ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দেশজুড়ে বিজয় দিবস উদযাপন

জঙ্গী ও রাজাকারমুক্ত দেশ গড়ার শপথ

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭

জঙ্গী ও রাজাকারমুক্ত দেশ গড়ার শপথ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ শনিবার সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। ভোরে তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের সূচনা করা হয়। এর পর স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক ও সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ নানা পেশার মানুষ শ্রদ্ধা জানান জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের। এ সময় দুর্নীতি, জঙ্গী ও রাজাকারমুক্ত দেশ গড়ার শপথ নেয় তরুণ প্রজন্ম। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। চট্টগ্রাম শনিবার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে ছিল ব্যাপক কর্মসূচী। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে ফুলে ফুলে ভরে যায় স্মৃতিস্তম্ভ। সরকারী-আধাসরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছিল বিজয় দিবসের নানা কর্মসূচী। বিশেষ এ দিনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি সুখী সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের শপথ উচ্চারিত হয়। দিবসের প্রথম প্রহর থেকেই শুরু হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ, জাসদ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, খেলাঘর, প্রমা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে দেয়া ফুলে ফুলে ঢেকে যায় শহীদের স্মৃতিস্তম্ভ। দলীয় ব্যানারের বাইরে অনেকে ব্যক্তিগতভাবেও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন কর্পোরেশনের পক্ষে শহীদের স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর তার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে। কর্পোরেশনের উদ্যোগে বিজয় দিবসে ছিল ব্যাপক অনুষ্ঠানমালা। এরমধ্যে ছিল প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনাসভা, শিশুকিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া দিনভর বাজানো হয় বঙ্গবন্ধুর সে ঐতিহাসিক ভাষণ। তবে বিজয় দিবসের ঠিক আগের দিন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর ফলে ছিল কিছুটা শোকাবহ পরিবেশও। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে পালিত হয় মহান বিজয় দিবস। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচী ছিল দু’দিনের। প্রথম প্রহরে বিউগল বাজিয়ে বিজয় দিবসের সূচনা লগ্নকে স্বাগত জানানো হয়। সকালে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা স্মারক ভাস্কর্যে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে লাখো শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। খুলনা শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ, র‌্যালি, আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সন্তানদের সংবর্ধনা প্রদানসহ নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে শনিবার খুলনায় মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। প্রত্যুষে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের সূচনা করা হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে গল্লামারী শহীদ স্মৃতিসৌধে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন, ডিআইজি রেঞ্জ ও জেলা পুলিশ, কেএমপি, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, খুলনা সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন রাজনৈতকি দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে সকালে ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য অদম্যবাংলায় এবং কুয়েটের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে দুর্বার বাংলার পাদদেশে পুষ্পমাল্য দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। সকাল সাড়ে আটটায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পরে একই স্থানে কুচকাওয়াজ এবং শরীরচর্চা প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সন্তানদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন সংসদ সদস্য আলহাজ মিজানুর রহমান মিজান, বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, পুলিশ কমিশনার মোঃ হুমায়ুন কবির, অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ হাবিবুর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, পুলিশ সুপার মোঃ নিজামুল হক মোল্যা, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অধ্যাপক আলমগীর কবীর, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সরদার মাহবুবার রহমান, বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলের মুজিব বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার শেখ ইউনুছ আলী প্রমুখ। রংপুর রংপুর কেন্দ্রীয় স্বাধীনতা স্তম্ভে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়বার সেøাগানে মুখরিত ছিল।আওয়ামী লীগের পক্ষে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মমতাজ উদ্দীন। এ সময় সাধারণ সম্পাদক আলহাজ এ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু, রংপুর সিটি কর্পোরেশন মেয়র প্রার্থী সরফুদ্দিন আহম্মেদ ঝন্টুসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এরপর সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার হোসেনের নেতৃত্বে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। পরে মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির আলীর নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি পুষ্পমাল্য অর্পণ করে। সকালে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, সেক্টরস কমান্ডার ফোরাম, রংপুর প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ফুল দেয়া হয়। বেলা ১১টার দিকে বিএনপি মেয়র প্রার্থী কাওসার জামান বাবলার নেতৃত্বে বিরাট মিছিলসহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় মহানগর বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর হোসেন, সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু, সংগঠনিক সম্পাদক বাদল রহমানসহ অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, বিভাগীয় কমিশনার কাজী হাসান আহমেদের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন শনিবার ভোরে নগরীর মডার্ন মোড়ে স্বাধীনতা স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রশাসন। এ সময় পাশে ছিলেনÑ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমানসহ প্রশাসন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। সকালে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সকালে রংপুর স্টেডিয়ামে শিশুকিশোর কুচকাওয়াজ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বীর শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা আর বিজয় আনন্দে রাজশাহীজুড়ে পালিত হয়েছে মহান বিজয় দিবস। দিনটির প্রথম প্রহর থেকেই শহীদ মিনারমুখো জনতা। নানান আনুষ্ঠানিকতায় একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় রাজশাহীবাসী। সকালে রাজশাহী কলেজ শহীদ মিনারে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মীরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। দিবসের প্রথম প্রহরে নগরীর ভুবনমোহন পার্ক শহীদ মিনারে প্রথমেই সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার পক্ষে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এর পর বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। রাত ১২টা এক মিনিটে রাজশাহী কলেজ শহীদ মিনারে প্রথমেই কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর হবিবুর রহমানের নেতৃত্বে শিক্ষক-কর্মকর্তারা কলেজের পক্ষ থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেখানেও নামে মানুষের ঢল। এই শহীদ মিনারে মহানগর ও জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। সকালে রাজশাহী কোর্ট শহীদ মিনারে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার। এই শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, রাজশাহী রেঞ্জ ও জেলা পুলিশ। এর আগে জেলা পুলিশ লাইনে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মূল আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হয়। এছাড়া ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সকল সরকারী, আধা সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। বিকেলে নগরীর রিভার ভিউ কালেক্টরেট স্কুলে আলোচনা সভা ও মহিলাদের ক্রীড়া অনুষ্ঠিত হয়। বরিশাল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, অসাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে বরিশালে বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যদিয়ে মহান বিজয় দিবস উদ্যাপিত হয়েছে। শনিবার ভোর সাড়ে ছয়টায় পুলিশ লাইন্সে ৩১ বার তোপধ্বনীর মধ্যদিয়ে কর্মসূচীর সূচনা হয়। এরপর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন প্রশাসন, রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। ভোরে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে প্রথমে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এবং সেক্টর কমান্ডার ফোরাম জেলা ও মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দরা। এরপর বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, রেঞ্জ ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, জেলা পুলিশসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দফতর, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, বিএনপি জেলা ও মহানগর, বাংলাদেশের কমিউিনিস্ট পার্টি, বাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদ, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এদিকে বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে দেশ স্বাধীনের জন্য মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের মহিমায় উজ্জল নক্ষত্র ১৬ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। ময়মনসিংহ ময়মনসিংহের পাটগুদাম ব্রহ্মপুত্র ব্রীজ মোড়ের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে। প্রথমেই ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ধর্মমন্ত্রী আলহাজ অধ্যক্ষ মতিউ রহমান। এর পর ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার জিএম সালেহ উদ্দিন, ডিআইজি ময়মনসিংহ রেঞ্জ নিবাস চন্দ্র মাঝি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, জেলা প্রশাসক খলিলুর রহমান, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, পৌর মেয়র ইকরামুল হক টিটু, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট, মহিলা পরিষদসহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় জঙ্গীবাদ ও রাজাকার মুক্ত দেশ গড়ার শপথ নেয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। সকাল সাড়ে ৮টায় ময়মনসিংহের মরহুম রফিক উদ্দিন ভুইয়া স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও শিশু কিশোরদের শারীরিক কসরত ও কুচকাওয়াজ। টাঙ্গাইল সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারী-বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে দিবসের কর্মসূচীর সূচনা হয়। শনিবার সকালে স্থানীয় পৌর উদ্যানের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে জেলা প্রশাসক খান মোঃ নুরুল আমিন, পুলিশ সুপার মাহবুব আলম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মী ও মুক্তিযোদ্ধা-জনতা শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিজয় শোভাযাত্রা বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। জেলা স্টেডিয়ামে শিশু-কিশোরদের কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। দুপুরে পৌর উদ্যানের মুক্তমঞ্চে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংসদ ছানোয়ার হোসেন, পুলিশ সুপার মাহবুব আলম, মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক বীরপ্রতীক, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনিছুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খঃ আশরাফুজ্জামান বক্তব্য রাখেন। শরীয়তপুর শনিবার যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানটি শরীয়তপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। দিনের কর্মসূচীর মধ্যে ছিল রাত ১২.০১ মিনিটে জেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৩১বার তোপধ্বনি, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তপক অর্পণ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বিজয় র‌্যালি, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, পুলিশ, আনসার, ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস, স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্র ছাত্রীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা প্রদর্শনী। জেলার সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রুহের মাগফিরাত এবং শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শনিবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে কর্মসূচী শুরু হয়। এরপর স্থানীয় ফারুকী পার্ক স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন সংসদ সদস্য র, আ, ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর রহমান, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দিনটি উৎসবমূখর পরিবেশে পালনে দিনব্যাপী কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থিয়েটারের আয়োজনে শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে স্থিরচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে। শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে স্থিরচিত্র প্রদর্শনী প্রদর্শিত হয়। পরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র, আ, ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুন। আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক চন্দন রেজা, কথা সাহিত্যিক দীপু মাহমুদ। গাজীপুর গাজীপুরে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচীর আয়োজন করে। জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জেলা শহরের ভাওয়াল রাজবাড়ি মাঠ সংলগ্ন শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে পুলিশ প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, গাজীপুর প্রেস ক্লাব সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এছাড়া বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ভাওয়াল মির্জাপুর কলেজ, গাজীপুর সরকারী মহিলা কলেজ, কাজী আজিম উদ্দিন কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনাসভা ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লের আয়োজন করা হয়। বগুড়া শহীদ মিনার ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথায় স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করা হয়। সকাল ৮টায় শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে শিশু কিশোরদের সমাবেশ কুচকাওয়াজ ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরে জিলা স্কুল অডিটোরিয়ামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। জেলা পরিষদ মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা হয়। মহিলাদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা, সিনেমা হল ও উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ও প্রামণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। মিউজিয়াম ও পার্ক শিশুদের বিনোদনের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সন্ধ্যায় শহীদ খোকন পার্কে সুখী সমৃদ্ধ ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে প্রযুক্তির সার্বজনীন ব্যবহার শীর্ষক আলোচনার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে শিল্পকলা একাডেমীসহ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘের পর আলোচনা সভা করে। বগুড়া প্রেস ক্লাব, বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়ন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, দিন বদলের মঞ্চ, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ সহ পেশাজীবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা অনুষ্ঠানে দিবসটি পালন করে। নরসিংদী সকাল সাড়ে ৮টায় মোসলেহ উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং প্যারেড ও কুচকাওয়াজে জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস ও পুলিশ সুপার আমেনা বেগম বিপিএম সালাম গ্রহণ করেন। এ ছাড়া দিবসটি পালনে ছাত্র ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন, সমাবেশ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চারণ ও খেলাধুলার আয়োজন, মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারে সদস্যদের সংবর্ধনা, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ বিরোধী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির জন্য সকল মসজিদে মোনাজাত এবং অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রর্থানা, মহিলাদের অংশ গ্রহণে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আলোচনা সভা ও ক্রীড়া অনুষ্ঠান, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সার্বজনীন ব্যবহার এবং মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক সেমিনার এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জয়পুরহাট সুর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান বিজয় দিবস সূচনার পর শহীদ ডাঃ আবুল কাশেম ময়দান স্মৃতিসৌধে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা পরিষদ, জয়পুরহাট পৌরসভা, জেলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, কমিউনিস্ট পার্টি, বাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, এনজিও সমন্বয় পরিষদ, বাস-মিনিবাস মালিক গ্রুপ, শ্রমিক ইউনিয়ন, জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, মহিলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, উদীচী শিল্পী গোষ্টি, খেলাঘরসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে। সকালে স্টেডিয়ামে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কুচকাওয়াজ ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক নানা রকমের ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হয়। শিশু একাডেমী কার্যালয়ে শিশু কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। রামদেও বাজলা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে মহিলাদের ক্রীড়া অনুষ্ঠান এবং স্টেডিয়ামে টি-টুয়েন্টি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সৌখিন ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। জয়পুরহাট পৌর কমিউনিটি সেন্টারে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে শহীদ ডাঃ আবুল কাশেম ময়দানে বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভা ও সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মাগুরা সকালে নোমানী ময়দান শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমালা অর্পণের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এখানে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ আওয়ামী লীয়, বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, জেলা আইনজীবী সমিতি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফুল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান স্টেডিয়ামে পুলিশ, গালস গাইড, রোভার স্কাউট সহ বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের কুজকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক আতিকুর রহমান ও পুলিশ সুপার মুনিবুর রহমান সালাম গ্রহণ করেন। দিবসের অন্যান্য কর্মসূচীর মধ্যে ছিল শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান, আলোচনা সভা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চলচিত্র প্রদর্শনী, জেলখানার কয়েদি ও হাসপাতালের রোগীদের মধ্যে উন্নত খাবার পরিবেশন প্রভৃতি । ঠাকুরগাঁও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে নানান কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষে শনিবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শহরে মুক্তিযুদ্ধের কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধ অপরাজেয় ’৭১ এর পাদদেশে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে দিবসের সূচনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন। সকাল সাড়ে ৯টায় সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড় মাঠে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় পুলিশ, আনসারসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, স্কাউট ও রোভাররা। শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল। এ সময় পাশে ছিলেন পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ। এছাড়া দিনের অন্যান্য কর্মসূচীতে ছিল, শিক্ষার্থীদের রচনা লিখন, চিত্রাঙ্কন, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ, শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল, প্রীতি ফুটবল, আলোচনাসভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সপ্তাহব্যাপী বিজয় মেলার উদ্বোধন। লক্ষ্মীপুর ৩১ বার তপোধ্বনির মাধ্যমে বিজয় দিবসের সূচনা করা হয়। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এরপর পর্যায়ক্রমের কেন্দ্রিয় বিজয় চত্বরে পুষ্পস্তপক অর্পণের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামাল, জেলা প্রশাসক হুমায়রা বেগম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান, পুলিশ সুপার আ স ম মাহাতাব উদ্দিন। এর পর গণকবরে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। সকাল ৮টায় জেলা স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ, সকাল সাড়ে ১০টায় বিজয় র‌্যালি, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান, আলোচনা সভা এবং ৭ দিনব্যাপী বিজয় মেলা। নড়াইল সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচীর সূচনা হয়। পরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে স্মৃতিসৌধ, গণকবর ও বধ্যভূমিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, গণকবর জিয়ারত ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮টায় বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহম্মদ স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা প্রদর্শন অনুষ্ঠিত হয়। এসব অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি, শেখ হাফিজুর রহমান, জেলা প্রশাসক এমদাদুল হক চৌদুরী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম, নড়াইল পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, জেলা আওয়মী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, নড়াইল প্রেসক্লাব, সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন দফতরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। খাগড়াছড়ি শনিবার ভোরে খাগড়াছড়ি সদরের মাইনী ভ্যালীস্থ শহীদদের স্মৃতি ফলকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রশাসক ও জেলা প্রশাসক রাশেদুল ইসলাম, স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে নিয়ে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের স্মরণে নীরবতা পালন করা হয়। এছাড়া ভোর থেকে বিভিন্ন ধর্মীয় উপসানলয়ে চলে সমবেত প্রার্থনা। সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। এছাড়া মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় কুজকাওয়াজ, শরীরচর্চা প্রদর্শনী, স্কুল-কলেজ ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন খেলাধুলা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা জ্ঞাপন, শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিয়োগিতা, প্রীতি ফুটবল প্রতিয়োগিতা, মহিলাদের খেলাধুলা। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। হবিগঞ্জ ভোরে এমপি এ্যাডভোকেট আবু জাহির, জেলা প্রশাসক মনীষ চাকমা, পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরার নেতৃত্বে জেলা পুলিশ প্রশাসন এবং জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের পক্ষে জেলা প্রশাসক ও সভাপতি মনীষ চাকমা এবং সাবেক কমান্ডার এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী পাঠানের নেতৃত্বে ’৭১ -এর বীর শহীদের স্মরণে স্থাপিত ‘দুর্জয় স্মৃতি সৌধ’ এ পরপর পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে এই দিবসের আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হয়। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় জালাল স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ, আলোচনাসভাসহ নানা কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় চুয়াডাঙ্গা পুরাতন স্টেডিয়াম মাঠে এক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ ও পুলিশ সুপার মাহাবুবুর রহমান পিপিএম কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিশুকিশোররা মনোমুগ্ধকর ডিসপ্লে প্রদর্শন করে। এর আগে সকালে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। এ সময় মাঠে বসে কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন শিরিন নাইম পুনম এমপি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামসুল আবেদিন। মেহেরপুর ভোরে শহীদ সামসুজ্জোহা পার্কে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্যে দিয়ে দিনের কর্মসূচী শুরু হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় শহীদ মিনারে জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। পরে পুলিশ সুপার আনিছুর রহমানসহ স্থানীয় রাজনীতি, সামাজিক ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। মাদারীপুর শনিবার ভোরে পুলিশ লাইনস্ ময়দানে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের সূচনা করা হয়। সকালে মাদারীপুর ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসহ সর্বস্তরের মানুষ। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সর্বস্তরের মানুষ। পরে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বিজয় র‌্যালি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আচমত আলী খান স্টেডিয়ামে গিয়ে শেষ হয়। সকাল ৮টায় স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন বাহিনীর কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এমপি। গাইবান্ধা সকাল সাড়ে ৮ টায় স্থানীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল। কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল ও পুলিশ সুপার মোঃ মাশরুকুর রহমান খালেদ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শন করে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ডিসপ্লে­ও প্রদর্শন করে তারা। এরপর স্টেডিয়ামে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপি। পরে হুইপ, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে স্টেডিয়াম থেকে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের উদ্যোগে ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে জাতীয় পতাকা নিয়ে একটি বিশাল বর্ণাঢ্য র‌্যালি জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এছাড়াও জেলা প্রশাসন আয়োজিত অন্যান্য কর্মসূচীর মধ্যে ছিল শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, মহিলাদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘সুখী’ সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বজনীন ব্যবহার এবং মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক আলোচনা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। ঝালকাঠি শনিবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভে জেলা প্রশাসন ও অনান্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয় সকাল ৯টায় ঝালকাঠির শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসক হামিদুল হক আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ, আনসার ভিডিপিসহ স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শনী করা হয়। জেলা প্রশাসক এই অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে এ সময় পুলিশ সুপার মোঃ জোবায়েদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। কিশোরগঞ্জ স্মৃতিসৌধে শনিবার সকালে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যদিয়ে মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচী শুরু হয়। পরে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্টেডিয়ামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী ও বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সালাম গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক মোঃ আজিমুদ্দিন বিশ্বাস ও পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান। পরে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী ও বিজয় র‌্যালি শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদানসহ হাসপাতাল, এতিমখানা ও কারাগারে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। বিকেলে স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন বনাম মুক্তিযোদ্ধা একাদশ এবং কিশোরগঞ্জ পৌরসভা বনাম সুধীজন প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। নাটোর শনিবার ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসটির সূচনা হয়। সিংড়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এদিকে নাটোর শহরের মাদ্রাসা মোড়ে শহীদ স্মৃতিসৌধে সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসন। অপরদিকে গুরুদাসপুরে অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপির নেতৃত্বে শহীদ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সর্বস্তরের মানুষ। লালপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল উদ্বোধন শেষে বিজয় র‌্যালিতে নেতৃত্ব দেন সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান দিবসটি উপলক্ষে ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচী পালন করে। জামালপুর ৩১ বার তোপধ্বনি দিয়ে বিজয় দিবসের সূচনা করা হয়। পরে সকাল সাড়ে ৬টায় জেলা প্রশাসন, জেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠন জামালপুর বৈশাখী মেলা মাঠে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। সাড়ে ছয়টায় প্রথমে সংসদ সদস্য মোঃ রেজাউল করিম হীরা মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করা হয়। অপরদিকে সকাল সাড়ে ৮টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট আব্দুল হাকিম স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও সালাম গ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া সম্মিলিত কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শন করে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। নেত্রকোনা শনিবার সকালে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা পরিষদ, পৌরসভা, সদর উপজেল??
×