ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ ॥ হোটেলের কর্মচারী ও দালালদের হামলায় আহত-৯ ॥ আটক ৪৪

প্রকাশিত: ০৮:২৮, ২০ ডিসেম্বর ২০১৭

ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ ॥ হোটেলের কর্মচারী ও দালালদের হামলায় আহত-৯ ॥ আটক ৪৪

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরে ইভটিজিংয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাতে এক আবাসিক হোটেলের কর্মচারী ও তাদের দালালদের হামলায় ৯ জন আহত হয়েছে। পরে পুলিশ ওই হোটেলে অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৮ জন তরুণী ও যৌনকর্মী ও ২৬ জন হোটেলের কর্মচারী ও দালালকে আটক করেছে। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুইজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নলজানি এলাকায় শাপলা আবাসিক হোটেলের সামনে দিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা রাতে স্থানীয় এক গার্মেন্টসের নারী কর্মী হেঁটে বাসায় ফিরছিল। এসময় শাপলা হোটেলের কর্মচারী ও দালালরা ইভটিজিং করে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে তাদের বাগ্বিত-া হয়। একপর্যায়ে হোটেলের কর্মচারী ও দালালরা ওই যুবককে মারধর করে। পরে এলাকার যুবকরা এগিয়ে এসে ঘটনা জানতে চাইলে হোটেল কর্মচারী, দালাল ও তাদের লোকজন লাঠিসোঁটা, রড, হাতুড়ি ও চাপাতি নিয়ে এলাকার যুবকদের ওপর আক্রমণ করে বেধরক মারধর করে ও কোপায়। এতে ৯ জন আহত হয়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখান থেকে আহত ২ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই আবাসিক হোটেলে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশ অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৮ জন তরুণী ও যৌনকর্মী ও ২৬ হোটেলের কর্মচারী ও দালালকে আটক করেছে। হামলায় গুরুতর আহতরা হলো- গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নলজানি এলাকার মোঃ নোমান (১৮), মোঃ ফজলুল হক ফজল (৩২), মোঃ রানা (২৫), মোঃ মামুন (২৪), মোঃ রেজোয়ান (২৮), তেলিপাড়া এলাকার মোঃ নাহিদ (১৭) ও সুজন (৩০)। এদের মধ্যে আহত ফজল ও নোমানকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। গাজীপুরের বিশেষ শাখার ইন্সপেক্টর আব্দুল মোমিন জানান, শাপলা আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৮ তরুণী ও যৌনকর্মী ও ২৬ হোটেলের কর্মচারী ও দালালকে পুলিশ আটক করেছে। ঘটনার বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এলাকাবাসী আরও জানায় গাজীপুরে শাপলা আবাসিক হোটেলসহ অধিকাংশ আবাসিক হোটেলগুলোতে বিভিন্ন প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে পতিতাবৃতিসহ নানা অসামাজিক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে আসছে হোটেল ব্যবসায়ীরা। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী একাধিকবার প্রতিবাদ করলেও ওইসব কার্যকলাপ বন্ধ হয়নি। গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভিন্ন সময়ে হোটেলগুলোতে অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে যৌনকর্মী, হোটেলের কর্মচারী ও দালালদের আটক করলেও পরক্ষণেই তারা আবার অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।
×