ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হুমকিতে সেতু ও জনপদ

মহানন্দায় থামছে না বালু উত্তোলন

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২২ ডিসেম্বর ২০১৭

মহানন্দায় থামছে না বালু উত্তোলন

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ ভ্রাম্যমাণ আদালত, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদানের পরেও থেমে নেই মহানন্দা নদী থেকে বালু উত্তোলন। মল্লিকপুর থেকে শুরু করে একেবারে দ্বারিয়াপুর, নিমগাছি পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার জুড়ে প্রভাবশালীদের মদদে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি ভ্রাম্যমাণ আদালত চামাগ্রাম এলাকায় বেশ কয়েকটি বালু উত্তোলনের মেশিন বা বলগেট আটক করে পুড়িয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি জরিমানা, নামো নিমগাছি এলাকায় উত্তোলনকৃত বালু জব্দ করে তা নিলামে বিক্রি করার পরেও থেমে নেই বালু উত্তোলন। সর্বশেষ চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নয়াগোলা থেকে বালিয়াডাঙ্গা ইউপি পর্যন্ত ৮ কিলোমিটারের নদীর ধারে মানববন্ধন করে প্রতিবাদ ও জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেয়ার পরেও থেমে নেই বালু উত্তোলন। অথচ মানববন্ধনকারীদের দাবি অবৈধভাবে লাগাতার বালু উত্তোলন করায় পাড়ের মাটি দেবে যাচ্ছে। ফলে বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়েছে বালিয়াডাঙ্গা ইউপিসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার পুরো নয়াগোলা এলাকা, সঙ্গে ৯ বিজিবি ব্যাটেলিয়ন। যে কোন মুহূর্তে এসব এলাকা নদীগর্ভে চলে যেতে পারে। খোদ প্রশাসনের চোখের সামনে রেহাইচর এলাকার বিপরীতে বেশ কয়েক প্রভাবশলী ব্যক্তি মোটা মোটা পাইপ লাগিয়ে নদীতীর থেকে ৩/৪ কিলোমিটার দূরে বালু নিয়ে ভরাট করছে বিশাল বিশাল খাল। যার উপরে গড়ে উঠবে ভবিষ্যতে হাউজিং স্টেট। পাশাপাশি পুরো রেহাইচরসহ হাসপাতাল, টিবি ক্লিনিক, রেজিস্ট্রি অফিস, থানা, পুরান বাজারের বিশাল অংশ, প্রতিদিনের বসা কাচা বাজার ও বিশাল জনপদের সহস্রাধিক ব্যক্তিগত বাসভবন চলে যাবে মহানন্দা গর্ভে। এমন আশঙ্কাকে সামনে রেখে এলাকাবাসী একাধিকবার অভিযোগ করেছে প্রশাসনের কাছে। কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। বালি উত্তোলনের গতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বালু উত্তোলনের ফলে নদীগর্ভে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেই সব গর্ত থেকেই পুনরায় মেশিন লাগিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এলাকাটি শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বীরশ্রেষ্ঠ সেতুর উজানে মাত্র কয়েক শত গজের মধ্যে। ফলে বর্তমানে এই সেতুও হুমকির মুখে রয়েছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ সেতু রক্ষায় বার বার বালু উত্তোলন বন্ধে চেষ্টা চালিয়েছে। পড়ে প্রভাবশালীদের হুমকিতে পিছু সরে এসেছে। জেলা প্রশাসন এই বিষয়ে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে আত্মসমর্পণের ভূমিকা নিয়েছে বলে অনেকেই ধারণা করছে। হালদায় অবাধে বালু উত্তোলন নিজস্ব সংবাদদাতা ফটিকছড়ি থেকে জানান, হালদা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে বালু উত্তোলন করায় ড্রেজার ও বালি উত্তোলনের পাইপ জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আক্তার উননেছা শিউলী ছিপাতলী ইউনিয়নের আলমেরকুম এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করে একটি ড্রেজার ও পাইপ সত্তার ঘাটার পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসের জিম্মায় দিয়েছেন। নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ড্রেজারের মালিককে পাওয়া যায়নি। তবে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হালদা থেকে কাউকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করতে দেয়া হবে না। অভিযান পরিচালনার সময় উপস্থিত ছিলেন ছিপাতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আহসান লাভুসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। জানা যায়, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে একটি চক্র রাতের আঁধারে এমনকি প্রকাশ্যে এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। এর ফলে কয়েক বছরের মধ্যে হালদা নদীর ভাঙনে শতাধিক বসতভিটা হারিয়েছে হালদা পাড়ের জনগণ। এদিকে, ফটিকছড়ির সুয়াবিল, সুন্দরপুর, হারুয়ালছড়ি, নারায়নহাটে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করার কারণে হালদার ভাঙ্গন আরও বেড়ে গেছে।
×