ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কংগ্রেসে পেন্টাগনের রিপোর্ট

পাকিস্তানের সঙ্গে মতপার্থক্যে একক সিদ্ধান্ত নেবে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭

পাকিস্তানের সঙ্গে মতপার্থক্যে একক সিদ্ধান্ত নেবে যুক্তরাষ্ট্র

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন আমেরিকান কংগ্রেসকে জানিয়েছে, তারা পাকিস্তানের সঙ্গে যেসব বিষয়ে মতপার্থক্য আছে সেগুলোতে একক সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করার এবং অভিন্ন পারস্পরিক স্বার্থ অর্জনে পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কাজ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। খবর ডন। কংগ্রেসে পেশ করা এই প্রতিবেদনে পেন্টাগন এই অঞ্চলে তৎপর ২০টিরও বেশি জঙ্গী গ্রুপগুলোকে মোকাবেলার লক্ষ্যে একটি যৌথ মার্কিন আফগান কর্মপন্থা উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত ২১ আগস্ট তার দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক নীতি ঘোষণার পর পেন্টাগনের এটিই প্রথম আফগানিস্তান বিষয়ক প্রতিবেদন। ট্রাম্প তার দক্ষিণ এশিয়া নীতি অনুসারে আফগানিস্তানে সামরিক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করে পাকিস্তানের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানান। সে সময় তিনি তালেবান জঙ্গীদের পরাজিত করার লক্ষ্যে সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতার জন্যও তিনি পাকিস্তানী নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ জানান। যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেদেশের ভূখ-ে জঙ্গীদের নিরাপদ আশ্রয় দেয়ার যে অভিযোগ করে আসছিল সে প্রসঙ্গে পেন্টাগনের রিপোর্টে ‘মৌলিক পরিবর্তন’ আনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। পেন্টাগন তাদের প্রণীত আফগান যুদ্ধ কৌশল ব্যাখ্যা করে কংগ্রেসকে জানায় যে, তালেবান শক্তিকে পরাভূত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসীদের সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা পাওয়া থেকে দূরে রাখতে হবে। এভাবেই বাইরের প্রভাব থেকে বিচ্ছিন্ন করে তাদেরকে পর্যুদস্ত করতে হবে। পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তঃসমর বিভাগের সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে এই অঞ্চলে পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষিত হবে বলে পেন্টাগন আশাবাদ ব্যক্ত করে। পাকিস্তান তার এতদিনকার অনুসৃত নীতি থেকে সরে আসলে এই অঞ্চলে মৌলিক পরিবর্তন সূচিত হবে। এই রিপোর্টে বলা হয়, ২০টিরও বেশি সন্ত্রাসী বা বিদ্রোহী গোষ্ঠী এখনও পাক আফগান ভূখ-ে সক্রিয় রয়েছে। এদের তৎপরতা পর্যবেক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও তাদের হুমকি মোকাবেলার লক্ষ্যে সে এলাকায় আফগান সমর্থিত একটি শক্তিশালী মার্কিন প্ল্যাটফর্ম বা অবস্থান থাকা দরকার। পেন্টাগনের এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয় যে, পাক-আফগান সীমান্ত সংলগ্ন ভূখ-কে আলকায়েদা, হাক্কানি নেটওয়ার্ক, লস্কর-ই-তৈয়্যেবা, তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান, আইসিসকে এবং ইসলামিক মুভমেন্ট অব উজবেকিস্তান প্রভৃতি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অবাধ বিচরণ স্থল হিসেবে গণ্য করা হয়। এখানে কার্যত পাকিস্তানেরও কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। এই অঞ্চলটিকে ফেডারেল এ্যাডমিনিস্টারড ট্রাইবাল এরিয়া সংক্ষেপে এফএটিএ বলা হয়। উপজাতি অধ্যুষিত বা গোত্রশাসিত এই অঞ্চলে চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলো নির্ভয়ে বিচরণ করে থাকে। কিন্তু এসব অঞ্চলে থেকেই সন্ত্রাসীরা উভয় দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনবরত হুমকির সৃষ্টি করে যাচ্ছে এবং সেই সঙ্গে দেশ দু’টির নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। এই রিপোর্টে এটি স্বীকার করে নেয়া হয় যে, আফগানিস্তানে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের যা অর্জন তার সবই ভেস্তে যেতে বসেছে এসব বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতার কারণে। তাই ১৭ বছর ধরে চলমান এই গৃহযুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে যুদ্ধরত দলগুলোর জন্য আলোচনার দরজাও খোলা রাখতে হবে।
×