ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বড় পর্দার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন শারমিন আঁখি

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২১ ডিসেম্বর ২০১৭

বড় পর্দার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন শারমিন আঁখি

তরুণ প্রজন্মের অভিনয় শিল্পী শারমিন আঁখি। ছোট পর্দার বেশ পরিচিত একটি মুখ। নান্দনিক অভিনয়ে অল্প সময়েই পেয়েছেন সুখ্যাতি। শৈল্পিক গুণ ও সাবলীল অভিনয় দিয়ে কেড়েছেন দর্শক হৃদয়। নাটক, বিজ্ঞাপন, মিউজিক ভিডিও, টেলিফিল্ম একাধারে সব কিছুতেই কাজ করছেন এ মডেল ও অভিনেত্রী। নিজস্ব স্বকীয়তায় অর্জন করে নিয়েছেন নিজের একটি শক্ত অবস্থানও। পেছনে ফিরে তাকানোর আর কোন অবকাশ নেই। সব জায়গাতেই রেখেছেন কৃতিত্বের ছোঁয়া। সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেন আনন্দকণ্ঠের সঙ্গে। সাক্ষাতকার নিয়েছেন- রুহুল আমিন ভূঁইয়া আনন্দকণ্ঠ : অভিনয়ের শুরুটা কি ভাবে হয়েছিল? শারমিন আঁখি : আমার শুরুটা হয়েছিল থিয়েটার দিয়ে। নিয়মিত অভিনয়শিল্পী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি অরিন্দম নাট্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে। মহড়া কক্ষে চরিত্রের বিশ্লেষণ নিয়ে চর্চা করতে গিয়ে অভিনয়ের প্রতি প্রেমের শুরু। ২০১১ সালে দেবাশিষ বড়ুয়া দ্বীপের দুটি ধারাবাহিকে কাজ করি। ওই বছরই নার্গিস আক্তারের একটি টেলিফিল্মে প্রথম কাজ করি। তারপর থেকে তো জীবনের গল্প চলছেই মেগা ধারাবাহিকের মৃত। আনন্দকণ্ঠ : কয়েকদিন আগে ইউটিউবে মুক্তি পেয়েছে অন্য গ্রহের মানুষ শিরোনামের একটি মিউজিক ভিডিও কেমন সাড়া পাচ্ছেন? শারমিন আঁখি : গানটি প্রকাশের পর থেকে বেশ সাড়া পাচ্ছি বিভিন্ন মহল থেকে। ‘গানটি বেশ ভাল লেগেছে। গানের কথাগুলোও বেশ সুন্দর। গানটিতে কাজ করেও বেশ ভাল লাগছে। দর্শকদের থেকেও বেশ সাড়া পাচ্ছি গানটির জন্য।’ রাঙ্গামাটির বিভিন্ন লোকেশনে মিউজিক ভিডিওটির দৃশ্য ধারণ করা হয়েছিল। এতে একজন পাহাড়ী মেয়ে হিসেবে দেখা গেছে আমাকে। ‘এর আগে আরও দুটি মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছি। এই ভিডিওটিতে আমাকে একেবারেই ভিন্নভাবে দেখানো হয়েছে। এই লুকে আমাকে আগে দর্শক কখনও দেখেনি।’ আনন্দকণ্ঠ : সম্প্রতি দুটি বিজ্ঞাপনেও দেখা গেছে আপনাকে। বিজ্ঞাপন দুটি প্রসঙ্গে বলুন। শারমিন আঁখি : একটি ব্রাভো সিকুইরিটি ডোরের, অন্যটি তীর এ্যাডভান্স কিচেনের। এটি মূলত কিচেন রেনোভেশন রিয়েলিটি শোয়ের টিভিসি। প্রতিযোগীদের কিচেনকে ঘিরে তাদের জীবনের গল্পের ওপর ভিত্তি করে প্রথম ১০টি কিচেনকে এ্যাডভান্সড কিচেনে রেনোভেট করা হবে। আনন্দকণ্ঠ : বর্তমান সময়ে অভিনয়ের ব্যস্ততা কি নিয়ে? শারমিন আঁখি : কিছু দিন আগেই শেষ করলাম ধারাবাহিক নাটক অপরাজিতা। এখন ব্যস্ততা আর একটি ধারাবাহিক ‘ওরা থাকে ওধারে’ নিয়ে। ভৌতিক গল্পের নাটক এটি। গল্পে দেখা যাবে দুটি পরিবার। একটি ভূতের পরিবার আর একটি মানুষের পরিবার। এই দুটি পরিবারকে ঘিরেই গল্পটি সামনের দিকে এগোবে। বাকিটা জানার জন্য নাটকটি সবাইকে দেখতে হবে। জানুয়ারি থেকে নাটকই দীপ্ত টিভিতে প্রচারিত হবে। আরও একটি ধারাবাহিক নাটকের কাজ শেষ করলাম এটিও প্রচারের অপেক্ষায় আছে। এ ছাড়া তো খ- নাটকের কাজ সব সময় থাকছেই। পাশাপাশি বিজ্ঞাপনের কাজও করছি। নতুন বছর আরেকটি ধারাবাহিক এর কাজ শুরু হবে। এভাবেই কেটে যাচ্ছে সময়। আনন্দকণ্ঠ : নিজের অভিনীত নাটকগুলো নিজে দেখেন? শারমিন অঁাঁখি : হ্যাঁ দেখি। ধারাবাহিক নাটকগুলো ধারাবাহিকভাবে দেখার সুযোগ হয় না। তবে খ- নাটক ও টেলিফিল্মগুলো অন এয়ার না দেখলেও ইউটিউবে দেখে নেই সময় করে। তবে সময় পেলে অন এয়ারের সময়ই দেখার চেষ্টা করি। আনন্দকণ্ঠ : পরিবার থেকে সাপোর্ট কতটুকু পেয়েছিলেন? শারমিন আঁখি: শতভাগ। আমার মায়ের কাছ থেকে অনেক সাপোর্ট পেয়েছি। আর বিয়ের পরে স্বামীর কাছ থেকেও পাচ্ছি। দু’জন একই মাধ্যমে কাজ করার কারণে আমাদের পারস্পরিক সমঝোতাও অনেক ভাল। আর রাহাত যেহেতু নাটক পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত তাই কাজের ক্ষেত্রে ওর কাছ থেকেও সহযোগিতা পাই। আনন্দকণ্ঠ : খ- নাটক না ধারাবাহিক কোন ধারার নাটকে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন? শারমিন আঁখি : দুটি দুই রকমের কাজ। খ- নাটকের প্রেশার থাকে সারাদিন। দুই বা তিন দিনে এক ঘণ্টার কাজটা আমাদের শেষ করতে হয়। চরিত্র নিয়ে কাজ করার সুযোগ থাকে কম। আর ধারাবাহিক নাটকটা যেহেতু একটানা করে যেতে হয় চরিত্র নিয়ে ভাবার সময় থাকে বেশি। গল্প পরে নিজেকে চরিত্রের জন্য তৈরি করার সময় পাওয়া যায়। সর্বোপরি নিজেকে ফুটিয়ে তোলার সুযোগ থাকে। দুই ধরনের কাজের স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আনন্দকণ্ঠ : কোন্ ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে ভাল লাগে? শারমিন আঁখি : আমার সব ধরনের চরিত্রেই কাজ করতেই ভাল লাগে। ভিন্ন ভিন্ন গল্পে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের ভিন্নতা এমনিতেই বৈচিত্র্য এনে দেয়। সব ধরনের চরিত্রে কাজ করতে গিয়ে অভিনেত্রী হিসেবে এটা আমাকে অনেক পরিণত করেছে। পেশাদার জায়গা থেকে কাজ করতে গেলে অনেক বেশি কাজ আমাদের করতে হয়। অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে। এর মধ্যে থেকেই চেষ্টা করি ভাল গল্প, কিংবা গল্পের চরিত্রটির একটা ভিন্ন আঙ্গিক দেয়ার। টেলিভিশন নাটকের পাশাপাশি আমি থিয়েটারে নিয়মিত পারফর্ম করি। তাই আমি সব ধরনের চরিত্রেই কাজ করতে পছন্দ করি। আনন্দকণ্ঠ : বড় পর্দা নিয়ে কোন ভাবনা আছে? শারমিন আঁখি : সবারই স্বপ্ন থাকে বড় পর্দায় কাজ করার। ছোট পর্দায় নিয়মিত কাজ করে আসছি। এরই মধ্যে বড় পর্দায় একটি কাজ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছি। ভাল গল্প, ভাল চরিত্র পেলে আগামীতেও আমাকে দর্শকরা বড় পর্দায় দেখতে পাবেন। কিছুদিন আগে কক্সবাজারের উখিয়া এলাকায় শূটিংয়ের মাধ্যমে সমাপ্ত করলাম নোমান রবিনের পরিচালনায় প্রথম চলচ্চিত্রের কাজ। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে নির্মিত এ চলচ্চিত্রে আমি রোহিঙ্গা নারীর চরিত্রে অভিনয় করেছি। ছবিটি নিয়ে আমি বেশ আশাবাদী। খুব শীঘ্রই ছবিটি নিয়ে মুক্তির মিছিলে নামব। আরও একটি ছবির ব্যাপারে কথা হচ্ছে খুব শীঘ্রই জানাব যদি ব্যাটে-বলে মিলে যায়। আনন্দকণ্ঠ : নাটকের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশংসা এবং সমালোচনা দুটিই হচ্ছে। আপনার অভিমত কী? শারমিন আঁখি : প্রশংসা এবং সমালোচনা দুটিই হবে যেহেতু আমরা মানুষ। তবে বর্তমানে আমাদের নাটকগুলো অনেক ভাল হচ্ছে। গল্প, মেকিং থেকে শুরু“করে সব কিছুতেই ভাল হচ্ছে। আনন্দকণ্ঠ : আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী? শারমিন আঁখি : অভিনয় করছি। সামনেও করে যেতে চাই। অভিনয়ের হাতে খড়ি মঞ্চে। অভিনয়টা তাই রক্তে মিশে আছে। এক চরিত্র থেকে অন্য চরিত্রে রূপান্তরে অদম্য আনন্দ কাজ করে। তাই অভিনয়ের বাইরে আর কিছু ভাবতে পারি না। স্বভাবতই একজন সফল অভিনয় শিল্পী হিসেবে নিজেকে দেখতে চাই। তাই অভিনয় যাত্রাটা একটু সুদীর্ঘ করে যেতে চাই। ভাল ভাল কিছু কাজ দর্শকদের উপহার দিয়ে যেতে চাই যেনও তারা আমার কাজগুলোর মধ্য দিয়ে আমাকে মনে রাখে।
×