ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ফোর-জি লাইসেন্স আগামী মাসে, নিলামে বিদেশী দুই অপারেটর অংশ নিচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ২২ ডিসেম্বর ২০১৭

ফোর-জি লাইসেন্স আগামী মাসে, নিলামে বিদেশী দুই অপারেটর অংশ নিচ্ছে

ফিরোজ মান্না ॥ আগামী মাসে ফোর-জি লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে। চতুর্থ প্রজম্মের আধুনিক এই প্রযুক্তি সেবা চালু করতে ইতোমধ্যে বিটিআরসি গাইডলাইন তৈরি করেছে। দু’টি বিদেশী নতুন অপারেটর ফোর-জি তরঙ্গ নিলামে অংশ নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। বিটিআরসির সঙ্গে তারা যোগাযোগও করেছে। তবে এখনও তাদের সঙ্গে বিটিআরসির চূড়ান্ত কোন কথা হয়নি। ফোর-জি তরঙ্গ নিলামের বিষয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, আমরা ফোর-জি নিলাম করে জানুয়ারির শুরু থেকে লাইসেন্সের আবেদন আহ্বান করা হবে। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি দু’টি বিদেশী অপারেটর ফোর-জি সেবার লাইসেন্স ও তরঙ্গ নিলামে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা বিটিআরসির সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। তারা এখনও কোন চূড়ান্ত প্রস্তাব দেয়নি। এ কারণে বিটিআরসিও তাদের নিয়ে কিছু ভাবছে না। বিটিআরসি জানিয়েছে, ২০১৩ সালে থ্রিজি নিলামে বিদেশী অপারেটররা আগ্রহ দেখালেও শেষ পর্যন্ত কোন অপারেটর অংশ নেয়নি। সিটিসেল বন্ধ হয়ে যাওয়া কিছুদিন পরই রবি ও এয়ারটেল একীভূত হয়। এ কারণে দু’টি মোবাইল অপারেটর এখন আর অপারেশনে নেই। দেশে বর্তমানে চারটি মোবাইল অপারেটর সেবা দিচ্ছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে ১৬ কোটি মানুষের মোবাইল সিমের সংখ্যা ১৪ কোটি ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ দেশে মোবাইল গ্রাহক সংখ্যা ১৪ কোটি। ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ৮ কোটি ছাড়িয়েছে। এরমধ্যে মোবাইল ইন্টারনেটের সংখ্যা শতকরা ৯৫ ভাগ। বাকি ৫ ভাগ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছেন। ফোরজি তরঙ্গ নিলাম হবে ১৩ ফেব্রুয়ারি। আবেদনপত্র জমা নেয়া হবে আগামী ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফোর-জি সেবার জন্য বিটিআরসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফোর-জি লাইসেন্সের জন্য নিলাম হবে না। আবেদন করে নির্দিষ্ট অর্থ জমা দিয়ে লাইসেন্স নেয়া যাবে। অপারেটরদের আবেদন ফি হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা জমা দিতে হবে। লাইসেন্স পেতে হলে ১০ কোটি টাকা জমা দিতে হবে। আর বার্ষিক নবায়ন ফি ধরা হয়েছে ৫ কোটি টাকা। তবে এই লাইসেন্স নিতে অপারেটরদের ১৫০ কোটি টাকা ব্যাংক গ্যারান্টিও দিতে হবে। রেভিনিউ শেয়ারিংয়ে সরকারকে দিতে হবে আয়ের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ টাকা। সূত্র জানিয়েছে, মোবাইল অপারেটরগুলোকে ফোর-জি তরঙ্গ বরাদ্দ পেতে নিলামে অংশ নিতে হবে। নীতিমালা অনুযায়ী এক হাজার ৮০০ মেগাহার্টজের তরঙ্গ নিলামের ভিত্তিমূল্য ঠিক করা হয়েছে প্রতি মেগাহার্টজে ৩০ মিলিয়ন ডলার। আর থ্রি-জির জন্য দুই হাজার ১০০ মেগাহার্টজের প্রতি মেগাহার্টজ ২৭ মিলিয়ন ডলার ও ৯০০ মেগাহার্টজের প্রতি মেগাহার্টজের জন্য ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ভিত্তিমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আর টু-জি ও থ্রি-জি সেবার জন্য বরাদ্দ করা তরঙ্গে প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা পেতে (যাতে ওই তরঙ্গ যে কোনো প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা যায়) প্রতি মেগাহার্টজের জন্য চার্জ দিতে হবে। বিটিআরসির কাছে আপারেটররা ফোর-জির জন্য ২৩টি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। বিটিআরসি জানিয়েছে, অপারেটরদের সবগুলো বিষয়ই সমাধান করা হয়েছে। অপারেটরদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে আরও হবে। তবে নির্ধারিত সময়েই ফোর-জি লাইসেন্স বিতরণ ও তরঙ্গ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পর ফোর-জি সেবার লাইসেন্স ও তরঙ্গ নিলামের নীতিমালা গত ২৯ নবেম্বর হাতে পেয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
×