ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কাতালোনিয়ায় আজ পার্লামেন্ট নির্বাচন

প্রকাশিত: ০৫:২০, ২১ ডিসেম্বর ২০১৭

কাতালোনিয়ায় আজ পার্লামেন্ট নির্বাচন

স্বাধীনতাকামী ও বিরোধীদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা স্পেনের কাতালোনিয়া রাজ্যে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগে (বুধবার) থেকে নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রম বন্ধে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। এই রাজ্যের স্বাধীনতা সংক্রান্ত গণভোটকে কেন্দ্র করে যে সঙ্কটের সূচনা হয় তা নিরসনের লক্ষ্যেই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। খবর এএফপি। বৃহস্পতিবার এই নির্বাচন উপলক্ষে স্বাধীনতাকামী কাতালোনিয়ার নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ স্পেন বা বিচ্ছিন্নতাবিরোধী প্রার্থীদের মোকাবেলা করার জন্য মাঠে নেমেছেন। তবে স্বাধীনতাপন্থীদের অনেকেই আর সশরীরে নির্বাচনী মাঠে নামতে পারছেন না। তাদের কেউ রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ নিয়ে বিদেশে স্বেচ্ছা নির্বাসন, কেউ কারাগারে এবং অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এই সুযোগে কেন্দ্রীয় সরকার সমর্থক স্বাধীনতাবিরোধী দল বা প্রার্থীরা জোরেশোরে নির্বাচনী প্রচার কার্য চালিয়ে যাচ্ছেন। এর আগে স্বাধীনতাপন্থীরা কাতালোনিয়ার গণভোটে বিজয়ী হলেও এবারের নির্বাচনী হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে জনমত জরিপের ফলাফলে জানা গেছে। কোন পক্ষই সুস্পষ্ট জয় পাবে কিনা তা নিয়ে ঘোরতর সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে এই নির্বাচনকে ঘিরে গভীর উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। তারা এই নির্বাচনের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। কারণ এর আগে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতাপন্থীরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থন কামনা করলে তারা এই সমর্থন দিতে অস্বীকার করে। ব্রেক্সিটের জন্য ইইউ জোট যে ধাক্কা খেয়েছে তার রেশ এখনও চলছে। এখন কাতালোনিয়াকে স্বীকৃতি বা সমর্থন দিলে ব্রিটেনের মতো স্পেনও যদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে চলে যায়, তবে আরেকটি বিপর্যয়ের কারণ হবে বলে তারা এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে বিরত থাকে। কাতালোনিয়ার নির্বাচন শুধু এই রাজ্য নয় সমগ্র স্পেনজুড়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে। স্পেন সরকার গত ২৭ অক্টোবরের স্বাধীনতা ঘোষণার পর রাজ্যটিতে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেয়। বিভিন্ন অভিযোগ এনে এর নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। কাতালান নেতা কার্লেস পুজদামোন গ্রেফতার এড়িয়ে বেলজিয়ামে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। সেখান থেকেই এক ভিডিও বার্তায় তিনি স্বদেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘এটি কোন সাধারণ নির্বাচন নয়, এই মুহূর্তে একটি প্রশ্নই সামনে এসে দাঁড়িয়েছে তা হলো কে সবচেয়ে বেশি ভোট পেল তা নয় বরং কে জয়লাভ করল কাতালোনিয়া না স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাহয়? তবে রাজনীতি বিশ্লেষকদের ধারণা যে, বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে কাতালোনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদীরা জয়লাভ করলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে তা বাস্তবায়নের পথে যাবে না। অপর এক বিশ্লেষক মনে করেন, যদি তারা একটি স্বাধীনতাপন্থী সরকার গঠনও করে ফেলে তবুও তারা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত একটি কর্তৃপক্ষকে ঝুঁকিতে ফেলতে রাজি হবে না। তাই তাদের পদক্ষেপ হবে বেশ সতর্ক। কেননা, এর আগে স্বাধীনতা ঘোষণার পর কাতালোনিয়া থেকে প্রায় তিন শ’ কোম্পানি তাদের ব্যবসা কেন্দ্র অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায়। এছাড়া বিশ্বের কোন দেশই তাদের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিতে রাজি হয়নি। এবারের নির্বাচনে পুজদামোনের নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতাপন্থী দলের বিরুদ্ধে মধ্যপন্থী দল সিউডাডানোসের উদ্দীপনা সঞ্চারকারী দলনেত্রী ইনেন্স এরিমেডাস ব্যাপক প্রচারাভিযান শুরু করেছেন। তার পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থনও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি বেশ আশাবাদী কণ্ঠে বলে, বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে আমাদের দুঃস্বপ্নের রাত কেটে যাবে।’
×