ৫৪, ইয়াসির ১৪*, সাইদ ১৩*; এবাদত ২/৪২)। সিলেট প্রথম ইনিংস প্রথমদিন ৫৪/৩ (১৮.১ ওভার; (ইমতিয়াজ ১৯, সায়েম ১৬*, শানাজ ১০, রাজিন ৪* ও দ্বিতীয়দিন ১৩৭/১০ (৪৯.৪ ওভার; আবুল ২৭, সায়েম ২৬, রাজিন ২৬; রনি ৫/৪৩)।
×