ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভোট গণনাকালে হামলা, ভাংচুর

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ২১ ডিসেম্বর ২০১৭

ভোট গণনাকালে হামলা, ভাংচুর

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ খুলনা শিশু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্যদের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনের ভোট গণনা চলাকালে জেলা স্টেডিয়াম ভবনে ব্যাপক ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত নবনির্মিত এ স্টেডিয়ামে ভাংচুর চালায়। এই স্টেডিয়াম ভবনে ভোট গ্রহণ শেষে ভোট গণনা চলছিল। পরে পুলিশ ও র‌্যাব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্টেডিয়াম ভবন ভাংচুরে প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা। এ ঘটনার পর ভোট গণনা স্থগিত করে প্রশাসন। জানা গেছে, খুলনা শিশু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্যদের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনের জন্য ভোট কেন্দ্র করা হয় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামের নবনির্মিত মূল ভবনে। খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান ও সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে দুটি প্যানেলে ২০ জন করে মোট ৪০ প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেন। উভয় প্যানেলেই আওয়ামী লীগ-বিএনপির নেতা-সমর্থক প্রার্থী ছিলেন। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে এক হাজার ৮৮৬ ভোটার ভোট দেন। ভোট গ্রহণ শেষে ভোট গণনা শুরু“করা হয়। ভোট কেন্দ্রের বাইরে প্রার্থী ভোটারসহ উৎসুক মানুষের ভিড়। ভোট গণনা এগিয়ে চলছে। গৃহীত ভোটের ৫০ শতাংশ বা তার কিছু কম বেশি ভোট গণনা শেষ হওয়ার এক পর্যায়ে ফলাফল এক দিকে ঝুঁকে পড়ায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ করে ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল জেলা স্টেডিয়ামের মূল ফটকে ঢুকে ভাংচুর শুরু করে। তারা স্টেডিয়ামের নিচতলার ৩টি কক্ষ ও দ্বিতীয় তলার ৪টি কক্ষে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। চেয়ার, টেবিল, চারপাশের গ্লাস, দরজা, জানালা ভেঙ্গে তছনছ করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ সময় ভোট গণনা বাদ দিয়ে সকলেই দিগি¦দিক ছোটাছুটি করে। অতিরিক্ত ফোর্স আসার আগেই সন্ত্রাসীরা স্টেডিয়াম ভবন থেকে বের হয়ে রাস্তায় অবস্থান নেয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যালট বাক্স ও নির্বাচনের অন্য মালামাল তাদের হেফাজতে নেয়। হামলা-ভাংচুর চলাকালে পুলিশসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। এদিকে, ঘটনার পর নির্বাচন কমিশনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নূর-ই- আলম ভোট গণনা স্থগিত করেন। তিনি বলেন, সারাদিন শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ভোট গণনাকালে দুর্বৃত্তরা স্টেডিয়াম ভবনে ঢুকে ভাংচুর চালায়। ব্যালট বাক্স ও অন্য মালামাল হেফাজতে নিয়ে ট্রেজারিতে রাখা হয়েছে। আপাতত ভোট গণনা স্থগিত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মোঃ আমিন উল আহসান বলেন, এটা একটা সেবামূলক সংস্থার নির্বাচন। এখানে এক ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা দোষীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তিতে ভোট গণনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মনিরা সুলতানা বলেন, ভোট গণনার সময় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শিশু ফাউন্ডেশনের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে শিশু হাসপাতালের বর্তমান সভাপতি সংসদ সদস্য আলহাজ মিজানুর রহমান মিজানের নেতৃত্বে ডাঃ মোঃ বজলুল হক, ডাঃ এ.কে.এম কামরুল ইসলাম, ডাঃ মোঃ মাহমুদ হাসান লেলিন, এম.ডি. এ বাবুল রানা, এ্যাডভোকেট রজব আলী সরদার, মোঃ ফেরদৌস আলম চাঁন ফারাজী, মুর্শিদা আক্তার রনি, মোঃ আলী আকবর টিপু, হালিমা ইসলাম, মোঃ মুনীর আহমেদ, শেখ মামুন আল হাসান নাজু, সৈয়দ হাফিজুুর রহমান, মোস্তফা কামাল খোকন, আলহাজ জোবায়ের আহমেদ খান জবা, চৌধুরী রায়হান ফরিদ, আল জামাল ভূঁইয়া, খান সাইফুল ইসলাম ও মোঃ মনিরুল ইসলাম (মাসুম) প্রার্থী হন। অপর প্যানেলের নেতৃত্বে সদর থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও শিশু হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম। এই প্যানেলের অন্য প্রার্থীরা হলেন অধ্যাপক শহিদুল হক মিন্টু, মোঃ জামাল উদ্দিন বাচ্চু, মোঃ শফিকুল আলম তুহিন, মোঃ রফিকুর রহমান রিপন, এ্যাডভোকেট কানিজ ফাতিমা আমিন, মোঃ আব্দুল গফফার, মোঃ ফারুক আহম্মেদ খান, কে এম ইকবাল হোসেন, এ.কে. এম শাহজাহান (কচি), এ্যাডভোকেট সিকদার হাবিবুর রহমান, মোঃ তাহিদুল ইসলাম ঝন্টু, মিনা আজিজুর রহমান, জি এম রেজাউল ইসলাম, শাহ মোঃ জাকিউর রহমান, মোঃ ইউসুফ আলী, কাজী মাহমুদ আলী, অচিন্ত্য কুমার ঘরামী, এস.এম মেহেদী বিল্লাহ ও খোকন রায় দীলিপ।
×