ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জামায়াত সদস্যরা যেন অন্য দলে ঢুকে ভোট করতে না পারে

প্রকাশিত: ০৫:১২, ২০ ডিসেম্বর ২০১৭

জামায়াত সদস্যরা যেন অন্য দলে ঢুকে ভোট করতে না পারে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জামায়াতসহ যেসব রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে, সেসব দলের সদস্যরা যেন হুট করে অন্য দলের হয়ে নির্বাচন না করতে পারে সেদিকে নজর দেয়ার জন্য ইসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বামপন্থী তিনটি রাজনৈতিক দল। এছাড়াও আগামী নির্বাচনে প্রার্থী জামানত কমিয়ে ৫ হাজার টাকা করারও আহ্বান জানান তারা। জাতীয় নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হতে হলে কমপক্ষে ৫ বছর সেই দলের সক্রিয় সদস্য হওয়ার বিধান চালুর কথা বলেন। মঙ্গলবার বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ও বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে ইসিতে এই সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়াও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনের কাছে যৌথভাবে ১৮ দফা সুপারিশ দেয়া হয় দলগুলোর পক্ষ থেকে। বেলা ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সিইসি কেএম নূরুল হুদার সঙ্গে বৈঠক করে এসব সুপারিশ জমা দেয় হয়। একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে দল তিনটির নেতারা একত্রে সিইসির সঙ্গে ‘কিছু বিষয়ে জরুরী মতবিনিময় সভা’ শিরোনামে দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। এ সময় তিনি বলেন, জামায়াতসহ যেসব দলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে, সেসব দলের সদস্যরা যাতে হুট করে অন্য কোন দলের হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদাকে অনুরোধ করা হয়েছে। আমরা বলেছি যাদের নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে, সেসব দলের সদস্যরা যাতে হুট করে অন্য দলের প্রার্থী হতে না পারে সেই বিষয়ে নজর রাখা। অন্য দলের হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাইলে তাদের সংশ্লিষ্ট সেই দলের সদস্য হওয়ার বয়স কমপক্ষে ৫ বছর হতে হবে। এছাড়াও তিনি নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে প্রার্থীদের জন্য পরিচিতি সভার আয়োজন ও নির্বাচনে প্রার্থীদের ব্যয় বাড়ানোর বিপক্ষেও মত দেন। বলেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশনে প্রার্থীরা আচরণবিধি ভঙ্গ করে ব্যয়সীমা লঙ্ঘন করছে। তিনি বলেন, এর আগে আমরা তিন দল আলাদা আলাদা মতামত কমিশনকে দিয়েছি। কিন্তু গণমাধ্যমের সূত্রে জেনেছি- ইসি জামানত বাড়ানোসহ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এতে আমরা জরুরীভিত্তিতে এ বিষয়ে মতামত জানিয়েছে। যেখানে জামানত দিয়ে প্রার্থী হওয়া কষ্টসাধ্য, সেখানে জামানতের টাকা বাড়ানো হলে তা মানা হবে না। সেক্ষেত্রে জামানত কমিয়ে ৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তিন বাম দলের পক্ষ থেকে ১৮ দফা সংবলিত যে সুপারিশমালা দেয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর জামানত ৫ হাজার টাকা করা ছাড়াও বিনামূলে ভোটার তালিকার সিডি দেয়া, সকল প্রার্থীর টিআইএন বাধ্যতামূলক করার পরিবর্তে আয়করযোগ্যদের টিআইএন বাধ্যতামূলক করা, অনলাইনে মনোনয়ন দাখিলের সুবিধার বিষয় রয়েছে। এছাড়া তফসিল ঘোষণার পর বেসমারিক প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, মন্ত্রিপরিষদ, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, অর্থসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধায়নে পরিচালনা করা, মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ করা, প্রতি এলাকায় কমিশনের মাধ্যমে প্রার্থীদের পরিচিতি সভার আয়োজন, প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় ৩ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় মনিটরিং করা, নির্বাচনী আয়-ব্যয়ের হিসাব ভোটের ৭ দিনের মধ্যে দেয়া, নির্বাচনে পেশিশক্তির ব্যবহার বন্ধ করা, ধর্মের অপব্যবহার ও সাম্প্রদায়িকতা কঠোরভাবে বন্ধ করার সুপারিশও করা হয়েছে।
×