ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উপকূলীয় দেশগুলোর এসডিজি অর্জনে বাধা হতে পারে

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭

উপকূলীয় দেশগুলোর এসডিজি অর্জনে বাধা হতে পারে

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় দেশগুলোর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এসব দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও ক্ষুধা দূর করতে হলে উপকূলীয় এলাকার স্থানীয় জনসাধারণের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। সে কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় উপকূলীয় দেশগুলোকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। রবিবার রাজধানীর গুলশান স্পেক্ট্রা কনভেনশন সেন্টারে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে আয়োজিত চতুর্থ উপ আঞ্চলিক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা এই আহ্বান জানান। ‘উপকূলীয় অঞ্চলের ঝুঁকি মোকাবেলা এবং স্থানীয় জনগণের সক্ষমতা’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এই চতুর্থ উপ আঞ্চলিক কর্মশালা যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদ ও কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড। এতে বাংলাদেশ, ভারত নেপাল ও শ্রীলঙ্কার বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদের ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ নেগোসিয়েশন টিমের কোঅর্ডিনেটর ড.কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ জলিল, কনসার্ন ওয়াল্ডওয়াইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর এ কে এম মুসা, কর্মশালার সমন্বয়ক ড. নিলুফার বানু প্রমুখ। ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বঙ্গোপসাগর উপকূলীয় এলাকায় যেসব ঝুঁকি দেখা দিতে পারে, সেসব ঝুঁকি মোকাবেলায় তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতায় উপ আঞ্চলিক উদ্যোগ আরও শক্তিশালী করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বঙ্গোপসাগরের পানির লেভেল উচু হয়ে গেছে। সে কারণে বঙ্গোপসাগর এখন আর অতীতের মতো নদীর পানি ধারণ করতে পারে না। তাই নদীর পানি উপচে বন্যা হয়। একই সঙ্গে নদী ভাঙ্গন দেখা দেয়। নদী ভাঙ্গনে মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়ে। কর্মশালার বিভিন্ন পর্বে বিশেষজ্ঞরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় দেশগুলোর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এসব দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও ক্ষুধা দূর করতে হলে উপকূলীয় এলাকার স্থানীয় জনসাধারণের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। এছাড়া প্যারিস চুক্তির আলোকে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সাম্প্রতিক ধারণা, উন্নয়ন ও চ্যালেঞ্জসমূহ নিয়ে আলোচনা করেন বিশেষজ্ঞরা। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে তা আমলে নিয়ে এসডিজির আলোকে সম্মিলিতভাবে মোকাবেলা করার জন্য অভিমত দেন তারা। আলোচনার মধ্যে দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাব মোকাবেলায় একটি কমন এ্যাডভোকেসি প্লাটফর্ম তৈরির জন্য বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছেন তারা। কর্মশালার প্রথম দিনে অর্থনীতি, পরিবেশ ও জীবনমানের ওপর জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রভাব শীর্ষক চারটি অধিবেশন হয়েছে। এসব অধিবেশনে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে পানিসম্পদের ওপর এর প্রভাব, কৃষির ওপর প্রভাব, স্থানীয় জনগণ কীভাবে তাদের ঠিকানা হারাচ্ছে এবং তাদের পুনর্বাসন করা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় টেকসইভাবে ঠেকানোর জন্য প্রযুক্তিগত উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়। আজ সোমবার কর্মশালার সমাপনী দিনে শহর এলাকায় ঝুঁকি কমানো এবং ঝুঁকি মোকাবেলায় সক্ষমতা বাড়ানো, জীবন জীবিকা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজনে নারী পুরুষের বৈষম্য এবং যুবা ও শিশুদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে।
×