ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশের মেয়েরা

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ২২ ডিসেম্বর ২০১৭

ভারতকে উড়িয়ে দিল  বাংলাদেশের মেয়েরা

রুমেল খান ॥ জয়ের আনন্দ সবসময়ই মধুর, তা সেটা যে কোন পর্যায়ের জয়ই হোক না কেন। দক্ষিণ এশিয়ায় নারী ফুটবলে ভারত সবসময়ই সেরা দল। তাদের সিনিয়র দলকে আজও হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। বয়সভিত্তিক নারী ফুটবলের চিত্রটাও ছিল একই রকম। কিন্তু ২০১৫ সালে এসে সেটা বদলে যায় আমূল। এখন বাংলাদেশই ভারতে হারায় নিয়মিত, এই যেমন সর্বশেষ হারাল ৩-০ গোলে, বৃহস্পতিবার, কমলাপুর স্টেডিয়ামে, সাফ অ-১৫ মহিলা চাম্পিয়নশিপে। ২০১৫ সালে এএফসি অনুর্ধ-১৪ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে দু’বার হারিয়েছিল বাংলাদেশ। গ্রুপপর্বে ৩-১ এবং ফাইনালে ৪-০ গোলে। এবারও হারিয়ে তাদের হ্যাটট্রিক তেতো হারের স্বাদ উপহার দিল লাল-সবুজরা। এক ম্যাচ হাতে রেখে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছিল বাংলাদেশ-ভারত। তাই বৃহস্পতিবার এই ম্যাচের কোন গুরুত্ব ছিল না। এটা ছিল রাউন্ড রবিন লীগে উভয় দলেরই তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ। তারপরও দুই দলের কাছে ম্যাচটি ছিল মর্যাদার। যাতে জয়ী হয় গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যারা। এছাড়া একইদিনে একই ভেন্যুতে নেপাল বনাম ভুটান ম্যাচটি ড্র হয় ১-১ গোলে। রাউন্ড রবিন লীগে নিজেদের তিন খেলার প্রতিটিতেই জিতল বাংলাদেশ। ৯ পয়েন্ট পেয়ে তারাই হলো রাউন্ড রবিন লীগের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন। এর আগে তারা হারায় যথাক্রমে নেপালকে ৬-০ এবং ভুটানকে ৩-০ গোলে। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে এটা ভারতের প্রথম হার। ৬ পয়েন্ট নিয়ে তারা হলো রানার্সআপ। এর আগে তারা হারায় যথাক্রমে ৩-০ গোলে ভুটানকে এবং ১০-০ গোলে নেপালকে। নেপাল ও ভুটান ১ পয়েন্ট নিয়ে শেষ করলো আসর। ভারতের চেয়ে পয়েন্টে এগিয়ে থাকলেও মোট গোলে এখনও তাদের টেক্কা দিতে পারেনি বাংলাদেশ। ভারতের গোল যেখানে ১৩টি, সেখানে বাংলাদেশের গোল ১২টি। তবে বাংলাদেশ অন্যদিক দিয়ে ঠিকই পেছনে ফেলেছে ভারতকে। বাংলাদেশ এই আসরের একমাত্র দল, যারা এখনও কোন গোল হজম করেনি। বৃহস্পতিবারের ম্যাচে আরও অনেক গোলের ব্যবধানে জিততে পারতো বাংলার বাঘিনীরা। কিন্তু ভারত বহুবার বাংলাদেশকে অফসাইডের ফাঁদে ফেলে অনেক গোল প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয় বাংলাদেশের। বল নিয়ন্ত্রণ তাদেরই ছিল বেশি, প্রায় ৭০ শতাংশ। সবমিলিয়ে দাপটের সঙ্গে খেলেই জেতে বাংলাদেশ দল। ম্যাচে প্রথম কর্নার পায় বাংলাদেশ এবং তাতেই করে বাজিমাত। ডানপ্রান্ত দিয়ে মনিকার বটা পায়ের কর্নার। আনুচিংয়ের হেড। গোল (১-০)। চলতি আসরে এটা তার তৃতীয় গোল। ইনজুরি টাইমে (৪৫+২ মিনিটে) মিডফিল্ডার শামসুন্নাহারকে নিজেদের বক্সে ফাউল করে ভারতের ডিফেন্ডার পাকপি দেবী। শ্রীলঙ্কান রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। তা থেকে গোল করে শামসুন্নাহার। তবে সে আরেক শামসুন্নাহার। ডিফেন্ডার (২-০)। ৫৪ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় গোল করে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করে মনিকা চাকমা (৩-০)। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয় মনিকা। এ নিয়ে দু’বার ম্যাচসেরা হলো সে। প্রথমবার হয় নেপালের বিরুদ্ধে ম্যাচে। ভারত বলার মতো একটাও আক্রমণ শানাতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত দুর্দান্ত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। রাউন্ড রবিন লীগ পর্যায়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ। এখন আগামী ২৪ ডিসেম্বরের ফাইনালে কী আবারও ভারতকে হারিয়ে টুর্নামেন্টের অপরাজিত হতে পারবে বাংলাদেশ?
×