ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

মিয়ানমারের ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছে আজ

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭

মিয়ানমারের ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছে আজ

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের লক্ষ্যে সোমবার ঢাকা আসছে মিয়ানমারের ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব মিন্ট থো এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বাংলাদেশের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের মূল বৈঠকটি মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। সূত্র জানায়, মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের ঢাকায় বৈঠকের মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণের জন্যই মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছেন। যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপে উভয় দেশ থেকে ১২ জন করে মোট ২৪ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা যুক্ত থাকবেন। মিয়ানমারের নেপিডোতে ২৩ নবেম্বর উভয় দেশের মধ্যে করা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তিতে বলা ছিল, যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন এবং এর কার্যপদ্ধতি তিন সপ্তাহের মধ্যে নির্ধারিত হবে। চুক্তি অনুযায়ী প্রক্রিয়াটি ১৪ ডিসেম্বর শেষ হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও প্রক্রিয়াটি পাঁচদিন পরে শুরু করল উভয় দেশ। ২৩ নবেম্বর দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি সই হলেও অনেক আগে থেকেই যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের প্রক্রিয়া চলছিল। মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর আউং সান সুচির দফতরের মন্ত্রী কিয়া তিন্ত সোয়ের গত ৩ অক্টোবর ঢাকা সফরকালে ‘যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনে সম্মত হয় উভয় দেশ। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ ২ নবেম্বর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্যদের তালিকা হস্তান্তর করে এবং মিয়ানমার পহেলা ডিসেম্বর তালিকা হস্তান্তর করে। কমিটির কার্যপদ্ধতি নিয়ে বাংলাদেশ ১৪ নবেম্বর প্রস্তাব করে এবং এর বিপরীতে মিয়ানমার ৪ ডিসেম্বর তাদের পাল্টা প্রস্তাব দেয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১০ ডিসেম্বর এর ফিরতি প্রস্তাব করা হয়। মিয়ানমারের প্রস্তাব পর্যালোচনার জন্য রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন, ডিজিএফআই, এনএসআই, বিজিবি, কক্সবাজার প্রশাসক, মিয়ানমারে বাংলাদেশ মিশনের প্রতিনিধিরা সদস্য হিসেবে থাকবেন। উল্লেখ্য, গত বছরের ৯ অক্টোবর সেনা অভিযানের মুখে ৮৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আর চলতি বছর ২৫ আগস্টের পর নতুন করে বাংলাদেশে আসে সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা। এর আগে বিভিন্ন সময়ে জাতিগত দমন-পীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে শরণার্থী জীবন কাটাচ্ছে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম। বাংলাদেশের আহ্বানে ১৯৯২ সালে দ্বিপক্ষীয় একটি চুক্তির আওতায় মিয়ানমার কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত নিলেও পরে আর সেই প্রক্রিয়া এগোয়নি। এখন গত ২৩ নবেম্বর রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে নতুন করে চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছেন।
×