ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নোয়াখালীর ৫ জনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন ২৪ জানুয়ারি

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ২১ ডিসেম্বর ২০১৭

নোয়াখালীর ৫ জনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন ২৪ জানুয়ারি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নোয়াখালীর আমির আহম্মেদ ওরফে আমির আলীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে শেষ সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ হেলাল উদ্দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ মামলায় যুক্তি-তর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন করার জন্য আগামী ২৪ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। অন্যদিকে নেত্রকোনার খলিলুর রহমানসহ চার আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধীর অভিযোগ শুনানির ৫ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বুধবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। এ সময় সংশ্লিষ্ট মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম, প্রসিকিউটর রিজিয়া সুলতানা বেগম চমন। নোয়াখালীর মামলায় আমির আহম্মেদ ওরফে আমির আলী ছাড়া মামলায় অন্য চার আসামিরা হলেন-আবুল কালাম ওরফে এ কে এম মনসুর, মোঃ ইউসুফ, মোঃ জয়নাল আবদিন ও মোঃ আব্দুল কুদ্দুস। এর আগে ২০১৫ সালের ১৩ অক্টোবর এ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। একই বছরের ৫ অক্টোবর আমির আহম্মেদ ওরফে রাজাকার আমির আলীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। ২০১৪ সালের ১৬ নবেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়ে গত ৩০ আগস্ট শেষ হয়। ৩১ আগস্ট তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে হস্তান্তর করেন তদন্ত সংস্থা। আসামিদের বিরুদ্ধে আনা আনুষ্ঠানিক অভিযোগে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নোয়াখালীর সুধারামে ১১১ জনকে হত্যা-গণহত্যার তিনটি অভিযোগ রয়েছে। এ মামলায় কারাগারে আছেন আমির আহম্মেদ ওরফে আমির আলী, মোঃ ইউসুফ, মোঃ জয়নাল আবেদীন ও মোঃ আব্দুল কুদ্দুস। অপরদিকে এখনও পলাতক রয়েছেন আবুল কালাম ওরফে একেএম মনসুর। নেত্রকোনার চার জন নেত্রকোনার খলিলুর রহমানসহ চার আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধীর অভিযোগ শুনানির ৫ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যরা হলেনÑখলিলুর রহমানের ভাই আজিজুর রহমান, একই উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের আশক আলী এবং জানিরগাঁও ইউনিয়নের শাহনেওয়াজ। খলিলুর রহমান গ্রেফতার হয়েছেন। অন্য তিনজন পলাতক রয়েছেন। শুরুর দিকে মামলায় আসামি ছিলেন পাঁচজন। এর মধ্যে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আসামি রমজান আলী ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর আগে গত ৩ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউশন। গত ৩০ জানুয়ারি তদন্ত সংস্থা মামলার আসামির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে তদন্ত শুরু হয়ে ৩০ জানুয়ারি শেষ হয়। এ মামলায় একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জব্দ তালিকার দুইজনসহ মোট সাক্ষী ৮২ জন। আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করা, ধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টার পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২২ জনকে হত্যা-গণহত্যা, একজনকে ধর্ষণ, একজনকে ধর্ষণের চেষ্টা, অপহৃত চারজনের মধ্যে দু’জনকে ক্যাম্পে নির্যাতন, ১৪-১৫টি বাড়িতে লুটপাট এবং সাতটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করার অভিযোগ। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা থানা এলাকায় তারা এসব অপরাধ করেন বলে জানা গেছে।
×