ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

উৎপল দাশ এখন গ্রামের বাড়ি নরসিংদীতে পরিবারের সঙ্গে

প্রকাশিত: ০৫:১২, ২১ ডিসেম্বর ২০১৭

উৎপল দাশ এখন গ্রামের বাড়ি নরসিংদীতে পরিবারের সঙ্গে

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ নিখোঁজের প্রায় আড়াই মাস পর সাংবাদিক উৎপল দাশ তার পরিবারের কাছে ফেরত গেছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে তাকে প্রায় ৪ ঘণ্টা চোখ বেঁধে গাড়িতে করে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভুলতা এলাকায় ফেলে রেখে যায়। অপহরণকারীরা উৎপল দাশের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করেছিল। মঙ্গলবার রাত সোয়া বারোটার দিকে উৎপল দাশ তার মায়ের মোবাইল ফোনে কল দেন। ফোন ধরতেই অপরপ্রান্ত থেকে উৎপল দাশ কথা বলেন। তিনি বাড়ি আসছেন বলে জানান। নিজস্ব সংবাদদাতা রূপগঞ্জ থেকে জানান, উৎপল দাশকে অপহরণকারীরা রূপগঞ্জের আধুরিয়া এলাকার শাহজালাল পেট্রোল পাম্পের কাছে ফেলে রেখে যায়। খবর পেয়ে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শহীদুল ইসলাম তাকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে যান। রাত তিনটার দিকে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন তিনি। এরপর তারা একটি মাইক্রোবাসযোগে নরসিংদীতে উৎপলের গ্রামের বাড়িতে চলে যান। স্টাফ রিপোর্টার নরসিংদী থেকে উৎপল দাশের বরাত দিয়ে জানান, গত ১০ অক্টোবর পূর্বপশ্চিম বিডিডটকম নামে অনলাইন নিউজ পোর্টালের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক উৎপল দাশের (২৭) কাছে মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। তখন তিনি ধানম-ি স্টার কাবাব রেস্টুরেন্টের সামনে ছিলেন। ফোন রিসিভ করার পর অপর প্রান্ত থেকে তার এক আত্মীয় একটি কাজ করে দেয়ার জন্য তাকে অনুরোধ জানায়। কাজটি করে দিতে ৫ লাখ টাকা লাগবে বলে উৎপল দাশ তার আত্মীয়কে জানান। এরই মধ্যে একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাস তার সামনে এসে দাঁড়ায়। তাকে চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে তারা অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে একটি টিনশেড বাড়িতে রাখা হয় তাকে। তাকে কোন মারধর করা হয়নি। সময়মতো খাবার দেয়া হতো। মুখোশ পরা অবস্থায় কিছু লোক এসে তার সঙ্গে দেখা করে টাকা দাবি করত। তাদের দাবি, আমার কাছে অনেক টাকা আছে। আমি সাংবাদিক। আমার কাছে তাদের দাবি মেটানোর মতো টাকা নেই বলে জানাই। স্টার কাবাবের সামনে তার আত্মীয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনের কথোপকথন কেউ শুনে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছি। মঙ্গলবার গভীর রাতে প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা চোখ বেঁধে রেখে গাড়িতে করে তাকে ভুলতা এলাকার একটি সিএন্ডজি স্টেশনের সম্মুখে ফেলে রেখে চলে যায়। স্টেশনের পাশের একটি দোকান থেকে সে মোবাইল ফোনে বিষয়টি তার সহকর্মী ও স্বজনদের অবহিত করে। পরে সহকর্মী ও স্বজনদের সহায়তায় ভুলতা ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে। রাতেই তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বুধবার সকালে রায়পুরা উপজেলার থানা হাটি গ্রামে উৎপল দাশের বাড়িতে ভিড় করেছিল শত শত মানুষ। তাকে দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় জমায় উৎসুক জনতা। এ সময় উৎপলের পিতা চিত্তরঞ্জন দাশ জানান, ছেলেকে ফিরে পাব আশা করিনি। ছেলেকে পেয়ে আমরা খুব খুশি। এ সময় উৎপলকে ধরে মা বিমলা দাশ কাঁদছিলেন। রায়পুরা আর কে এম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক জানান, উৎপলকে পেয়ে তারা খুশি। উৎপল তার স্কুলের মেধাবী ছাত্র ছিল। উৎপলকে জীবিত ফিরে পাওয়ার আশা ছিল না। রায়পুরা থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন জানান, সাংবাদিক উৎপল দাশ তার বাবা-মার কাছে রয়েছেন। তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
×